Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

বুধবার, ২৬ জুন, ২০২৪

১৪ বছরের দিদির পড়াশোনার দায়িত্ব নিয়ে রোলের দোকান চালাচ্ছে ১০ বছরের খুদে

 

10-years-old-running-roll-shop

সমকালীন প্রতিবেদন : হিসেব বলছে ১০ বছর বয়সী ছেলেটার এখন ক্লাস ফাইভে পড়ার কথা। পিঠে স্কুলের ব্যাগ নিয়ে স্কুলে গিয়ে সহপাঠিদের সঙ্গে একই বেঞ্চে বসে জীবনের খুব সুন্দর একটা সময় কাটানোর কথা। কিন্তু দেখুন, ভাগ্যের পরিহাসে আজ বাবা মাকে হারিয়ে একমাত্র দিদিকে নিয়ে জীবন যুদ্ধে লড়াই করে চলেছে এই ছোট্ট ছেলেটা। হ্যাঁ, আজ আমরা কথা বলব দিল্লীর জসপ্রীতকে নিয়ে।

মাত্র ১০ বছর বয়সী এই ছেলেটি দিল্লীর তিলকনগর এলাকায় একটা রোলের দোকান চালায়। আর সেই দোকান থেকে উপার্জন করা অর্থ দিয়ে ১৪ বছর বসয়ী দিদিকে পড়াচ্ছে এবং সেইসঙ্গে নিজেও এগিয়ে যাচ্ছে পড়ে থাকা বাকী জীবনটার দিকে।

গল্পের শুরুটা কিন্তু এভাবে হয়নি। পাঞ্জাব থেকে নিজের স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে দিল্লীতে এসেছিলেন জসপ্রীতের বাবা। দিল্লীতে এসে দিল্লীর তিলকনগর এলাকায় একটা রোলের দোকান দিয়েছিলেন তিনি। সেই দোকানে এগরোল, চিকেন রোল, পনীর রোল বিক্রি করে বেশ ভালোভাবেই তাঁদের সংসার চলছিল। 

কিন্তু ছোট্ট এই পাঞ্জাবী পরিবারটার সুখ সহ্য হল না মারণ রোগ টিউবার কিউলোসিসের। এই রোগে আক্রান্ত হন জসপ্রীতের বাবা। পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি ছিলেন তিনি। বাবাকে বাঁচাতে গিয়ে তাঁরা সর্বশান্ত হয়ে গেলেও, শেষরক্ষা হয় না। বাবা মারা যাওয়ার পর বন্ধ হয়ে যায় সেই ছোট্ট রোলের দোকানটিও।

এদিকে, এই অসময়ে দুই ছেলে–মেয়েকে ফেলে রেখে বাপেরবাড়িতে পালিয়ে যায় তাঁদের মা। এই অবস্থায় গোটা পৃথিবীটাই যেন শূন্য হয়ে যায় জসপ্রীত এবং তাঁর দিদির কাছে। কিন্তু জীবনযুদ্ধের এই লড়াইয়ে হেরে যায়নি জসপ্রীত। সে ঠিক করে, বাবার দোকানটাই সে চালাবে। ভাবনামতো এক পরিচিত মানুষের থেকে কিছু টাকা ধার নিয়ে আবারও নতুন করে খুলে ফেলে সেই রোলের দোকানটি।

প্রথমদিকটায় একটু অসুবিধা হলেও, এখন কিন্তু রোল তৈরি করতে বেশ পারদর্শী হয়ে গিয়েছে বছর ১০-র এই ছোট্ট ছেলেটি। আর এই দোকানের উপর ভরসা করেই দিদিকে পড়াশোনা করাচ্ছে জসপ্রীত। দুই ভাই–বোন মিলেই চালাচ্ছে এই রোলের দোকানটি। সকালে গিয়ে বাজার করা, তারপর স্কুল থেকে ফিরে আবার দোকানে বসা। এইভাবেই চলছে ভাই–বোনের জীবনটা।

একবার ভেবে দেখুন তো, জীবনের পথে চলতে গিয়ে সামান্য বাঁধা পেলেই আমরা অনেক সময় নিজেদের ভাগ্যের উপর দোষ দিয়ে থাকি। কিন্তু এই ১০ বছর বয়সী বাচ্চাটি কিভাবে নিজের জীবনের এই লড়াইটা চালিয়ে যাচ্ছে। তাই গোটা ই–সমকালীন নিউজ টিম থেকে জসপ্রীতকে স্যালুট।‌‌ জসপ্রীত এবং তার দিদির ভবিষ্যতের চলার পথ যেন সুগম হয়।







‌‌

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন