সমকালীন প্রতিবেদন : দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের নির্দেশে বুধবার তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষিত হল। আর এই কমিটিতে সাধারণ সম্পাদকের পদ পেলেন শঙ্কর আঢ্য। আর এখানেই রাজনৈতিক চমক লুকিয়ে রয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
২০২১ সালে উত্তর ২৪ পরগনার জেলা কমিটিকে ভেঙে তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা গঠিত হয়। সেখানে বনগাঁ উত্তর, বনগাঁ দক্ষিণ, বাগদা, গাইঘাটা এবং স্বরুপনগর– এই মোট ৫টি বিধানসভা এলাকা নিয়ে এই নতুন সাংগঠনিক জেলা গঠন করা হয়।
নতুন এই সাংগঠনিক জেলার প্রথম জেলা সভাপতি করা হয় আলোরাণী সরকারকে। মাস কয়েক পরে তা সরিয়ে সেই পদে আনা হয় গোপাল শেঠকে। তারও কয়েক মাস পরে তৃতীয় জেলা সভাপতি হিসেবে আনা হয় বিশ্বজিৎ দাসকে। এভাবেই দুবছর কেটে গেলেও এতোদিন পূর্ণাঙ্গ জেলা কমিটি গঠিত হয় নি।
গত ১০ এপ্রিল দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক ব্যানার্জী এবং রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি একটি ভার্চুয়াল বৈঠকে বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিশ্বজিৎ দাসকে নির্দেশ দেন যে, ১২ এপ্রিলের মধ্যে জেলার পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে হবে।
সেই নির্দেশ অনুযায়ী এদিন এই কমিটি ঘোষিত হল। এই কমিটিতে মোট ৩৫ জনকে রাখা হয়েছে। এছাড়া, গোপাল শেঠকে চেয়ারম্যান করে ৬ জনের উপদেষ্টা কমিটি গঠন করা হয়েছে। ৩৫ জনের এই জেলা কমিটিতে বিশেষ পদে রাখা হয়েছে শঙ্কর আঢ্যকে। তাঁকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, একসময় তৃণমূলের বনগাঁ শহর সভাপতি এবং বনগাঁ পুরসভার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব সামলেছেন শঙ্কর আঢ্য। বিরোধীদের অভিযোগ, এই সময় বনগাঁয় তৃণমূলে গোষ্ঠীকোন্দল চরমে ওঠে। শেষ পুরসভা নির্বাচনের আগে ধাপে ধাপে শঙ্কর আঢ্যকে পুরপ্রধান এবং শহর সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
এর পাশাপাশি, পুর নির্বাচনে তাঁকে টিকিটও দেয় নি দল। স্বাভাবিকভাবে ক্ষুব্ধ হন শঙ্কর আঢ্য। দলের সমস্তরকম পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর থেকে এতোদিন একপ্রকার নিজের মতো করে দলের কাজে নিযুক্ত ছিলেন শঙ্কর আঢ্য। এবারে নতুন করে জেলা কমিটিতে সাধারণ সম্পাদকের পদ পাওয়ায় খুশি শঙ্কর আঢ্য জানালেন, 'দলের একজন সৈনিক হিসেবে দলের নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করবো।'
শঙ্কর আঢ্যকে ফের দলীয় পদে ফিরিয়ে আনা প্রসঙ্গে এদিন জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস জানান, 'দলে একসময় মনে করেছে শঙ্কর আঢ্যকে পদ থেকে সরিয়ে দিতে, তাই সরিয়ে দিয়েছে। আবার মনে করেছে তাঁকে দায়িত্বে আনা প্রয়োজন, তাই এনেছে। সবাইকে নিয়ে দল পরিচালনা করতে হবে।'
তৃণমূলের এই নতুন জেলা কমিটি ঘোষণার পর থেকেই বনগাঁর রাজনৈতিক মহলে আলোচনা শুরু হয়ে গেছে। এখন দেখার, নতুন কমিটিকে নিয়ে আগামী পঞ্চায়েত এবং লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কতটা সফল হয়। সাধারণ রাজনৈতিক সচেতন মানুষের সমর্থণ তৃণমূল কতটা পায়, সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছে সব মহল।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন