Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

শুক্রবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৫

দুবাই এয়ারশোতে ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে তেজস, আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ

 

Tejas-in-accident

সমকালীন প্রতিবেদন : দুবাই এয়ারশো–২৫ চলাকালীন ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়ল ভারতের দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি লাইট কমব্যাট এয়ারক্র্যাফ্ট ‘তেজস’। শুক্রবার স্থানীয় সময় দুপুর ২টো ১০ মিনিটের কিছু পরে আল-মাকতুম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আকাশে আচমকাই দেখা যায় কালো ধোঁয়ার বিশাল স্তম্ভ। কিছুক্ষণের মধ্যেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে দর্শক ও অংশগ্রহণকারী দেশগুলির প্রতিনিধিদের মধ্যে।

প্রদর্শনীর অংশ হিসেবে তেজস তখন কসরত দেখাচ্ছিল। হঠাৎই বিমানটি গতি হারিয়ে নিচের দিকে নামতে শুরু করে, এমনই দেখা যাচ্ছে ঘটনাস্থল থেকে ছড়িয়ে পড়া একটি ভাইরাল ভিডিয়োতে। কয়েক সেকেন্ড স্থির হয়ে থাকার পর তেজস প্রবল বেগে ভূমির দিকে ধেয়ে নামে এবং মাটিতে আছড়ে পড়তেই ঘটে প্রচণ্ড বিস্ফোরণ। মুহূর্তে আগুনে ঢেকে যায় পুরো বিমানটি।

এই দুর্ঘটনায় পাইলট ইজেক্ট করতে পেরেছেন কি না, তা এখনও নিশ্চিত নয়। ভারতীয় বায়ুসেনাও এখন পর্যন্ত কোনও আনুষ্ঠানিক তথ্য দেয়নি। শুধুমাত্র একটি বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, “দুবাই এয়ার শো–২৫-এ আইএএফ-এর একটি তেজস যুদ্ধবিমান ভেঙে পড়েছে। বিস্তারিত তদন্ত চলছে।”

এশিয়া এবং আফ্রিকার বেশ কয়েকটি দেশ তেজসের প্রতি আগ্রহ দেখিয়েছে। ভারত সরকার সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে নির্মিত এই ৪.৫-জেনারেশনের বহু-কৌশলী যুদ্ধবিমান আন্তর্জাতিক বাজারে তুলে ধরার চেষ্টা করছে। কয়েকটি দেশের সঙ্গে বিক্রিবিষয়ক আলোচনা চলছেও। ঠিক সেই সময়ই আন্তর্জাতিক মঞ্চে এই দুর্ঘটনা বিশেষজ্ঞদের মতে বড় ধাক্কা।

তেজস ইতিমধ্যেই আকাশ প্রতিরক্ষা, নিকট-সংঘর্ষ এবং আক্রমণাত্মক অভিযানে দক্ষতার প্রমাণ দিয়েছে। প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ২২০০ কিলোমিটার গতিতে উড়তে সক্ষম এই বিমান ১৮৫০ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করতে পারে। রয়েছে ৭টি হার্ডপয়েন্ট, গাইডেড বোমা, বিভিআর ক্ষেপণাস্ত্র, ব্রহ্মস-এনজি বহনের ক্ষমতা, ইজ়রায়েলি AESA রেডার ও ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার সিস্টেম।

এর অন্যতম উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য মার্টিন-বেকার নির্মিত ‘জিরো-জিরো’ ইজেকশন সিট– যা শূন্য উচ্চতা ও শূন্য গতিতেও পাইলটকে নিরাপদে বের করে আনতে পারে। তবে দুবাইয়ের দুর্ঘটনায় এই সিস্টেম সক্রিয় হয়েছিল কি না, তা জানা যায়নি। ২০২৪ সালের মার্চ মাসে রাজস্থানের জয়সালমেরে প্রথম দুর্ঘটনার মুখে পড়েছিল তেজস। তার আগেঅর্থাৎ ২০০১ সালের প্রথম পরীক্ষামূলক উড়ান থেকে তেজসের কোনও দুর্ঘটনা হয়নি। তাই দু’বছরে দুটি বিপর্যয় প্রকল্পটির ভবিষ্যৎ বিতর্কে ফেলেছে।

বিশ্বের অন্যতম বড় বিমান প্রদর্শনী দুবাই এয়ারশোতে যেখানে এমিরেটস এবং ফ্লাইদুবাইয়ের মতো সংস্থাগুলি ইতিমধ্যেই বহু হাজার কোটি ডলারের চুক্তির ঘোষণা করেছে, সেই মঞ্চেই ভারতীয় যুদ্ধবিমানের দুর্ঘটনা অনেক প্রশ্ন তুলেছে। তেজসের প্রযুক্তিগত সমস্যা, যান্ত্রিক ব্যর্থতা না কি কসরতের সময় ভুল আন্দাজ– সব দিকই এখন তদন্তের আওতায়।

ভারতীয় বায়ুসেনার চূড়ান্ত বিবৃতি প্রকাশের অপেক্ষায় এখন আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা মহল। কী কারণে তেজস ভেঙে পড়ল এবং পাইলটের কী অবস্থা– তার উত্তরই এখন সবার কাছে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।






কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন