শম্পা গুপ্ত : পড়াশোনার চাপে এখনকার ব্যস্ততায় ভরা জীবনে শিশুদের খেলাধুলা করার সময় থাকে না। আর সেখানে নাচ, গান, আঁকা তো অনেকেই সঠিকভাবে শিখতে পারে না। এই নানাবিধ চাপে শিশুরা তাদের শিশুসুলভ মনোভাব ছেড়ে এক প্রকার যান্ত্রিক হয়ে যাচ্ছে।
আর এমনই পরিস্থিতিতে ফেলে দেওয়া জিনিস দিয়ে এক ফুটের কালী মূর্তি বানিয়ে রীতিমতো বাড়ির লোক ও পাড়াপ্রতিবেশীদের চমকে দিল আট বছরের ছোট্ট শিশু অরণ্য দত্ত। পুরুলিয়া শহরের চকবাজার এলাকার বাসিন্দা অরণ্য দত্ত। পুরুলিয়ারই একটি বেসরকারি স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্র অরণ্য।
অন্যান্য বাচ্চাদের থেকে একটু আলাদা সে। বিভিন্ন শিল্পকলা ও মূর্তি তৈরি করতে বেশি ভালো লাগে তার। পড়ার পাশাপাশি সারাটা দিন টুকটাক কিছু না কিছু বানিয়ে থাকে সে। এই যেমন দুর্গাপুজোর আগে মা দুর্গার দেড় ফুটের এক মূর্তি বানিয়েছিল।
কষ্ট করে তৈরি হয়েছে বলে যত্ন করে মূর্তি শুধু সাজিয়ে রাখা হবে, তা নয়। মা-বাবার কাছে বায়না করে রীতিমতো পুজো হয়েছে ছোট্ট হাতে তৈরি সেই দুর্গা প্রতিমার। এমনকি দশমীতে নিয়ম মেনে ভাসানো দেওয়া হয়েছে।
এইবার ফেলে দেওয়া সব জিনিসপত্র এক জায়গায় করে সে একটি এক ফুটের কালী প্রতিমা তৈরি করেছে। আর এবারেও ছোট্ট অরন্য তার বাবা-মায়ের কাছে বায়না করে যে, তার তৈরি কালী প্রতিমারও পুজো করতে হবে বাড়িতে।
অরণ্য জানিয়েছে, প্রতিমা তৈরি করতে খুব ভাল লাগে তার। মাটির তো বানানো যাবে না, তাই কাগজ ও নানা বর্ণের রং দিয়ে ফেলে দেওয়া সব জিনিসকে গুছিয়ে মাকালীর প্রতিমা তৈরি করেছে। স্কুলের ক্লাস, টিউশনি এবং সমস্ত কাজের ফাঁকে বাকি সময়টুকু খেলাধুলা না করে টানা কয়েক দিন ধরে মা কালীর মূর্তি তৈরিতে লেগে পড়েছে এই ছোট্ট শিশুটি।
বাবা সারাদিন ব্যবসার কাজে ব্যস্ত থাকায় মাঝেমধ্যে মায়ের সাহায্য নিয়েই চলছে মূর্তি তৈরির কাজ। অরণ্যের বাবার কথা অনুযায়ী তার ছেলের আঁকার দিকে যথেষ্ট ঝোঁক আছে। ভবিষ্যতে এইরকম কিছু নিয়ে চাইলে তারা অবশ্যই তার পাশে থাকবে।
ছোট্ট শিশুর এই অবাক করা কান্ড দেখে বাড়ির কেউ তাকে বকাবকি করে না, বরং বাড়ির সকলে এবং পাড়া প্রতিবেশীরা তাকে আরও সাহস জোগাচ্ছেন এবং সহযোগিতা করছেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন