Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

মঙ্গলবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আড়াই কেজির প্লীহা অস্ত্রোপচার করে বাদ দিলেন চিকিৎসকেরা

 

2.5-kg-spleen-surgery

সৌদীপ ভট্টাচার্য : সাফল্যের নতুন নজির গড়ল উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত জেলা হাসপাতাল তথা মেডিকেল কলেজ। মাত্র ২৩ কিলো ওজনের ১৭ বছরের থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত রোগীর পেট থেকে আড়াই কিলোগ্রাম ওজনের একটি প্লীহা অস্ত্রোপচার করে বাদ দেওয়া হল। এমন ঘটনা বারাসত জেলা হাসপাতালে এই প্রথম।

জানা গেছে, আমডাঙার বাসিন্দা রিম্পা খাতুনের যখন ৬ মাস বয়স, তখনই তার পরিবার জানতে পারে যে, সে খ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত। আর এভাবেই দীর্ঘ এতো বছর কলকাতার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা করে শেষে বারাসত জেলা হাসপাতালে নিয়মিত সময়ের ব্যবধানে এসে রক্ত নিতে হতো রিম্পাকে।

এরইমধ্যে তার পেটে যন্ত্রনা শুরু হওয়ায় বারাসত জেলা হাসপাতালের বহি:‌বিভাগে চিকিৎসক দেখিয়ে পরীক্ষা করার পর জানা যায়, তার পেটের ভেতরে একটি প্লীহা আকারে অনেক বড় হয়ে সেটি সমস্যা তৈরি করছে। 

আর তাই সেটি অস্ত্রোপচার করে বাদ দিতে হবে। কিন্তু যেহেতু সে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত, ফলে তার ক্ষেত্রে এই অস্ত্রোপচার কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ।

তাসত্ত্বেও বারাসত জেলা হাসপাতালের শল্য চিকিৎসক ডা: ‌অলোককুমার মৌলিকের পরামর্শে তাঁর অধীনে ভর্তি করা হয় রিম্পাকে। গত শনিবার তার অস্ত্রোপচার করে আড়াই কিলো ওজনের ওই প্লীহাটি তার পেট থেকে বের করেন চিকিৎসক। 

এব্যাপারে রিম্পার দিদিমা হাজিরা বিবি জানালেন, তাঁরা কলকাতার বিভিন্ন হাসপাতালে থ্যালাসেমিয়ার চিকিৎসা করিয়েছেন। বারাসত হাসপাতালে নিয়মিত রক্ত নিতে এসে ডাক্তারবাবুদের সঙ্গে রিম্পার পেটে ব্যথার কথা জানাতে, তাঁরা পরীক্ষা করে সমস্যার কথা জানান। তাঁদের চিকিৎসায় রিম্পা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যেতে পারলো।

একজন থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত রোগীর শরীরে এইধরণের অস্ত্রোপচার করার ক্ষেত্রে বেশ ঝুঁকি রয়েছে। আর সেই ঝুঁকি নিয়েই অস্ত্রোপচার করে সফল চিকিৎসক অলোককুমার মৌলিক এবং তাঁর সহকর্মীরা। এব্যাপারে তিনি জানান, প্লীহার ওজন ১ কিলোগ্রামের বেশি হলে তখন সেটিকে হিউজ স্প্লিনোমিগালি বলা হয়।

আর রিম্পা যেহেতু একজন থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত রোগী, তাই তার শরীরে হিমোগ্লোবিনের পরিমান ৬–৭ এর বেশি থাকে না। আর তাই এই রোগীর ক্ষেত্রে এই ধরনের অস্ত্রোপচার স্বাভাবিকভাবেই একটু চিন্তার। তবে মাথা ঠান্ডা করে যেকোনও মহকুমা বা জেলা স্তরের সরকারি হাসপাতালে এই অস্ত্রোপচার সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।

জানা গেছে, থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত এমন আরও বেশ কয়েকজন রোগীয় শরীরে অস্ত্রোপচার সংক্রান্ত চিকিৎসার প্রয়োজন। এক এক করে তাঁদের প্রত্যেকের চিকিৎসা করা হবে। সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের সহযোগিতায় অস্ত্রোপচারের ৭২ ঘন্টার মধ্যেই অনেকটা সুস্থ হয়ে রিম্পা বাড়ি ফিরতে পারায় খুশি রিম্পার পরিবার।





কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন