Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

সোমবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

সেক্সটরশনের ফাঁদে প্রতারণার শিকার কলকাতার বাসিন্দা

 

The-trap-of-sextortion

সম্পদ দে : এক্সটরশন শব্দটি হয়তো অনেকেই শুনে থাকবেন। শব্দটির অর্থ হলো, জুলুমবাজির সাহায্য নিয়ে টাকা আদায় করা। তবে বাজারে আজকাল একটি নতুন শব্দ এসেছে, সেক্সটরশন। এর অর্থ, কারুর যৌন সম্পর্ক অথবা গোপন তথ্যকে ব্যবহার করে তার কাছ থেকে টাকা লুঠ করা। আর এই অস্ত্রটাকেই ব্যবহার করে আজকাল বহু মানুষকে সর্বস্বান্ত করছে প্রতারকেরা।

সম্প্রতি এই সেক্সটরশনের ফাঁদে পড়েই প্রায় তিন লাখ টাকা খুইয়ে শেষ পর্যন্ত লালবাজারের সাহায্য চেয়ে হাজির হয়েছেন কলকাতার এক ব্যক্তি। তার দায়ের করা অভিযোগ অনুযায়ী ইতিমধ্যেই উত্তরপ্রদেশ এবং হারিয়ানা থেকে দুজন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

কলকাতার এই ব্যক্তি প্রতারকদের ফাঁদে পড়েছেন একটি হোয়াটসঅ্যাপ ভিডিও কলের মাধ্যমে। আসলে, বেশ কিছুদিন আগে এই ব্যক্তির ফোনে হঠাৎ এক অচেনা নাম্বার থেকে ভিডিও কল আসে। কলটি রিসিভ করতেই স্ক্রিনে ভেসে ওঠে একটি মহিলার অশ্লীল নগ্ন ভিডিও। এরপর কল কাটতেই সেই ব্যক্তির ফোনে চলে আসে বেশ কিছু ব্ল্যাকমেলিং মেসেজ, যেখানে ওই ব্যক্তিকে ভিডিও কলের সেই ফুটেজ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে টাকা চাওয়া হয়।

বেশ কয়েক বছর ধরেই এমন প্রতারণায় ফেঁসেছেন অনেকেই, যেখানে এইভাবেই অপরিচিত নাম্বার থেকে ভিডিও কল করে মানুষকে ব্ল্যাকমেইল করে তাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করা হতো। যথারীতি কলকাতার সেই ব্যক্তি এই ভিডিও কল এবং তারপরে আসা ব্ল্যাকমেলিং মেসেজকে এড়িয়ে যান। তবে এর পরেই প্রতারকরা পেতে ফেলে তাদের এক নতুন আরো জঘন্যতম ফাঁদ।

কয়েকদিন বাদেই মুম্বাইয়ের একজন পুলিশ আধিকারিক সেজে একটি হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বার থেকে কলকাতার ওই ব্যক্তির কাছে মেসেজ যায় যে, ভিডিও কলে যে মহিলাকে দেখা গিয়েছিল, তিনি নাকি চিঠিতে ওই ব্যক্তির কারণে তার নাম লিখে রেখে আত্মহত্যা করেছেন। 

মহিলার পরিবারও নাকি ইতিমধ্যেই পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছে এবং যে কোনো সময় ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হতে পারে। এমনকি মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতাল থেকে সেই মহিলার ডেথ সার্টিফিকেট এর ছবিও তুলে পাঠানো হয় মেসেজে।

আর এরপরেই ঘাবড়ে যান কলকাতার এই ব্যক্তি। এই কেস মিটিয়ে নেওয়ার জন্য তার কাছে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা দাবি করা হয়। নিজের বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকে ৩ লক্ষ টাকা পাঠানোর পর খানিকটা সন্দেহ হওয়ায় শেষ পর্যন্ত লালবাজার সাইবার ক্রাইম ডিপার্টমেন্টে যান তিনি। তারপর এই ঘটনা শুনতেই নড়েচড়ে বসে লালবাজারের পুলিশ আধিকারিকরা।

ডেট সার্টিফিকেটে উল্লেখ করা হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এমন কোনো মহিলা সেই হাসপাতালে মারা যাননি। পুলিশ বুঝতে পারে যে, হাসপাতালের ডেথ সার্টিফিকেট জাল করে এমন প্রতারণা করে বেড়াচ্ছে এই বিশেষ দলটি। 

এরপরেই বেশ তৎপরতার সাথে তদন্ত করে এইজালের দুইজন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা গিয়েছে। তবে পুলিশ মনে করছে এরা আসলে চুনোপুটি, আসল রাঘব বোয়াল লুকিয়ে আছে মুম্বাইতে। পুলিশের আশা, তদন্ত যেভাবে এগোচ্ছে তাতে খুব শীঘ্রই ধরা পড়বে তারাও।

ফলে এখন থেকে সাবধান থাকুন। এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন অচেনা নাম্বার থেকে আসা হোয়াটসঅ্যাপ ভিডিও কল। আর কোনো কারনে যদি এমন কোনো জালে জড়িয়ে পড়েন তাহলে প্রতারকদের ফাঁদে পা দিয়ে সর্বস্বান্ত হওয়ার বদলে সোজা গিয়ে অভিযোগ দায়ের করবেন নিজের নিকটবর্তী থানার সাইবার ক্রাইম ডিপার্টমেন্টে।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন