Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

শনিবার, ২৯ জানুয়ারী, ২০২২

তিস্তা ব্যারেজ উত্তরবঙ্গের গর্ব (পর্ব–২)‌

Teesta-Barrage-is-the-pride-of-North-Bengal

তিস্তা ব্যারেজ উত্তরবঙ্গের গর্ব -(পর্ব–২)‌     

অজয় মজুমদার


আমরা এখন গাজলডোবায়৷ এখানে রয়েছে তিস্তা ব্যারেজ৷ তিস্তা ব্যারেজ প্রকল্প হলো বাংলা দেশের উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প। অনেকে এই প্রকল্পকে বাংলাদেশের লাইফলাইন বলে চিহ্নিত করেন। তিস্তা নদী বাংলাদেশ-ভারতের একটি আন্তঃসীমানা নদী৷ এটি ভারতের সিকিম ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য এবং বাংলাদেশের মধ্য নিয়ে প্রবাহিত একটি নদী। তিস্তা সিকিম ও পশ্চিমবঙ্গের উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার পর বাংলাদেশে প্রবেশ করে ব্রহ্মপুত্র নদের সঙ্গে মিলিত হয়েছে৷

তিস্তার মাসিক গড় জল অপসারনের পরিমান ২,৪৩০ কিউসেক৷ ২০১৪ সালে তিস্তার ভারতীয় অংশে গাজলডোবায় স্থাপিত বাঁধের সবগুলি গেট বন্ধ করে দেওয়া হলে তিস্তা নদীর বাংলাদেশ অংশে জলপ্রবাহ শূন্যে নেমে আসে৷ এর ফলে বাংলাদেশের ১২৫ কিলোমিটার দীর্ঘ তিস্তা অববাহিকায় মানুষের জীবনযাত্রা স্থবির হয়ে পড়ে। এর প্রতিবাদে ২০১৪ সালের এপ্রিল মাসে বাংলাদেশে একটি প্রতিবাদী জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের দিকে তাকিয়ে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ কিছু জল ছাড়লে বাংলাদেশের ডালিয়া পয়েন্টে জল স্বল্প সময়ের জন্য উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়৷ 

তিস্তা নদীর প্রবাহ পথ সম্পর্কে একটু জানা প্রয়োজন। তিস্তা নদীর উৎস উত্তর সিকিমের পর্বতমালার ৫৩৩০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত সো-লামো হ্রদে৷ হ্রদটি শেসচেনের কাছে ডোংখা গিরিপথের উত্তরে অবস্থিত।  তিস্তা নদী ছাঙ্গু, ইউমথাং ও ডোটকিয়া লা পর্বতশ্রেণী থেকে উৎপন্ন ছোট ছোট নদীর জলে পুষ্ট৷ সিকিমের রংপো পশ্চিমবঙ্গের তিস্তাবাজার শহরের মধ্য অংশে তিস্তা উভয় রাজ্যের সীমানা নির্দেশ করেছে৷ তিস্তা পশ্চিমবঙ্গের মালভূমি অঞ্চলে প্রবেশ করার পর জলপাইগুড়ি জেলা ও বাংলাদেশের রংপুর জেলার মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়ে তিস্তা মিশেছে ব্রহ্মপুত্রে৷


গাজলডোবার ঝিলে প্রচুর পরিযায়ী পাখি প্রতিবছর আসে। আমরা নানারকম পাখি দেখতে পেলাম। নতুন নতুন রিসোর্ট তৈরি হচ্ছে৷ এখানে শুটিং হচ্ছে৷ রাস্তাঘাট খুব সুন্দর হয়েছে৷ সারা শহর আমরা টোটো করে ঘুরলাম৷ টোটো চালক গাজলডোবার ছেলে৷ একসময় এখানে মৎস্যজীবীদের বাস ছিল৷ ব্যারেজ তৈরি হওয়ার পর মানুষের রুজি-রোজগারে অনেক পরিবর্তন এসেছে৷


ঘুরে এসে লাঞ্চ সারলাম গাজলডোবার একটি হোটেলে। সেখানেও ভোজন মেনুতে ছিল বোরোলি মাছের ঝোল। খাওয়ার পর আমরা আবার গাড়িতে উঠলাম৷ গাড়ি আমাদের পৌঁছে দিল মালবাজার জংশন স্টেশনে। স্টেশনে আসার আগেই দেখে নিলাম বজরংবলী মন্দির। এটি মালবাজারের একটি বিখ্যাত মন্দির। কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেস ৫.৪৭ এ এলো৷ আমরা উঠে পড়লাম৷ মিসেস প্রধান আমাদের হাত নেড়ে বিদায় দিলেন। 




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন