Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

সোমবার, ১৯ জুলাই, ২০২১

মিনিটে ১৬ বার স্যার বলেন এদেশের আমলারা, পর্যবেক্ষণ অর্থনীতিবিদের

মিনিটে ১৬ বার স্যার বলেন এদেশের  আমলারা, পর্যবেক্ষণ অর্থনীতিবিদের
সমকালীন প্রতিবেদন : স্যার...ইয়েস স্যার। ওকে স্যার। সিওর স্যার। আমলাতন্ত্রে 'স্যার'‌ কথাটি খুবই প্রচলিত। স্যার তাঁরা যেমন বলতে পছন্দ করেন, তেমনই শুনতেও। কিন্তু এদেশের একজন আমলা দিনে কতবার স্যার বলে থাকেন, জানেন? বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসুর পর্যবেক্ষণ, এদেশের একজন আমলা মিনিটে ১৬ বার পর্যন্ত স্যার কথাটি বলে থাকেন। সেই ঘটনা ঘটেছে তাঁরই চোখের সামনে। 

একবার একটি মিটিংয়ে, সেখানে একজন মন্ত্রীও উপস্থিত ছিলেন, একজন সিনিয়র আমলাকে স্যার বলতে দেখে তিনি গোনা শুরু করেন। তার পর দেখেন, এক মিনিটের মধ্যে ওই আমলা ১৬ বার স্যার বলেছেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে কৌশিক বসুর সংযোজন, একবার স্যার উচ্চারণ করতে যদি আধ সেকেন্ড সময় লাগে, তা হলে তিনি হিসেব করে দেখেছেন, ওই আমলা যতক্ষণ কথা বলেছেন, তার মধ্যে ১৩ শতাংশ সময় ধরে শুধু স্যারই বলে গিয়েছেন। সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে কৌশিক বসুর স্মৃতিচারণামূলক বই পলিমেকার্স জার্নাল: ফ্রম নিউ দিল্লি টু ওয়াশিংটন ডিসি। ওই বইয়ের পাতায় উঠে এসেছে ভারতীয় আমলাতন্ত্রের নানা দিক। টুকরো টুকরো স্মৃতি। 

লন্ডন স্কুল অফ ইকোনমিক্স থেকে পিএইচডি শেষ করে তিনি এখন মার্কিন মুলুকে কর্নেল ইউনিভার্সিটিতে অর্থনীতি বিষয় নিয়ে পড়ান। একসময় বিশ্বব্যাঙ্কের প্রধান অর্থনীতিবিদ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০০৯ সাল থেকে ২০১২ পর্যন্ত তিনি ভারত সরকারের প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা হিসেবেও কাজ করেছেন। তখনই এদেশের আমলাতন্ত্রকে কাছ থেকে চেনার সুযোগ হয় তাঁর। সেই অভিজ্ঞতাই তুলে ধরেছেন নিজের লেখা বইয়ের পাতায়। একসময় সাদা অ্যাম্বাসেডর চড়তেন ভারতীয় আমলারা। সেই গাড়ির মাথায় লাগানো থাকত লালবাতি। এখন আর অ্যাম্বাসেডর চড়েন না তাঁরা। অন্য গাড়ি ব্যবহার করেন। 

একসময় আমলাদের বসার চেয়ারে তোয়ালে দেওয়া থাকত। এখনও কিছু অফিসে দেখা গেলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বদল এসেছে। বদলেছে কাজের ধরনও। কিছু আমলাতন্ত্রে কিছু জিনিস রয়ে গিয়েছে। এই যেমন অনুমতি নেওয়া। ছোট-বড় যে কোনও কাজের জন্য অনুমতি নিতে হয়। তা সে অফিসে কফির ব্র্যান্ড বদল করতে হোক, আর টয়লেট সাফাই করার জন্য কর্মীর প্রয়োজন, যাই হোক না কেন, একেবারে ঊর্ধ্বতন কর্তা থেকে অনুমতির প্রয়োজন। আর শৃঙ্খলা মেনে সেই অনুমতি গড়াতে গড়াতে একেবারে নিচের স্তরে আসার পর সেই কাজ হবে। এসব বিষয়ও ধরা পড়েছে কৌশিক বসুর বইয়ে। 

তাঁর পর্যবেক্ষণ, সরকারি বৈঠকগুলোয় বড়কর্তাদের বসার চেয়ার একটু উঁচু হয়। যাতে তিনি একটু উঁচু থেকে কথা বলতে পারেন। এর পেছনে কি বাকিদের মনোসংযোগ আদায় করার চেষ্টা! তেমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন লেখক। উল্লেখ করেছেন, সকলের অগোচরে তিনিও চেয়ারের হাতলের নিচে থাকা লিভার টেনে চেয়ারের উচ্চতা বাড়িয়ে নিতেন। বলেছেন, আমলাদের জন্য বাথরুমে নাম লেখা তোয়ালের গল্প। প্রত্যেকের জন্য আলাদা তোয়ালে, একজনের জিনিস অন্যজন ব্যবহার করতে পারবেন না।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন