Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

রবিবার, ৮ আগস্ট, ২০২১

অতিমারিতে ছাত্রছাত্রীদের বাড়ি বাড়ি ঘুরছেন শিক্ষকরা

Teachers-are-going-from-house-to-house

সমকালীন প্রতিবেদন : অতিমারি করোনা কেড়ে নিয়েছে অনেককিছুই। দূরে থাকো, দূরে থাকো বলতে বলতে মানুষে মানুষে ব্যবধানও বেড়েছে দুস্তর। সেই ভাঙা সম্পর্ক মেরামত করতে পথে নেমেছেন শিক্ষকরা। কেমন আছে ছেলে মেয়েরা ? কেমন কাটছে তাদের সময় ? দীর্ঘ দেড় বছর স্কুলের আঙিনায় পা পড়েনি তাদের। যাদের কলকাকলিতে ভরে উঠত প্রত্যেকটা দিন, আজকে সেই স্কুল বাড়িগুলো নিঃসঙ্গ ভুতের বাড়ির মতো দাঁড়িয়ে আছে। কোথাও প্রাণ নেই, প্রাণের স্পন্দন নেই। 

কিন্তু বারবার তো ফিরে ফিরে আসে সেই কচি মুখগুলো। তাই গ্রামে গ্রামে ঘুরছেন মাস্টারমশাই, দিদিমণিরা। গত মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে শুরু হয়েছে বাগদা ব্লকের বাজিতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের এই কর্মসূচী। প্রধান শিক্ষক দিলীপ কুমার সরকারের নেতৃত্বে স্কুলের অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষিকা  যোগ দিয়েছেন এই কাজে। 

এখনও পর্যন্ত বাজিতপুর, সন্তোষা কলোনী, বিজয়নগর, সন্তোষা, ভবানীপুর ইত্যাদি গ্রাম ঘুরে প্রায় সাড়ে তিনশো বাড়ি পৌঁছতে পেরেছেন তাঁরা। আরও অনেক ছাত্রছাত্রীদের বাড়ি যাবার ভাবনা রয়েছে তাঁদের। মাস্টারমশাইরা খুঁটিয়ে-খুঁটিয়ে খোঁজ নিচ্ছেন সবকিছু। বাড়িতে স্মার্টফোন আছে কিনা, পড়তে বসে কিনা, কোথায় পড়তে যায়, বাইরে পড়তে গেলে মাস্ক পড়ে কিনা, বই, খাতাপত্র সব আছে তো। তবে অধিকাংশ বাবা-মায়েদের অভিযোগ, স্কুল বন্ধ থাকায় পড়াশোনায় মন নেই। ছেলেমেয়েরা আগের থেকে দুষ্টুমি বেশি করছে। অল্পেতেই রেগে যাচ্ছে।

মাস্টারমশাইরা যতটা পারছেন প্রত্যেকের নামের পাশে নোট রাখছেন। আর ছেলেমেয়েদের বাড়ি গিয়ে তাদের প্রত্যেকের হাতে তুলে দিচ্ছেন মাস্ক-স্যানিটাইজার, বিস্কুটের প্যাকেট, কলম এবং লজেন্স। বিলি করছেন কোভিড সচেতনতামূলক লিফলেট। উৎসাহিত করছেন আপাতত তারা যেন অনলাইন ক্লাসে যোগ দিতে পারে।  

তবে সেখানেও রয়েছে অনেক সমস্যা। অনেক বাড়িতেই স্মার্টফোন নেই। ফোন থাকলেও হয়ত রিচার্জের পয়সা ফুরিয়ে গেছে! তবুও চেষ্টা করছেন কিছু কিছু ক্ষেত্রে আপাত সমস্যার সমাধান করবার। প্রধান শিক্ষক দিলীপ জানালেন, 'আমরা অন্তত এক হাজার বাড়িতে পৌঁছানোর প্রাথমিক পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্ন সমস্যা আমরা নোট করে রাখছি। নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব।' 

গ্রামে গ্রামে ঘু‌রে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অভিজ্ঞতার ডালি পরিপূর্ণ যেমন হচ্ছে, তেমনি ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কের নতুন দিশা এখান থেকেই বেরিয়ে আসবে। বাজিতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের এই উদ্যোগ ছাত্র-শিক্ষক-অভিভাবক সম্পর্কের নতুন রসায়ন সৃষ্টিতে সহায়ক হবে বলে আশা করছে সব পক্ষই।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন