Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

বুধবার, ২১ জুন, ২০২৩

উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে ৯৭৩ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়

 

Uncontested-victory-in-973-seats

সমকালীন প্রতিবেদন : আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার আবেদন করে যে সংখ্যায় মনোনয়পত্র জমা পড়েছিল, তার একটি বড় অংশের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেওয়ার ঘটনা ঘটলো। সবথেকে আশ্চর্যের হল– এই সংখ্যা শাসক দলের পক্ষে বেশি। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার ক্ষেত্রে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এলো সরকারি পরিসংখ্যানে।

ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের ক্ষেত্রে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার ২২ টি ব্লক মিলিয়ে গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরের মোট আসন সংখ্যা ৪৫৩৫ টি। ১৬ জুন পর্যন্ত সব দল মিলিয়ে মনোনয়নপত্র জমা পড়ে ১১ হাজার ৯৬৫ টি। ১৯ এবং ২০ জুন মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন ছিল। সেখানে দেখা যায় এই দুদিনে সব দল মিলিয়ে ১ হাজার ২১ জন আবেদনকারী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে, এরমধ্যে সবথেকে বেশি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষে। এই জেলায় গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে তৃণমূলের পক্ষে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন ৪৩১ জন। অন্যদিকে, বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস এবং নির্দলের ক্ষেত্রে এই সংখ্যা যথাক্রমে ১৩৮, ২১২, ৬৮ এবং ১২১ জন।

জেলায় পঞ্চায়েত সমিতির মোট আসন সংখ্যা ৫৯৩ টি। এরজন্য সব দল মিলিয়ে মনোনয়নপত্র জমা পড়ে ১৮৬৫ টি। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার হয়েছে ১৭৮ টি। এর মধ্যে তৃণমূল, বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস এবং নির্দলের মনোনয়ন প্রত্যাহারের সংখ্যা যথাক্রমে ৮৭, ৪৩, ২৩, ১০ এবং ৫ টি।

জেলা পরিষদের ক্ষেত্রে এই জেলায় মোট আসন সংখ্যা ৬৬ টি। সেক্ষেত্রে সব দল মিলিয়ে মনোনয়নপত্র জমা পড়ে ৩০৭ টি। শেষপর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার হয়েছে ১৭ টি। এর মধ্যে তৃণমূল, বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস এবং নির্দলের মনোনয়ন প্রত্যাহারের সংখ্যা যথাক্রমে ১০, ১, ২, ১ এবং ২ টি। 

অর্থাৎ তিনটি স্তরেই দেখা যাচ্ছে, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের দিক থেকে সব থেকে বেশি এগিয়ে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। তাহলে এক্ষেত্রে কি প্রথমে গোষ্ঠী কোন্দলে‌র জন্য একই দলের পক্ষে এক আসনে একাধিক মনোনয়নপত্র জমা পড়েছিল ? ‌পরে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কড়া নির্দেশের কারণে নিজেদের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের কথা ভেবে অতিরিক্তরা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিলেন ? ‌প্রশ্ন দেখা দিয়েছে তা নিয়ে।

এর পাশাপাশি, আরও বড় চমক রয়েছে জেলা নির্বাচন দপ্তর থেকে প্রকাশিত পরিসংখ্যানে। ১৯ এবং ২০ জুন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের কাজ শেষ হওয়ার পর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য আবেদনকারীদের যে সংখ্যা দাঁড়িয়েছে, সেখানে দেখা যাচ্ছে, উত্তর ২৪ পরগনা জেলার গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে ৪৫৩৫ টি আসনের মধ্যে ৮৬৬ টি আসনে মাত্র একটি করে মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। অর্থাৎ এই ৮৬৬ টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন একক আবেদনকারী। 

অন্যদিকে, জেলায় পঞ্চায়েত সমিতির যে ৫৯৩ টি আসন রয়েছে, সেখানে ১০৪ টি আসনে একটি করে মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। অর্থাৎ এক্ষেত্রেও ওই ১০৪ জন একক আবেদনকারী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন। আর জেলা পরিষদের ক্ষেত্রে আসন সংখ্যা ৬৬ টি। সেখানে ৩ টি আসনে একটি করে মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। অর্থাৎ এক্ষেত্রেও ওই ৩ জন একক আবেদনকারী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন। 

বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ীদের ক্ষেত্রে গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে জেলার মধ্যে সবথেকে এগিয়ে রয়েছে হাড়োয়া ব্লক। এখানকার ১৮৫ টি আসনের মধ্যে ১৫৪ টি আসনেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ের ঘটনা ঘটেছে। পঞ্চায়েত সমিতির ক্ষেত্রে সবার আগে রয়েছে সন্দেশখালি ২ নম্বর ব্লক। এখানকার ২৪ টি আসনের মধ্যে ২৪ টিতেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভের ঘটনা ঘটেছে। আর জেলা পরিষদের ক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছে সন্দেশখালি ১ নম্বর ব্লক। সেখানকার ৩ টি আসনের মধ্যে ২ টিতেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভের ঘটনা ঘটেছে।

তবে এই ৩ স্তরের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী প্রার্থীরা কোন কোন দলের, তা অবশ্য জানাতে পারে নি জেলা নির্বাচন দপ্তর। তবে এই প্রার্থীদের অধিকাংশই যে রাজ্যের শাসক দলের প্রতিনিধি হবেন, তেমনই অনুমান করছে রাজনৈতিক মহল। এমন রাজনৈতিক পরিমন্ডলে পঞ্চায়েত নির্বাচন কতটা সুষ্ঠ এবং অবাধ হবে, সেটাই এখন দেখার।



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন