সমকালীন প্রতিবেদন : ২০২৬ সালের টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরু হতে আর মাত্র দু’ মাস বাকি। দল গঠনের প্রস্তুতি যেমন চলছে, তেমনই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল হঠাৎ পড়েছে বড় উদ্বেগে। টুর্নামেন্টের সম্প্রচার নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। ভারতীয় মিডিয়া বাজারের অন্যতম বড় সংস্থা JioStar চার বছরের সম্প্রচার চুক্তির মাঝপথেই পিছু হটার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে বিশ্বকাপের সরাসরি সম্প্রচার কোন প্ল্যাটফর্মে ও কীভাবে হবে– সেই প্রশ্নই এখন মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছে ক্রিকেট পরিচালন সংস্থার কাছে।
২০২৪ থেকে ২০২৭—এই চার বছরের চক্রে প্রতি বছর কমপক্ষে একটি করে বড় ICC ইভেন্ট সম্প্রচারের ক্ষমতা ছিল JioStar–এর হাতে। প্রায় ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের এই চুক্তি ক্রিকেট বিশ্বের নজর কেড়েছিল। কিন্তু সংস্থাটি ইতিমধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে, আর্থিক দায় সামলানো তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। স্পোর্টস কনটেন্টে বিপুল লোকসানের কারণেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানানো হয়েছে কর্তৃপক্ষের তরফে।
অডিটেড হিসাব অনুযায়ী, এক বছরের মধ্যে কনটেন্ট সংক্রান্ত ক্ষতির পরিমাণ দ্বিগুণেরও বেশি বেড়ে দাঁড়িয়েছে। পাশাপাশি অনলাইন বেটিং ও রিয়েল মানি গেমিং সংক্রান্ত নীতিনিষেধের পর সংস্থার আর্থিক চাপ আরও বৃদ্ধি পেয়েছে– এমনটাই দাবি তাদের। এই পরিস্থিতিতে বাকি দু’বছরের মিডিয়া রাইটস বজায় রাখা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে JioStar।
এই সিদ্ধান্তের ফলে ICC এখন নতুন মিডিয়া পার্টনার খুঁজতে বাধ্য হয়েছে। ভারতীয় উপমহাদেশ যে বিশ্ব ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় সম্প্রচার বাজার– তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। সেই বাজারে সম্প্রচারকারী অনিশ্চিত হলে ব্যাঘাত ঘটতে পারে আয় ও বাণিজ্যিক লাভের বড় অংশেই। সূত্রের খবর, Sony Sports Network, Netflix ও Amazon Prime–কে ইতিমধ্যেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
তবে উচ্চ বিনিয়োগের শর্তে এখনও কোনও সংস্থা তেমন আগ্রহ দেখায়নি বলেই জানা গেছে। উল্লেখ্য, টুর্নামেন্ট শুরু ২০২৬ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি, চলবে ৮ মার্চ পর্যন্ত। সময় কমে আসছে দ্রুত। হাতে যদি সঠিক পরিকল্পনা ও চুক্তি না থাকে, তাহলে কোটি কোটি দর্শকের সামনে তৈরি হতে পারে হতাশার ছবিও– কমতে পারে টিভি/ডিজিটাল সম্প্রচারের মান ও প্রাপ্যতা।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, শুধু আর্থিক বা বাণিজ্যিক চাপ নয়, এ সিদ্ধান্ত ক্রিকেট বাজারের স্থিতিশীলতাকেও প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারলে বিশ্বকাপের বিনোদনে টান পড়তে পারে প্রকটভাবে। এখন দেখার, কত দ্রুত নতুন সম্প্রচার সঙ্গী খুঁজে পায় ICC। নচেৎ, ২০২৬ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজনের উত্তেজনা যেন শুরুতেই বড় সমস্যার চাপে না পড়ে।









কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন