Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

মঙ্গলবার, ৭ মে, ২০২৪

শর্তসাপেক্ষে আপাতত চাকরি বহাল থাকছে রাজ্যের প্রায় ২৬ হাজার চাকরিহারার

 ‌

Supreme-court

সমকালীন প্রতিবেদন : আপাতত চাকরি বাতিল হচ্ছে না রাজ্যের প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীর। তবে সেক্ষেত্রে শর্ত বেধে দিল ভারতের সর্বোচ্চ আদালত। মঙ্গলবার এমনই নির্দেশ জারি করলো সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে। আগামী শুনানী ১৬ জুলাই। আর এই তারিখ পর্যন্ত আপাতত কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশই বহাল রাখলো সুপ্রিম কোর্ট।

সুপ্রিম কোর্ট এদিন তার সংক্ষিপ্ত রায়ে জানায়, যোগ্য এবং অযোগ্যদের যদি আলাদা করা সম্ভব হয়, তাহলে এখনই পুরো প্যানেল বাতিল করা ঠিক হবে না। অর্থাৎ এখনই তাদের চাকরি বাতিল হচ্ছে না। যদিও এক্ষেত্রে শর্ত চাপিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপাশি, অযোগ্যদের চাকরিতে নিয়োগের বিষয়ে তদন্ত চালিয়ে যাবে সিবিআই।

এদিন সুপ্রিম কোর্ট অর্ন্তবর্তীকালীন স্থগিতাদেশ জারি করে জানিয়েছে, আপাতত কারোর চাকরি বাতিল হচ্ছে না। যোগ্য এবং অযোগ্যদের আলাদা করতে হবে। তবে মুচলেকা দিয়ে চাকরি করতে হবে। আর তদন্তে যারা অযোগ্য বলে প্রমানিত হবে, তাদেরকে ১২ শতাংশ সুদ সহ সমস্ত টাকা ফেরত দিতে হবে।

রাজ্য মন্ত্রীসভায় অতিরিক্ত শূন্যপদ সৃষ্টির তদন্তে আপাতত স্থগিতাদেশ বহাল রাখলো সুপ্রিম কোর্ট। তবে প্যানেলে নাম ছিল না, সাদা খাতা জমা দিয়ে চাকরি পাওয়া এবং মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ার পরে চাকরি পাওয়াদের বিষয়ে তদন্ত চালিয়ে যাবে সিবিআই। হাইকোর্টের নির্দেশের দিন থেকে ৩ মাসের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টে সিবিআইকে সেই তদন্তের রিপোর্ট জমা দিতে হবে।  

উল্লেখ্য, গত মাসের ২৯ এপ্রিল ২০১৬ সালের এসএসসি প্যানেল সম্পূর্ণ বাতিল করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। যার কারনে প্রায় ২৫ হাজার ৭৫৩ জন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিজেদের চাকরি হারিয়েছেন। এই মামলার শুনানির পর ন্যায় বিচারের জন্য চাকরিহারা এবং সরকার– উভয়ই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল। 

বলাবাহুল্য, শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের ভবিষ্যৎ জড়িয়ে ছিল সুপ্রিয় কোর্টের উপর।আজ সকাল সাড়ে দশটা থেকে সুপ্রিম কোর্টে এসএসসি মামলার শুনানি শুরু হয়। মামলার শুনানি চলাকালীন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় স্কুল সার্ভিস কমিশনের দ্বারা নিয়োগ সম্পর্কিত তাৎপর্যপূর্ণ পর্যবেক্ষণ জানান। 

প্রধান বিচারপতি জানান, '‌এটা পরিকল্পিত জালিয়াতি। সরকারি চাকরি বর্তমান সময়ে খুবই অপ্রতুল এবং তা সামাজিক নিশ্চয়তার আঙ্গিকে দেখা হয়। নিয়োগ প্রক্রিয়াই যদি কালিমালিপ্ত হয়, তাহলে গোটা ব্যবস্থায় আর অবশিষ্ট কী থাকে? মানুষ আস্থা হারিয়ে ফেলবে। সেটা ফেরাবেন কী করে!'‌ 

অন্যদিকে, হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আইনজীবী জয়দীপ গুপ্ত সওয়াল করে জানান, চাকরি বাতিলের কোনো এক্তিয়ার আদালতের মধ্যে পড়ে না। স্কুল সার্ভিস কমিশনের পক্ষে সওয়াল করতে গিয়ে তিনি জানান, ডেটা স্ক্যানারের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। 

তবে ওএমআর শিট এবং স্ক্যান কপিগুলি নষ্ট করে ফেলা হয়েছে কিনা, এই প্রশ্নের উত্তরে আইনজীবী জয়দীপ গুপ্ত জানান, 'হ্যাঁ'। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় পাল্টা প্রশ্নের মাধ্যমে জানান,‌ 'এত স্পর্শকাতর বিষয় হওয়া সত্ত্বেও ওএমআর শিট স্ক্যান করাতে টেন্ডার ডাকা হয়নি কেন?' যদিও বিচারপতির এই প্রশ্নকে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে বিচারপতি ফের জানান, 'ব্যাপারটা আউটসোর্স করে গোটা প্রক্রিয়ার পবিত্রতা নষ্ট করা হয়েছে।'‌ 

এরপর আইনজীবী বিষয়টিকে সহজ করার চেষ্টা করলেও বিচারপতি জানতে চান, 'ওএমআর শিটের মিরর ডিজিটাল কপি কোথায়?' এর উত্তরে আইনজীবী জানান, 'সেগুলি নাইসের কাছে রয়েছে।'‌ যদিও তা সিবিআই পায়নি বলেই জানান প্রধান বিচারপতি। 

সাধারণ মানুষের তথ্য একটি সংস্থার উপর কীভাবে তারা ছেড়ে দিতে পারেন? সেই নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি। এরপরও সওয়াল চালিয়ে যান আইনজীবী গুপ্ত। তিনি জানান, 'সিবিআইয়ের তথ্যের উপর ভরসা করে যোগ্য ও অযোগ্যদের আলাদা করা যাবে।‌‌'‌ অবশেষে এদিন বিকেলে প্রধান বিচারপতি তাঁর সংক্ষিপ্ত রায় শোনান।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন