Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

বৃহস্পতিবার, ৫ আগস্ট, ২০২১

লকডাউনে সক্রিয় পাচারচক্র ‌: সচেতনতায় ময়দানে প্রশাসন, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা

 

Active-trafficking-in-lockdown

সমকালীন প্রতিবেদন : করোনা পরিস্থিতির কারণে লকডাউন। সেই কারণে নিম্ন, মধ্যবিত্ত নিম্নবিত্ত পরিবারের আর্থিক পরিস্থিতি খুবই সঙ্গিন। এরই সুযোগ নিয়ে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে নারী পাচারকারীরা। কাজ দেওয়ার নাম করে ভিন রাজ্যে পাচার করে দেওয়া হচ্ছে গ্রামাঞ্চলের নাবালিকা, যুবতীদের। সাম্প্রতিক একটি সমীক্ষায় এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। এমন পরিস্থিতিতে ওয়েস্টবেঙ্গল চাইল্ড কমিশনের সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা 'শক্তি বাহিনী'‌ যৌথভাবে পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে সচেতনতামূলক কর্মসূচি শুরু করেছে।

Active-trafficking-in-lockdown

সম্প্রতি জাতিসংঘের একটি সমীক্ষা রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে যে, করোনা পরিস্থিতির কারণে দিনের পর দিন লকডাউন চলতে থাকায় কাজ হারিয়েছেন প্রচুর মানুষ। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের সাধারণ মানুষের আর্থিক অবস্থা খুবই সঙ্গিন হয়ে পড়েছে। এর পাশাপাশি, দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ স্কুল-কলেজ। ছাত্রছাত্রীরা গৃহবন্দী। অনেকের মোবাইলই এখন অন্যতম ভরসা। আর এটাকেই হাতিয়ার করে মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে নারী পাচার চক্র। 


সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, গৃহবন্দি থাকা যুবতীরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামে বন্ধুত্ব পাঠাচ্ছেন অচেনা মানুষদের সঙ্গে। তারা কাজ দেওয়ার নাম করে স্বপ্ন দেখাচ্ছে এইসব মেয়েদের। আর সেইসব প্রলোভনে পা দিয়েই বিপদে পড়তে হচ্ছে এই মেয়েদের। 

সমীক্ষায় উঠে এসেছে, করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউনের সময়কালে উত্তর ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে প্রচুর পরিমাণে নতুন ম্যাসাজ পার্লার চালু হয়েছে। এইসব ম্যাসাজ পার্লারে কাজ দেওয়ার নাম করে পূর্ব ভারত সহ বিভিন্ন রাজ্যের গ্রামাঞ্চল থেকে দরিদ্র পরিবারের মেয়েদের সেখানে ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তারপর সেখানে তাঁদেরকে এক প্রকার জোর করে দেহ ব্যবসায় নামানো হচ্ছে। ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট রাজ্যের পুলিশ এমন একাধিক ম্যাসেজ পার্লারে অভিযান চালিয়ে প্রচুর মেয়েকে উদ্ধার করেছে। 

আর এ ব্যাপারেই মানুষকে সচেতন করতে এগিয়ে এসেছে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা শক্তি বাহিনী। তারা পশ্চিমবঙ্গের চাইল্ড কমিশনের সঙ্গে যৌথভাবে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সমস্ত থানাগুলিতে পুলিশ এবং সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে সচেতনতামূলক কর্মসূচি পালন করছে। সংগঠনের দুই সক্রিয় সদস্য, সমাজকর্মী ঋষি কান্ত এবং অজিত রায় জানান, 'গত একমাস ধরে শুরু হয়েছে আমাদের এই কর্মসূচি। দুই ২৪ পরগনার প্রায় ৭০ টি থানার পুলিশ অফিসার, সিভিক ভলান্টিয়ারদের নিয়ে সচেতনতামূলক বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সেখানে এলাকার মহিলাদেরও রাখা হচ্ছে। ইতিমধ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সমস্ত থানায় এই কর্মসূচী শেষ হয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ পুলিশ জেলার সমস্ত থানায় সম্প্রতি শেষ হয়েছে এই কর্মসূচি। আজ, বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে বসিরহাট পুলিশ জেলার থানাগুলিতে এই কর্মসূচি।' 

সংগঠনের সদস্যরা মনে করেন, শুধু সরকার, পুলিশ দিয়ে এই পাচার চক্রের বিশাল কারবার রোখা সম্ভব নয়। তার জন্য গ্রামের মানুষকেও এগিয়ে আসতে হবে। গ্রামের কোন মানুষটি ওই এলাকার নাবালিকা, যুবতীদের কাজ দেওয়ার নাম করে প্রলোভন দেখিয়ে বাইরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে, তার খোঁজ নিয়ে পুলিশকে জানাতে হবে। আর তাহলেই বন্ধ করা যাবে এই পাচার চক্রের রমরমা কারবার। পাশাপাশি, পরিবারের সদস্যদেরও দায়িত্ব রয়েছে, তাঁদের ঘরের মেয়েদের বোঝানো, যাতে তাঁরা এই ধরনের প্রলোভনে পা দিয়ে নিজেদেরকে বিপদের মুখে ঠেলে না দেন।



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন