Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

বৃহস্পতিবার, ৬ নভেম্বর, ২০২৫

মধ্যশিক্ষা পর্ষদের নতুন ঘোষণায় স্কুলের প্রার্থনা সঙ্গীতে ‘বাংলার মাটি, বাংলার জল’ গাওয়ার নির্দেশ

  

School-prayer-music

সমকালীন প্রতিবেদন : ‌রাজ্যের সমস্ত সরকারি ও সরকার-পোষিত স্কুলে প্রার্থনা সঙ্গীত হিসেবে বাধ্যতামূলক হল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অমর সৃষ্টি ‘বাংলার মাটি, বাংলার জল’। বৃহস্পতিবার মধ্যশিক্ষা পর্ষদের পক্ষ থেকে প্রকাশিত এক নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, প্রতিদিনের সকালের প্রার্থনায় এই রাজ্যসঙ্গীত গাওয়া হবে সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে।

২০২৩ সালে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যসঙ্গীত হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিল রবীন্দ্রনাথের এই গানটি। বিধানসভায় পাশ হয় সংশ্লিষ্ট প্রস্তাবও। রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়েছিল, গানটির নির্দিষ্ট অংশই রাজ্যসঙ্গীত হিসেবে ব্যবহৃত হবে—

“বাংলার মাটি, বাংলার জল, বাংলার বায়ু, বাংলার ফল—

পুণ্য হউক, পুণ্য হউক, পুণ্য হউক হে ভগবান।

বাঙালির প্রাণ, বাঙালির মন, বাঙালির ঘরে যত ভাই বোন—

এক হউক, এক হউক, এক হউক হে ভগবান।”

মুখ্যসচিবের দফতর থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতেই জানানো হয়েছিল, রাজ্যসঙ্গীত সম্পূর্ণ গাওয়া হবে এক মিনিটের মধ্যে এবং সেইভাবেই সরকারি অনুষ্ঠানে বা প্রার্থনাসভায় পরিবেশন করতে হবে।

তবে রাজ্যসঙ্গীত ঘোষণার সময় থেকেই গানটিকে ঘিরে তৈরি হয়েছিল বিতর্ক। প্রকাশ্য জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী গানের অংশবিশেষে সামান্য পরিবর্তন এনে গেয়েছিলেন— “বাঙালির পণ” শব্দাংশের বদলে বলেছিলেন “বাংলার পণ”। সেই সময় থেকেই বিরোধীরা অভিযোগ তোলেন, গানটি বিকৃত করার চেষ্টা চলছে। তবু রাজ্যসঙ্গীত হিসেবে এই রবীন্দ্রসৃষ্ট গানটিই শেষ পর্যন্ত সরকারি স্বীকৃতি পায়।

এ বার সেই রাজ্যসঙ্গীতকেই স্কুলের প্রার্থনাসঙ্গীত হিসেবে বাধ্যতামূলক করল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। পর্ষদের সচিব সুব্রত ঘোষ জানান, “নতুন শিক্ষাবর্ষ থেকেই প্রতিদিনের প্রার্থনাসভায় ‘বাংলার মাটি, বাংলার জল’ গাওয়া বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। এ নিয়ে সব স্কুলে নোটিস পাঠানো হয়েছে।”

সরকারি এই পদক্ষেপকে ঘিরে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে নতুন রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক বিতর্ক। বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে বাঙালি আত্মপরিচয়ের আবেগকে জাগিয়ে তুলতে চায় রাজ্য সরকার। অন্যদিকে, বহু শিক্ষক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বের মতে, বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী চেতনায় ভরা এই গান স্কুলের ছেলেমেয়েদের মধ্যে দেশপ্রেম ও মাটির প্রতি ভালোবাসা জাগিয়ে তুলবে– সেটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।

উল্লেখ্য, ভারতের বহু রাজ্যেই নিজস্ব রাজ্যসঙ্গীত রয়েছে। ১৯৩৬ সালে প্রথম রাজ্যসঙ্গীত হিসেবে গৃহীত হয় ওড়িশার ‘বন্দে উৎকল জননী’। এরপর আন্ধ্রপ্রদেশে ‘মা তেলুগু থালিকি’ (১৯৫৬) রাজ্যসঙ্গীত হিসেবে স্বীকৃতি পায়। বর্তমানে অসম, গুজরাত, মধ্যপ্রদেশ, তেলঙ্গানা, ছত্তিসগড়, উত্তরাখণ্ড ও বিহারসহ একাধিক রাজ্যের নিজস্ব সঙ্গীত রয়েছে। বহু দশক পর পশ্চিমবঙ্গও সেই তালিকায় যুক্ত হয়েছে।



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন