সমকালীন প্রতিবেদন : গত কয়েক মরসুম ধরে প্রায় একই দল দেখতে দেখতে একাংশ কলকাতা নাইট রাইডার্স সমর্থকের মধ্যে একঘেয়েমি তৈরি হয়েছিল। মাঝেমধ্যে দু’-একটি বদল হলেও মূল কাঠামোতে বড় পরিবর্তন দেখা যায়নি। তবে এ বার সেই ছবি বদলাতে মরিয়া কেকেআর। আইপিএল নিলামে একাধিক চমক দিয়ে কার্যত দল ঢেলে সাজিয়েছে ফ্র্যাঞ্চাইজি। তার প্রভাব পড়বে মাঠেও। আগামী আইপিএলে কেকেআরের প্রথম একাদশে দেখা যেতে পারে বেশ কয়েকটি নতুন মুখ।
আগামী মরসুমে ২৬ মার্চ থেকে আইপিএল শুরু হওয়ার সম্ভাবনা। ২০২৪ সালে চ্যাম্পিয়ন হলেও ২০২৫ সালে হতাশাজনক পারফরম্যান্সের কারণে বড় সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয় কেকেআর। নিলামের আগে অর্ধেকের বেশি ক্রিকেটারকে ছেড়ে দেয় তারা। নতুন কোচ অভিষেক নায়ারের তত্ত্বাবধানে নিলামে শূন্যস্থান ভরাট করেছে দল। পরিকল্পনা স্পষ্ট– অলরাউন্ডার নির্ভর শক্তিশালী একাদশ। সম্ভাব্য দলে ছ’জন অলরাউন্ডার থাকায় ব্যাটিং ও বোলিং– দুই বিভাগেই ভারসাম্য বজায় রাখতে চাইছে কেকেআর।
ওপেনিংয়ে দেখা যেতে পারে সুনীল নারিন ও অজিঙ্কা রাহানেকে। গত মরসুমে নারিনকে কখনও নীচের দিকে খেলানো হলেও পাওয়ার প্লে কাজে লাগাতে ওপেনিংই তাঁর আদর্শ জায়গা। পাশাপাশি স্পিন আক্রমণের নেতৃত্বও দেবেন তিনি। অন্য প্রান্তে থাকবেন রাহানে, যাঁকে পরবর্তী মরসুমের অধিনায়ক হিসেবেই দেখছেন অনেকে। গত বছর কেকেআরের হয়ে সর্বাধিক রান করেছিলেন তিনি এবং ঘরোয়া ক্রিকেটেও ছন্দে রয়েছেন।
তিন নম্বরে দলের সবচেয়ে দামি সংযোজন ক্যামেরন গ্রিন। ২৫ কোটি ২০ লক্ষ টাকায় কেনা এই অস্ট্রেলীয় অলরাউন্ডারকে যতটা সম্ভব বেশি বল খেলানোর পরিকল্পনা রয়েছে। চার নম্বরে থাকবেন তরুণ অঙ্গকৃশ রঘুবংশী, যাঁকে ভবিষ্যতের তারকা হিসেবে দেখছে দল। পাঁচ নম্বরে রিঙ্কু সিং। আগের মরসুমে কম বল খেলার সুযোগ পাওয়ায় তাঁর প্রভাব দেখা যায়নি। এ বার তাঁকে মূল ফিনিশারের ভূমিকায় বেশি দায়িত্ব দিতে চায় কেকেআর।
মাঝের ও নীচের দিকে রমনদীপ সিং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারেন। আন্দ্রে রাসেল না থাকায় রিঙ্কুর সঙ্গে ফিনিশারের দায়িত্ব সামলাতে হবে তাঁকে। উইকেটরক্ষক হিসেবে দেখা যেতে পারে তেজস্বী সিংকে, যাঁকে ৩ কোটি টাকায় কেনা হয়েছে। ঘরোয়া ক্রিকেটে তাঁর আগ্রাসী ব্যাটিং কেকেআরের মাঝের ওভারগুলোতে গতি আনতে পারে।
বোলিং বিভাগে স্পিন আক্রমণে থাকবেন অনুকূল রায়, বরুণ চক্রবর্তী ও নারিন। পেস আক্রমণে ভরসা হর্ষিত রানা ও মুস্তাফিজ়ুর রহমান। বাংলাদেশের এই বাঁহাতি পেসারকে ৯ কোটি ২০ লক্ষ টাকায় নেওয়া হয়েছে অভিজ্ঞতার জন্য। ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসেবে বড় অস্ত্র হতে পারেন মাথিশা পাথিরানা। বল করার সময় রঘুবংশীর বদলে তাঁকে নামিয়ে অতিরিক্ত গতি ও ধার আনতে পারে কেকেআর। সব মিলিয়ে, নতুন মুখ ও নতুন কম্বিনেশনে চমক দিতে প্রস্তুত কলকাতা নাইট রাইডার্স। মাঠে সেই বদলের ছাপ কতটা পড়ে, সেটাই এখন দেখার।








কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন