সমকালীন প্রতিবেদন : নির্বাচন কমিশনের এনুমারেশন ফর্মে ভুল এন্ট্রি নিয়ে জেলায় জেলায় বাড়তে থাকা অভিযোগের পর অবশেষে বড় পদক্ষেপ করল কমিশন। বুথ-স্তরের আধিকারিক এবং ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসারদের দেওয়া হল ভুল সংশোধনের বিশেষ সুযোগ। কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোটারদের তথ্য ডিজিটাইজেশনের সময় যে সমস্ত ক্ষেত্রে ভুল তথ্য আপলোড হয়েছিল, সেগুলি এবার আগেভাগেই সংশোধন করা যাবে। সোমবারই এই মর্মে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করছে কমিশন।
ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর)-এর জন্য যে অতিরিক্ত সময় পাওয়া গিয়েছে, সেই সময়ের মধ্যেই ভুল সংশোধনের কাজ সারতে হবে বিএলও এবং ইআরও–দের। কমিশনের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, শুনানি চলাকালীন সমস্ত তথ্যের পুনরায় যাচাইয়ের সুযোগ থাকলেও এ বার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে– যত দ্রুত সম্ভব এনুমারেশন ফর্মে থাকা ভুল তথ্য সংশোধন করে ফেলতে হবে। বিএলও অ্যাপে আগে যেখানে ‘এডিট’ অপশন ছিল না, এখন সে সুযোগ যুক্ত করা হয়েছে। ফলে ছবি বা তথ্য একবার আপলোড হয়ে গেলে আর সংশোধন করা যেত না, সেই সমস্যা দূর হচ্ছে।
সোমবার সকাল পর্যন্ত বাংলায় প্রায় ৯০ শতাংশ এনুমারেশন ফর্মের ডিজিটাইজেশন শেষ হয়েছে। তবে এখনও আন-কালেক্টেড ফর্মের সংখ্যা বড়। কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, আন-কালেক্টেড ফর্মের মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪২,১০,৩৪৬। এদের মধ্যে— মৃত: ২১,০৫,৩৬৯, পাওয়া যায়নি/অনুপস্থিত: ৫,২৯,১৩৪, স্থায়ীভাবে সরে গিয়েছেন: ১৪,৬২,০৫৪, ডুপ্লিকেট/আগেই এনরোল ছিল: ৯৪,৭০৩, অন্যান্য কারণ: ১৯,০৮৬। সবচেয়ে বেশি আন-কালেক্টেবল ফর্ম রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনায়– সংখ্যা ৫,৬৫,৮৩৬। এর পর দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং তৃতীয় স্থানে হাওড়া।
কমিশন সূত্রে অসন্তোষের কথা স্পষ্ট। এখনও বহু জেলার বিএলও–রা আন-কালেক্টেবল ফর্ম সময়মতো আপলোড করছেন না। স্পেশ্যাল অবজার্ভার সুব্রত গুপ্ত জানিয়েছেন, তিনবার ভিজিটের পরেও চূড়ান্ত আপলোডে দেরি করছেন অনেক বিএলও। কোথাও কোথাও স্থানীয় প্রশাসনের কর্তারাই নাকি বিএলও–দের বলছেন, “এখন আপলোড করবেন না, শেষে বলা হবে তখন করুন।” এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন তুলেছেন অবজার্ভার, বিএলও–রা ঠিক কার নির্দেশের অপেক্ষায়?
কমিশনের বক্তব্য, যত দ্রুত আপলোডের কাজ শেষ হবে, তত দ্রুত পরিষ্কার হবে বাংলার প্রকৃত মৃত ভোটারের সংখ্যা ও ভোটার তালিকার সঠিকতা। বিশেষ সংশোধনের এই পর্যায়ে তাই ভুল সংশোধন ও তথ্য আপলোড– দু’টিকেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ভোটার তালিকা যাতে আরও স্বচ্ছ, নির্ভুল ও নির্ভরযোগ্য হয়, সে লক্ষ্যেই কমিশনের এই নতুন উদ্যোগ। ভুল সংশোধনের সুযোগ, সময়সীমার সংশোধন এবং দ্রুত ডিজিটাইজেশন– সব মিলিয়ে আগামী ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত চূড়ান্ত ভোটার তালিকা আরও নির্ভুল ও পূর্ণাঙ্গ হবে বলে আশাবাদ কমিশনের।








কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন