Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

বৃহস্পতিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

গ্রহাণুর আঘাত থেকে রক্ষা পেল পৃথিবী

 

Asteroid-impact

সম্পদ দে : আজ থেকে কয়েক কোটি বছর আগের কথা। পৃথিবীর দিকে দ্রুত গতিতে ধেয়ে আসছে এক বিশাল বড় গ্রহাণু। পৃথিবীর সঙ্গে সংঘর্ষের পরেই চারিদিক কেঁপে উঠলো এক ভয়ংকর ভূমিকম্পে। এত বড় এক বিস্ফোরণ হল যা কিনা হার মানিয়ে দেবে কয়েকশো নিউক্লিয়ার বোমাকেও। 

আর পৃথিবীর সঙ্গে এক বিশাল গ্রহাণুর ঠিক এইরকম এক ভয়ঙ্কর সংঘর্ষের ফলেই লুপ্ত হয়েছিল একসময় পৃথিবীতে বসবাসকারী সবথেকে বড় প্রাণী ডাইনোসরেরা। মনে হচ্ছে হুট করে ডাইনোসরের কথা কোথা থেকে আসলো? আসলে এই ঘটনা অতীতের হলেও ভবিষ্যতেও যে এরকম ঘটনার হবে না তা নয়। 

সম্প্রতি পৃথিবীর একদম গা ঘেঁষে বেরিয়ে গেল আকারে দশটি ফুটবল মাঠের সমান বা আমেরিকান ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের প্রায় দ্বিগুণ উচ্চতার একটি বিশাল গ্রহাণু। আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা 'নাসা'-র বিজ্ঞানীরা বহুদিন ধরেই ওই গ্রহানুর দিকে লক্ষ্য রেখেছিলেন। 

আকারে বিশাল বড় গ্রহাণু হওয়া সত্ত্বেও পৃথিবীর উপরে আসা কোনও বিপদের সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিয়েছিলেন মহাকাশ বিজ্ঞানীরা। গ্রহাণুটি পৃথিবীর কক্ষপথের ৪৮ মিলিয়ন কিলোমিটারের মধ্যে এসেছে। আর সেই জন্যই নাসার তরফ থেকে এই গ্রহাণুটিকে নিয়ার আর্থ অবজেক্ট বলা হয়েছে।

নাসার মহাকাশ বিজ্ঞানীরা সারা বছরই বিভিন্ন গ্রহাণুর গতিপথের ওপরে নজর রেখে থাকেন। আগামী অন্তত ১০০ বছরের গতিপথ আগে থেকেই অংক কষে হিসাব করে রাখেন মহাকাশ বিজ্ঞানীরা। এমনকি তাঁদের মতে, ২১৭১ সালের ২৮ ডিসেম্বর নাগাদ এই গ্রহাণুটিকে আবারও দেখা যেতে পারে। 

সেই সময় এই গ্রহাণুটি পৃথিবী থেকে মাত্র ১০ মিলিয়ন কিলোমিটার দূরত্ব দিয়ে যাবে। এই গ্রহাণুটি ১৫০ মিটার থেকেও বেশি বড় এবং পৃথিবীর কক্ষপথের সাড়ে সাত মিলিয়ন কিলোমিটার এর মধ্যে চলে আসায় মহাকাশ বিজ্ঞানীরা একে পোটেনশিয়ালি হ্যাজার্ডস অবজেক্ট বলেও চিহ্নিত করেছেন। মহাকাশ বিজ্ঞানের ভাষায় এই দূরত্বকে ০.৫ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিট বলা হচ্ছে।

কি এই অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিট? আসলে পৃথিবী থেকে সূর্যের মধ্যে গড় দূরত্বকে ১ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিট হিসেবে ধরা হয়ে থাকে এবং এই গ্রহাণুটি ০.৫ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিট দূরত্ব দিয়ে গিয়েছে। অর্থাৎ এটা বোঝাই যাচ্ছে যে, পৃথিবীর কতটা কাছ থেকে এই গ্রহাণুটি গিয়েছে। এমনকি পৃথিবীর মধ্যাকর্ষণ শক্তি যদি আরও কয়েক গুণ বেশি হতো, তাহলে হয়তো এই গ্রহাণু পৃথিবীর আরও কাছে আসার এবং এর সঙ্গে সংঘর্ষের একটি সম্ভাবনা তৈরি হতো।

বিশেষজ্ঞদের তরফ থেকে জানানো হচ্ছে, এই গ্রহানুটির ব্যাস প্রায় ৫৮০ থেকে ১৩০০ মিটারের মধ্যে। অর্থাৎ গড় ব্যাস প্রায় সাড়ে ন'শো মিটার। এই হিসাব থেকে বোঝাই যায় যে, এর আকার এবং আয়তন আমেরিকান ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের থেকেও প্রায় দ্বিগুণ। ফলে এত বড় একটি গ্রহাণুর যদি পৃথিবীর সঙ্গে সংঘর্ষ হয়, তাহলে একটি বিশাল বড় শহর কিংবা একটি গোটা দেশ ধুলোয় মিশে যেতে পারে চোখের নিমেষে।

যদিও মহাকাশ বিজ্ঞানীরা আশ্বাস দিচ্ছেন যে, এই গ্রহাণু থেকে এই মুহূর্তে ভয় পাওয়ার কোনওরকম প্রয়োজন নেই। তবুও সঠিক ভবিষ্যৎ বলা কারও পক্ষেই সম্ভব নয়। সেই জন্যই আপাতত ওই গ্রহাণুর সঙ্গেসঙ্গেই আরও বিভিন্ন দিকে কড়া নজর রাখছেন বিভিন্ন জ্যোতির্বিজ্ঞানী থেকে শুরু করে নাসার মহাকাশ বিজ্ঞানীরা।






কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন