সমকালীন প্রতিবেদন : বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় মাধ্যমিকের আনুষ্ঠানিক ফল ঘোষণার পর দেখা গেল আবারও নজরকাড়া সাফল্য নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের। এবারে প্রথম দশের মেধাতালিকায় রয়েছে মোট ৫৭ জন। তার মধ্যে ছ’জন পড়ুয়াই মিশনের ছাত্র! প্রতি বছরের মতো এবারও দৃষ্টান্ত গড়ল মিশনের পড়ুয়ারা।
কিন্তু এবারেই প্রথম নয়। প্রতিবছর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ পেলেই মেধাতালিকায় এই আবাসিক বিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন ছাত্রের নাম থাকে। কিন্তু কিভাবে এত ধারাবাহিক সাফল্য আসে নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন থেকে?
সেখানকার পরিবেশ, শিক্ষন পদ্ধতি কতটা আলাদা অন্যান্য স্কুলের থেকে? এই স্কুলে পড়াশোনা করলেই কি সফল ভবিষ্যৎ নিশ্চিত? ‘ধৈর্য, পবিত্রতা, অধ্যবসায়’— এই তিনটি শব্দ দিয়েই যেকোনো কঠিন পরীক্ষায় সফল হওয়া যায়।
আর পড়ুয়ারা যাতে সেই সাফল্যের শিখরে পৌঁছতে পারে, তার জন্য স্বামী বিবেকানন্দের এই উক্তির উপরেই জোর দেন রামকৃষ্ণ মিশনের স্কুলের সন্ন্যাসী থেকে শিক্ষকেরা। এটাই রামকৃষ্ণ মিশনের আবাসিক স্কুলগুলির বিশেষত্ব। আর তার মধ্যে আবার অনন্য হল নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন।
নরেন্দ্রপুরের নিয়ম-কানুন, পরিবেশই ছাত্রদের সাফল্যের পিছনে যে প্ৰধান কারণ, তা মনে করছেন মিশনের প্রধান শিক্ষক স্বামী ইষ্টেশানন্দ। তিনি জানান, মিশনে একটি তপোবনের মতো পরিবেশ রয়েছে, যা ছাত্রদের মনসংযোগ করতে সহায়তা করে।
তাঁর কথায়, এখানে ছাত্ররা থেকে পড়াশুনো করে বলে অনেক সুবিধা পান। ছাত্ররা নিজেদের অসুবিধে বুঝতে পারেন, দরকারে যখন তখন শিক্ষকদের সাহায্য পায়।
এছাড়াও মহারাজের দাবি, মিশনে কারও হাতে মোবাইল ফোন নেই। একবিংশ যুগে দাঁড়িয়ে, এই ছবি একেবারে অন্য। মোবাইলে ডুবে থাকলে ছোটদের একাগ্রতা নষ্ট হয়।
যদিও নরেন্দ্রপুরের কৃতিত্বের ইতিহাস দীর্ঘ। সত্তরের দশকের শেষ এবং আশির দশকের প্রথম দিকে সাফল্যের এক নাম ছিল নরেন্দ্রপুর। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৮০, ’৮১ এবং ’৮২ সালে লাগাতার প্রথম স্থান ধরে রেখেছিল নরেন্দ্রপুর।
কিন্তু তাহলে কি আলাদা পরিবেশে আলাদাভাবে পড়ুয়াদের শিক্ষণ দেওয়ার জন্যই রামকৃষ্ণ মিশন স্কুলগুলির সফলতার অন্যতম কারণ? সেটাই যদি হয়, তাহলে এমনটা আমরা সব স্কুলে কেন চালু করতে পারিনা? কারণ, শিক্ষা হল আপনার অধিকার, আর শিক্ষাকে সঠিকভাবে নিয়ে নেওয়াটা আপনার কর্তব্য, যা আমাদের সবারই পালন করা উচিত।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন