Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

বুধবার, ৮ মার্চ, ২০২৩

চিকিৎসকদের প্রচেষ্টায় সন্তানকে নিয়ে বাড়ি ফিরলেন মুমূর্ষু বধূ

 

The-smiling-bride-returned-home

সৌদীপ ভট্টাচার্য : সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের যৌথ প্রচেষ্টায় মৃত্যু পথযাত্রী এক অন্তঃসত্ত্বা বধূর ভেন্টিলেশন সাপোর্টে সিজার করা হল। জন্ম হল এক সুস্থ পুত্র সন্তানের। চিকিৎসকদের লাগাতার প্রচেষ্টায় অবশেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেন ওই বধূ এবং তাঁর সন্তান।

১ মার্চ উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুরে বাপেরবাড়ি থেকে বছর ৩৩ বয়সের রীতা সাহা ৩৩ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় প্রচন্ড শ্বাসকষ্ট এবং খিঁচুনির সমস্যা নিয়ে বারাসত জেলা হাসপাতালে আসেন। হাসপাতালে কর্তব্যরত স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ রোগীর ওই অবস্থা দেখে যথেষ্ট অবাক হয়ে যান।

এই অবস্থায় তিনি হাসপাতাল সুপারকে ফোনে সব জানান। সেই সময় রোগীর অক্সিজেন স্যাচুরেশন ৩৫। শরীরে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমান অনেক বেশি। এরসঙ্গে খিঁচুনি রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ওই রোগীকে ভেন্টিলেশন সাপোর্ট না দিলে যেকোনও মুহূর্তে মারা যেতে পারেন।

পরিস্থিতি বিবেচনা করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে ভেন্টিলেশন সাপোর্টে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে। ইউএসজি করে দেখা যায়, তাঁর ৩৩ সপ্তাহের গর্ভস্ত সন্তান জীবিত রয়েছে। এই অবস্থায় চিকিৎসকেরা যৌথভাবে সিদ্ধান্ত নেন, দ্রুত সিজার করে গর্ভস্ত সন্তানকে ভূমিষ্ট করাতে হবে।

প্রাথমিকভাবে রোগীর পরিবারের লোকেরা এই ঝুঁকিপূর্ণ চিকিৎসা করাতে রাজি হন নি। তারা চাইছিলেন, রোগীকে কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে নিয়ে যেতে। কিন্তু তখন ওই রোগীর যা শারীরিক অবস্থা, তাতে তাকে অন্যত্র নিয়ে গেলে পথেই তার অবধারিত মৃত্যু হবে।

চিকিৎসকদের কাছ থেকে একথা শুনে অবশেষে বারাসত জেলা হাসপাতালেই সিজার করানোর জন্য রাজি হন রোগীর পরিবারের লোকেরা। এরপর ভেন্টিলেশন সাপোর্টে দ্রুততার সঙ্গে ওই  অন্তঃসত্ত্বা বধূর সিজার করা হয়। তিনি প্রায় ১৬০০ গ্রামের একটি সুস্থ পুত্রসন্তানের জন্ম দেন। 

এরপর থেকে ওই বধূ এবং তার সন্তানকে বিশেষ যত্নে চিকিৎসা করে সুস্থ করে তোলা হয়। এমন ঘটনা বিরল বলে দাবি করেছেন বারাসত জেলা হাসপাতালের সুপার ডা:‌ সুব্রত মন্ডল।

বারাসত জেলা হাসপাতালের চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় শেষপর্যন্ত ওই গৃহবধূ নিজে সুস্থ হয়ে সুস্থ সন্তানের জন্ম দিতে পেরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞ ওই বধূ এবং তার পরিবার।

বুধবার আন্তর্জাতিক নারী দিবসের বিশেষ দিনে নিজের সন্তানকে নিয়ে বাড়ি ফেরতে সমর্থ হলেন ওই বধূ। হাসপাতাল চত্বর ছাড়ার আগে চিকিৎসক এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাতে কার্পণ্য করেন নি রোগী এবং তার পরিবার।




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন