সমকালীন প্রতিবেদন : সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে মঙ্গলবার কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে ইতিহাস গড়লেন বিহারের প্রতিশ্রুতিবান ব্যাটার বৈভব সূর্যবংশী। মাত্র ১৪ বছর বয়সে এই প্রতিযোগিতায় সেঞ্চুরি করে ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সর্বকনিষ্ঠ সেঞ্চুরিয়ানের নজির গড়লেন তিনি। মহারাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ৫৭ বলে তিন অঙ্কে পৌঁছে শেষ পর্যন্ত ৬১ বলে ১০৮ রানে অপরাজিত থেকে ইনিংস শেষ করেন বৈভব, যেখানে ছিল ৭টি ছক্কা এবং ৭টি চার। তাঁর দুরন্ত ব্যাটিংয়ে বিহার ২০ ওভারে ৩ উইকেটে তোলে ১৭৬ রান।
টুর্নামেন্ট শুরুর পর থেকে বৈভবকে নিয়ে উত্তেজনা থাকলেও ব্যাটে ধারাবাহিকতা পাচ্ছিলেন না। তবে মঙ্গলবার ওপেন করতে নেমেই আগ্রাসী ব্যাটিং শুরু করেন তিনি। প্রথম দিকে দলের স্কোর ৬ ওভারে ছিল ২ উইকেটে মাত্র ৩১ রান। পরপর উইকেট পড়ে চাপে পড়েছিল বিহার।
এমন পরিস্থিতিতে আকাশ রাজকে সঙ্গে নিয়ে ৭০ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়ে ইনিংসকে স্থিতিশীল করেন বৈভব। ধীরগতির বাউন্সহীন পিচে স্পিনার বিকি ওসওয়াল ও জলজ সাক্সেনাকে যথেষ্ট সম্মান দিয়ে খেলে ইনিংস গড়ে তোলেন। অর্ধশতরান পার করার পর গতি বাড়িয়ে বাউন্ডারি-বৃষ্টি ঝরিয়ে দলকে লড়াইয়ের রান এনে দেন তিনি।
বিহারের ইনিংসে বৈভব একাই দলীয় মোট রানের অর্ধেকেরও বেশি সংগ্রহ করেন। তাঁর সঙ্গে অপরাজিত থাকেন আয়ুষ লোহারুকা, যিনি ১৭ বলে ২৫ রান করেন। ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া বৈভবের ইনিংসটি বিহারের এই তরুণ প্রতিভার ক্রিকেট–বোধ ও পরিণতিকে সামনে এনেছে।
অনূর্ধ্ব-১৯ স্তরেও বৈভবের উত্থান সমান ভাবে চমকপ্রদ। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ৭৮ বলে সেঞ্চুরি—দেশের দ্রুততম অনূর্ধ্ব-১৯ টেস্ট শতক—তাঁকে জাতীয় নজরে আনে। যুব এশিয়া কাপে দুবাইয়ে মাত্র ৩২ বলে সেঞ্চুরি করে ক্রিকেট-বিশ্বকে তাক লাগান তিনি। সেই টুর্নামেন্টে ২৩৯ রান, প্রায় ৬০ গড় ও ২৪৩ স্ট্রাইক রেট—সবই তাঁর আগ্রাসী অথচ মাথা ঠান্ডা রেখে খেলার পরিচয় দেয়।
মাত্র ১২ বছর বয়সে রঞ্জি ট্রফিতে অভিষেক ঘটানোর পর থেকেই বৈভব সূর্যবংশীকে ভবিষ্যতের তারকা হিসেবে দেখা হচ্ছে। ইডেন গার্ডেন্সে তাঁর এই পরিণত সেঞ্চুরি সেই বিশ্বাসকেই আরও শক্ত করল। ধারাবাহিক পারফরম্যান্স বজায় রাখতে পারলে ভারতীয় ক্রিকেটের বড় মঞ্চে তাঁকে দেখা যাওয়াও সময়ের অপেক্ষা মাত্র—এমনটাই মত ক্রিকেটবিশেষজ্ঞদের।








কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন