সমকালীন প্রতিবেদন : বাঙালির কাছে সবথেকে আবেগপ্রবণ উৎসব হল দুর্গাপুজো। পুজোর ছটা দিন সকলে আনন্দ করে কাটানোর পর মন ভারী হয়ে ওঠে উমার কৈলাসে ফেরত যাওয়ার সময়। কিন্তু মা বারেবারেই মর্ত্যে ফিরে আসেন বিভিন্ন রূপে, তাঁর পরিবারের কাছে।
আর তেমনই এবারেও হেমন্তকাল পড়তেই সময় চলে এসেছে মা দুর্গার কাত্যায়নী রূপে আগমনের। আর প্রতিবছরের মতই এবছরও মা কাত্যায়নীর পুজো ধুমধাম করে হচ্ছে জলপাইগুড়ি শহরের রায়কত পাড়ার ভট্টাচার্য পরিবারে।
এবছর তাদের ৭৬ তম পুজো অনুষ্ঠিত হচ্ছে। স্বাধীনতার পর থেকেই এই পুজোর রীতি চলে আসছে তাদের পরিবারে।দেবী কাত্যায়নী হলেন দেবী দুর্গার একটি বিশেষ রূপ। মা দুর্গার মোট নয়টি বিশেষ রূপের মধ্যে কাত্যায়নী হলেন দেবীর ষষ্ঠতম রূপ।
পুরাণে কথিত আছে, ঋষি কাত্যায়ন পার্বতীকে নিজের পুত্রী রূপে কামনা করলে দেবী পার্বতী তার মনস্কামনা পূরণ করতে মেয়ে রূপে ঋষির কাছে এসেছিলেন। আর সেই থেকে মায়ের এই রূপের নাম হয়ে যায় দেবী কাত্যায়নী।
এখন থেকে ৭৫ বছর আগে স্বাধীনতার পরপরই কাত্যায়নী পুজোর সূচনা হয় ভট্টাচার্য পরিবারে। সেই সময় ঢাকা জেলার মানিকগঞ্জ সাবডিভিশনের অন্তর্গত ফুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা অমরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য তাঁদের পরিবারে প্রথম এই পুজো শুরু করেন।
বর্তমানে সেই ভট্টাচার্য পরিবারের সদস্যরা জলপাইগুড়ি শহরে তাঁদের বাড়িতে এই পুজোর রীতি পালন করে চলেছেন পরিবারের ঐতিহ্য মেনে প্রতিবারের মতো এবারেও কাত্যায়নী পুজোর সূচনা হলো ভট্টাচার্য পরিবারে।
ভট্টাচার্য পরিবারের প্রবীণ সদস্য বিদ্যুৎ ভট্টাচার্য জানান, কাত্যায়নী পুজোর নিয়ম দুর্গা পুজোর মতোই সম্পূর্ণ এক। ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত চলবে পুজো। দশমীর পরে বাড়িতেই নিত্যদিনের পুজো করা হবে মায়ের।
দুর্গাপুজোর মতোই ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত পূজিতা হন দেবী। মা কাত্যায়নীকে সাধারণত চারটি, দশটি বা কখনো আটটি হাতে দেখা যায়। বেশিরভাগ মূর্তিতে বা ছবিতে কাত্যায়নীর চারটি হাত দেখা যায়।
ভট্টাচার্য পরিবারের পুজোয় অবশ্য কাত্যায়নী মায়ের মূর্তিতে থাকে দশটি হাত। এত বছরের পুজো উপভোগ করতে এলাকার বাসিন্দাদের পাশাপাশি অন্যান্য জায়গার মানুষেরা উপস্থিত হচ্ছেন এই পুজোয়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন