সমকালীন প্রতিবেদন : বিশ্ব উষ্ণায়নের জন্য একটু একটু করে ধ্বংসের দিকে এগোচ্ছে পৃথিবী। সেই পৃথিবীকে রক্ষা করতে পারে একমাত্র গাছই। তাই গাছেদের আদতে বিশ্বের ফুসফুসও বলা যেতে পারে। তবে, গাছের সংখ্যা যে হারে পৃথিবীতে কমছে, তা অত্যন্ত চিন্তার বিষয়।
গাছ কমে যাওয়ার ফলে বৃষ্টি কম হচ্ছে। মাটি আলগা হয়ে নামছে ধস। সেই কারণে গাছেদের প্রাণ রক্ষায় এবার চালু হল ট্রি-অ্যাম্বুলেন্স। অসুস্থ গাছকে চিকিৎসার মাধ্যমে বাঁচিয়ে তোলাই হল এই অ্যাম্বুলেন্সের প্রধান কাজ।
কোচবিহারের এক পরিবেশপ্রেমী এই অ্যাম্বুলেন্স চালু করলেন। রাজ্যের বুকে এই উদ্যোগ প্রথমবারের জন্য কেউ নিলেন। জানা গেছে, কোথাও গাছ ‘বিপদে’ পড়লে ঘটনাস্থলে ছুটে যাবে এই অ্যাম্বুলেন্সটি। ঝড়ে পড়ে যাওয়াই হোক কিংবা পরিচর্যার অভাবে ধুঁকতে থাকা গাছ, সব উদ্ভিদের শুশ্রূষা করা হবে যত্নের সঙ্গে।
গাছের চারা রোপণের জন্য অত্যাধুনিক ড্রিল মেশিন থাকবে এই গাড়িতে। এই মেশিনটি কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই মাটিতে গাছ রোপণের জন্য গর্ত খুঁড়ে দেবে। এছাড়াও ইলেকট্রিক কাটার, কোদাল, দা, গাছ ঘেরাওয়ের জাল-সহ গাছ পরিচর্যার বহু সামগ্রী থাকবে এই গাড়িতে।
ঝড়ে বহু জায়গাতেই গাছ উপড়ে পড়ে যায়। কয়েকটি ক্ষেত্রে দেখা যায়, সেগুলি পরিচর্যা করলে বাঁচানো সম্ভব। কিন্তু পরিচর্চার পরিবর্তে সেগুলিকে কেটে ফেলা হয়। এখন থেকে সেই গাছগুলির পরিচর্যা করবেন এই ট্রি অ্যাম্বুলেন্স টিম। এছাড়াও, যেকোনো নির্মাণকাজের সময় অনেক ক্ষেত্রেই গাছপালা কেটে ফেলা হয়।
তবে ছোট ও মাঝারি গাছগুলি প্রতিস্থাপন করার মতো। তাই সেগুলি অন্যত্র প্রতিস্থাপন করবেন তাঁরা। এই ট্রি-অ্যাম্বুলেন্সের ভাবনা যার মস্তিষ্কপ্রসূত, তাঁর নাম কে আবদুল ঘানি। পরিবেশ আন্দোলনকারী এই মানুষটির ভাবনাতেই প্রথম উঁকি মেরেছিল ট্রি অ্যাম্বুল্যান্সের বিষয়টি।
তাঁর ভাবনা থেকেই ২০১৯ সালে চেন্নাইয়ে গাছেদের পরিষেবার জন্য শুরু হয়েছে এমন ব্যবস্থা। উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নাইডু সম্প্রতি সে রাজ্যে উদ্বোধন করেন এই ট্রি অ্যাম্বুল্যান্সের। ভারতের মধ্যে সেখানেই প্রথম এই উদ্যোগ নেওয়া হয়।
তারপর ২০২২ সালে মধ্যপ্রদেশের ইন্দোর শহরে এই পরিষেবা চালু হয়। আর এবার এই পরিষেবা চালু হল বাংলার বুকে। এভাবেই যদি আমরা সবাই পরিবেশকে বাঁচাতে এগিয়ে আসি, তাহলে হয়তো অনেক বড় কোনো বিপদকে আটকানো সম্ভব হবে খুব কম সময়েই।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন