সমকালীন প্রতিবেদন : বর্ষাকাল এলেই বাঙালি উদগ্রীব হয়ে অপেক্ষা করে ইলিশের জন্য। বাঙালি এবং ইলিশের এই মেলবন্ধন তো আর আজকের নয়! বহুকাল ধরেই ঝমঝম বর্ষায় বাঙালির ভাতের থালায় এক অনন্য সম্ভার ছড়িয়ে জায়গা পেয়ে আসছে এই মাছ।
ইলিশ মাছ পছন্দ করেন না এমন বাঙালি হয়তো খুব কমই আছেন। কারণ, ইলিশের নানা পদ রান্না হয় বাঙালির হেঁসেলে। ইলিশ ভাপা, সর্ষে ইলিশ, ইলিশ পাতুরি হোক বা গরম গরম ইলিশ ভাজা-এসবের স্বাদের কোনো তুলনা হয়না, একথা সত্যি।
এই বর্ষাকাল হল ইলিশের প্রজননের সময়। তাই সামুদ্রিক ইলিশ এই সময় ডিম দেওয়ার সময় ঝাঁকে ঝাঁকে নদীতে চলে আসে। বাংলাদেশের পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, ব্রহ্মপুত্রসহ অন্যান্য নদীই এদের ডিম পাড়ার পছন্দের জায়গা। তবে এই বাংলায় যতই বাহারি মাছ থাকুক না কেন, স্বাদে আর গুণে ইলিশকে রাজা তকমা দেওয়া হয়।
কারণ, গবেষণায় দেখা গেছে, ইলিশ মাছে রয়েছে উচ্চমাত্রার প্রোটিন। এছাড়াও, এই মাছে রয়েছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, যা রক্তে কোলেস্টেরল এবং ইনসুলিনের মাত্রা কমিয়ে দেয়। এই কারণে বাংলাদেশের জাতীয় মাছ হল ইলিশ। ভারতেও এর জনপ্রিয়তা কম নয়।
তবে এবছর ইলিশের যোগান কম থাকায় নকল ইলিশে ছেয়ে গেছে কলকাতার বাজার। একদিকে গুজরাটি ইলিশ, অন্যদিকে চন্দনা ইলিশ। নকল ইলিশ কেনার সময় কিছু না বোঝা গেলেও খাওয়ার সময় মেজাজ গরম হচ্ছে অনেকেরই। এই চন্দনা ইলিশ হল আদতে সামুদ্রিক সার্ডিন মাছ।
এই মাছ দেখতে অনেকটাই ইলিশের মতো, গন্ধও রয়েছে কিছুটা। কিন্তু দাম দিয়ে এই মাছ কিনে ঠকে বাড়ি ফিরছেন মধ্যবিত্ত ক্রেতারা। কারণ, সামুদ্রিক এই মাছের স্বাদ ইলিশের ধারেকাছেও নয়। আর হবেই বা কিভাবে, এগুলি তো ইলিশ নয়, এগুলি হল সার্ডিন মাছ।
কিন্তু বাজারে কিভাবে চিনবেন এই চন্দনা ইলিশকে? এই মাছ সামুদ্রিক হওয়ার কারণে এর গায়ের রং অত্যধিক চকচকে হয়, পিঠের কাছে থাকে কালচে ভাব। এছাড়াও, ইলিশের থেকে এই চন্দনা মাছের চোখ আকৃতিতে বড় হয়ে থাকে।
পাশাপাশি, আকারে ইলিশের মতো চ্যাপ্টা হয় না এই মাছ। এসবের বাইরে সাইজের দিক থেকে দেখলেও বোঝা যাবে এই নকল মাছকে। তাই ইলিশ কেনার আগে এই বিষয়গুলি অবশ্যই মাথায় রাখবেন। আর তাহলেই আপনাকে আর ঠকে বাড়ি ফিরতে হবে না।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন