Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

শনিবার, ২২ অক্টোবর, ২০২২

মাকালীর ভোগে গলদা চিংড়ি নিবেদন করা হয়

Makali-Bhoge-Lobster

সমকালীন প্রতিবেদন : মাকালীর পুজোয় পাঠা বলির কথা শোনা যায়। কিন্তু এই কালীমায়ের পুজোর নিয়ম একটু আলাদা। এই পুজো পূর্ণতা পায় গলদা চিংড়িতে। তাও আবার ইছামতী নদীর। বছরের পর বছর ধরে এমন রীতিই চলে আসছে উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের ইটিন্ডার সিদ্ধেশ্বরী কালীপুজোয়।

প্রায় ৪০০ বছর আগে কৃষ্ণনগরের রাজা কৃষ্ণচন্দ্র একবার যশোরের ধূমঘাট থেকে ইছামতী নদী ধরে টাকিতে যাচ্ছিলেন। সীমান্ত লাগোয়া এই এলাকাটি সেই সময় ছিল বনজঙ্গলে ঘেরা। নদীপথে দীর্ঘপথ পাড়ি দেওয়ার পর একসময় ক্লান্ত হয়ে পরেন কৃষ্ণচন্দ্র। 

বসিরহাট শহরের উত্তর-পূর্ব দিকে ইছামতী নদীর পাড়ে একটি স্থান বেছে নিয়ে সেখানে বিশ্রাম নেওযার ব্যবস্থা করেন। সেখানে রাত কাটিয়ে ভোরের আলো ফুটতেই সেখানকার সূর্যোদয় দেখে আপ্লুত হয়ে পরেন তিনি। আর তারপরই তিনি ঠিক করেন যে, এই স্থানে তিনি একটি গঞ্জ তৈরি করবেন।

যেমন ভাবনা, তেমন কাজ। শুরু হয় গঞ্জ তৈরির কাজ। নাম দেওয়া হয় ইটিন্ডা। শুধু গঞ্জ নয়, পাশাপাশি তৈরি করা হয় সিদ্ধেশ্বরী কালী মায়ের মন্দির। সেই সময় টাকির জমিদার রায়চৌধুরীদের অধীনে ছিল এই জায়গাটি। তাই রায়চৌধুরীদের উদ্দেশ্যেই জঙ্গল পরিষ্কার করে গঞ্জের পাশাপাশি সেই মন্দির তৈরি করা হয়েছিল। 

তখন অবশ্য বাঁশ এবং বিচুলীর ছাউনি দিয়ে এই মন্দির তৈরি হয়েছিল। বসিরহাট ১ নম্বর ব্লকের ইটিন্ডা-পানিতর গ্রাম পঞ্চায়েতের অর্ন্তগত ইটিন্ডা কলবাড়ি সংলগ্ন এলাকার সেই মন্দির পরবর্তীতে পাকা মন্দিরে রূপান্তরিত হয়।

রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের ইচ্ছেয় ইটিন্ডার এই সিদ্ধেশ্বরী কালী মাকে ইছামতির গলদা চিংড়ি নিবেদন করার প্রথা চালু হয়। সেইসময়কার সেই প্রথা আজও চলে আসছে। অন্যান্য জায়গায় সাধারণত কালীপুজোয় খিঁচুড়ি। 

পাঠা বলি দিয়ে পুজোর আয়োজন করার রেওয়াজ থাকলেও এই পুজোয় এই ব্যতিক্রমী নিয়মে আকৃষ্ট হন অনেক ভক্তই। মন্দির সংলগ্ন পুকুর নিয়েও নানা লোককাহিনী শোনা যায়। 

সেসম্পর্কে মন্দির কমিটির এক সদস্য তপন পাল জানালেন, শোনা যায় এই পুকুরে মাকালীকে নানারূপে দেখেছেন এলাকার মানুষ। আর তাই এই পুকুরে স্নান, জামাকাপড় কাচা নিষিদ্ধ। পুরনো রীতি মেনে, বিশ্বাস এবং নিষ্ঠাভরে আজও সমানতালে পুজিত হয়ে আসছেন ইটিন্ডার এই সিদ্ধেশ্বরী মাকালী।






 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন