Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

শুক্রবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৫

বাংলায় বিস্তীর্ণ এলাকায় ভূমিকম্প, কলকাতায় প্রবল আতঙ্ক

 

Earthquake-in-Kolkata

সমকালীন প্রতিবেদন : শুক্রবার সকালটা রীতিমতো আতঙ্কে কাটল কলকাতাবাসীর। ঘড়ির কাঁটা সকাল ১০টা ৮ মিনিট ছুঁতেই আচমকা কেঁপে উঠল গোটা শহর। কয়েক সেকেন্ডের জন্য নড়ে ওঠে ঘরের পাখা, দুলতে থাকে ঝুলে থাকা লাইট ও দেওয়ালে টাঙানো ছবি। বোতলের জলের তরঙ্গ দেখে নিশ্চিত হন অনেকেই— ভূমিকম্প হয়েছে।

দক্ষিণবঙ্গ থেকে উত্তরবঙ্গ—হুগলি, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, কোচবিহার, এমনকি কাকদ্বীপ পর্যন্ত অনেক জায়গায় অনুভূত হয়েছে কম্পন। আতঙ্কে বহুজন বাড়ি থেকে বেরিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে পড়েন। বহুতলের বাসিন্দারা দ্রুত সিঁড়ি দিয়ে নেমে আসেন খোলা জায়গায়। কলকাতার বিভিন্ন দপ্তরের সামনেও দেখা যায় কর্মীদের ভিড়। তবে এখনও পর্যন্ত কোথাও ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।

আমেরিকার জিওলজিক্যাল সার্ভে জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৫.৫। অন্যদিকে ভারতের ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজি জানিয়েছে— মাত্রা ছিল ৫.৭। দুটি সংস্থার হিসেব মিলছে না ঠিকই, কিন্তু উভয়ের রিপোর্টেই উল্লেখ রয়েছে— এ দিনের কম্পনের উৎসস্থল ছিল বাংলাদেশে।

রিপোর্ট অনুযায়ী, ভূমিকম্পের উৎসস্থল ছিল বাংলাদেশের নরসিংদী থেকে পশ্চিম-দক্ষিণ-পশ্চিমে প্রায় ১৪ কিলোমিটার দূরে, মাটি থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার গভীরে। কম গভীরের ভূমিকম্প সাধারণত বেশি তীব্র ভাবে অনুভূত হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, তাই কলকাতা এবং দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে কম্পন এতটা স্পষ্টভাবে টের পাওয়া গেছে।

বাংলাদেশে—ঢাকা, বরিশাল সহ বহু অঞ্চলে কম্পন টের পেয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রথম আলো সহ বিভিন্ন বাংলা সংবাদমাধ্যম জানিয়েছেন, আতঙ্কে অনেকেই বাড়ি ছেড়ে রাস্তায় নেমে আসেন। বাংলাদেশের সময় অনুযায়ী কম্পন অনুভূত হয় সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে।

কলকাতার অনেক বাসিন্দাই জানিয়েছে, শুক্রবারের কম্পন প্রায় ২৯ সেকেন্ড ধরে অনুভূত হয়েছে— যা এই অঞ্চলের পক্ষে বিরল ঘটনা। মাসদুয়েক আগেও অসমে ভূমিকম্পের জেরে উত্তরবঙ্গে কম্পন হয়েছিল, তবে তা কলকাতায় এতটা তীব্র ছিল না। সেপ্টেম্বরে ওদালগুরিতে হওয়া ৫.৮ মাত্রার সেই কম্পনে দক্ষিণবঙ্গে সামান্য দুলুনি টের পাওয়া গিয়েছিল মাত্র।

কম্পনের তীব্রতা ও ভয়ের মুহূর্ত সত্ত্বেও এ দিন বাংলার কোথাও ক্ষয়ক্ষতির খবর নেই। বিদ্যুৎ, রাস্তা বা যোগাযোগ ব্যবস্থার ওপরও কোনও বড় প্রভাব পড়েনি। বাংলাদেশের দিকেও বড় কোনও ক্ষতি হয়েছে কি না— সরকারি ভাবে তা এখনো জানা যায়নি।

ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলের মধ্যে কলকাতা পড়ে না। এ কারণে এ ধরনের তীব্র কম্পনে মানুষের মধ্যে দুশ্চিন্তা ও আতঙ্ক স্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ দিনের ভূমিকম্পের মূল কারণ— উৎসস্থল কলকাতার খুব কাছে থাকা এবং কম গভীরতা।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন