Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

বুধবার, ৯ আগস্ট, ২০২৩

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কর্মসংস্থানে কতটা প্রভাব ফেলবে ?

 

Artificial-intelligence

সম্পদ দে : কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দ্রুত অগ্রগতির ‌সঙ্গে কোরিয়ান লেখক 'বিরামপাং'-এর 'দ্য ওয়ার্ল্ড ফ্রম নাউ অন' শিরোনামের একটি চিন্তা-উদ্দীপক উপন্যাস বিশ্বব্যাপী অনেকের মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। 

গল্পটি এআই দ্বারা চালিত একটি রোবটকে ঘিরে, যা হাজার হাজার বই থেকে জ্ঞান নিয়ে নিজেকে সজ্জিত করেছে এবং যে কোনও পেশা গ্রহণ করতে সক্ষম। এই ভবিষ্যত গল্পটি এমন একটি সমাজকে উপস্থাপন করে, যেখানে মেশিনগুলি মানুষের বিকল্প হওয়ার জন্য প্রস্তুত। আর ঠিক এখানেই এআই এর সম্ভাব্য আশীর্বাদ এবং অভিশাপ সম্পর্কে ভাবনার জন্ম হয়।

সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার এবং ডেটা সায়েন্টিস্ট সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞরা একমত যে, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ভবিষ্যতে মানুষের জীবিকাকে ব্যাহত করার ক্ষমতা রাখে। কম্পিউটার অ্যালগরিদম সেকেন্ডের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করে ফেলে। শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যসেবা থেকে শুরু করে সাহিত্য, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং প্রতিরক্ষা পর্যন্ত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে।

এমনকি, জি মেইলের স্রষ্টা পল বুহে এআই এর বিপদজ্জনক প্রভাবের পূর্বাভাস দিয়েছেন। বুহে ওয়ালমার্ট, কোকা-কোলা, জেরক্স এবং জুমের মতো বিশ্বব্যাপী কর্পোরেশনের কর্মকর্তাদের পাশাপাশি বড় সফটওয়্যার কোম্পানির সিইওরা সতর্ক করেছেন যে, পাঁচ থেকে দশ বছরের মধ্যে এআই ব্যাপকভাবে গোটা বিশ্বের মানুষদেরকে বেকারত্বের দিকে নিয়ে যেতে পারে।

এআই চালিত চ্যাটজিপিটি এই বিতর্ককে আরও তীব্র করেছে। যে কোনও প্রশ্ন বা বিষয়ের উপর খুব সুন্দর এবং গোছানো উত্তর দেওয়ার বিস্ময়কর ক্ষমতা এআই এর ভবিষ্যৎ প্রদর্শন করে। তবে, গুগলের সিইও সুন্দর পিচাইয়ের একটি বক্তব্য আমাদেরকে আশ্বাস দেয় যে, মেশিনের বুদ্ধি মানুষের মস্তিষ্ককে কখনই পুরোপুরি বিকল্প হয়ে উঠতে পারে না। 


: ভিডিও প্রতিবেদন দেখতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুন :

মেশিনগুলি শেষ পর্যন্ত মানুষের নির্দেশের উপর ভিত্তি করেই কাজ করে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যত চেষ্টাই করুক না কেন, মানুষের মতো শৈল্পিক এবং দার্শনিক চিন্তাভাবনা সে কখনই করতে পারবে না। তবুও, মানুষ যেভাবে তাদের সীমাবদ্ধতাগুলি ধীরে ধীরে কাটিয়ে ওঠে, বিশ্বাস করা হয় যে এআইও অদূর ভবিষ্যতে তার সীমাবদ্ধতাগুলিতে উন্নতি করবে। 

তবে এআই যে কেবলমাত্র মানুষের চাকরি কেড়ে নিতে পারে তাই নয়, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যেমন ভাল হাতে থাকলে মানুষের কল্যাণের কাজে লাগানো সম্ভব, ঠিক তেমনি ভুল হাতে পড়লে এআই দ্বারা বিভিন্নভাবে ক্ষতিসাধন করাও অসম্ভব নয়। আমরা দ্রুত প্রযুক্তিগত বৃদ্ধির এই যুগে ক্রমাগত এগিয়ে চললেও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার চূড়ান্ত প্রভাব এখনও আমাদের কাছে অনিশ্চিতই রয়ে গেছে। 

অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বাস্তবেই কোনওদিন সম্পূর্ণরূপে মানুষের চাকরি কেড়ে নিতে পারবে না। কারণ, এআই যদি কোনও একটি মানুষের কাজ কেড়েও নেয়, তাহলে অপরদিকে সেই এআইকে অপারেট করার জন্য কাউকে না কাউকে একটি পদে রাখতেই হবে।

তবে এখন থেকেই আগামী ১০, ২০ বা ৩০ বছর পরের ভবিষ্যৎ বলে দেওয়া সম্ভব নয়। বাস্তবে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স সমাজের জন্য আশীর্বাদ হয়ে দাঁড়াবে, নাকি রূপান্তরিত হবে অভিশাপে, তা নির্ভর করছে আমরা তাকে ভালো কাজে ব্যবহার করব, নাকি খারাপ কাজে তার উপরেই।




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন