Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

শনিবার, ১ নভেম্বর, ২০২৫

এসআইআর এর বিরুদ্ধে সরব মমতা ঠাকুর, ৫ নভেম্বর থেকে ঠাকুরনগরে আমরণ অনশন

 

Protest-against-SIR

সমকালীন প্রতিবেদন : নাগরিকত্ব যাচাইয়ের প্রক্রিয়া ‌এসআইআর-এর বিরুদ্ধে সরব হলেন সারা ভারত মতুয়া মহাসংঘ। শনিবার ঠাকুরনগরে সাংবাদিক সম্মেলন করে সংঘের সংঘাধিপতি ও তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মমতা ঠাকুর ঘোষণা করেন, আগামী ৫ নভেম্বর থেকে ঠাকুরবাড়িতে আমরণ অনশন শুরু করবেন তিনি ও তাঁর সমর্থকেরা।

মমতা ঠাকুরের আশঙ্কা, “এসআইআর চালু হলে রাজ্যের প্রায় দুই কোটি মানুষের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ যেতে পারে, যার মধ্যে প্রায় ৯৫ শতাংশই মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ।” তাঁর অভিযোগ, “এসআইআর সাধারণ মানুষের নাগরিক অধিকার কেড়ে নেওয়ার আরেকটি ফাঁদ। সিএএ-র নামে অনেকে মানুষের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছে, যা এখন রাজনৈতিকভাবে ‘ইনকামের রাস্তা’ হয়ে উঠেছে।”

তিনি জানান, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে এসআইআর প্রক্রিয়া ঘোষণার পর থেকেই উদ্বাস্তু ও মতুয়া সমাজের বহু মানুষ সিএএ ফর্ম পূরণের জন্য ভিড় জমাচ্ছেন। ঠাকুরনগর ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় প্রতিদিন দেখা যাচ্ছে দীর্ঘ সারি। এই পরিস্থিতিতে নাগরিকত্ব নিয়ে অস্পষ্টতা ও আতঙ্ক তৈরি হচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি।

তাঁর বক্তব্য, “২০০২ সালের ভোটার তালিকার সঙ্গে সাম্প্রতিক লিস্ট মেলালে দেখা যায়, তৎকালীন তালিকায় বহু মতুয়ার নামই ছিল না। এবার এসআইআর চালু হলে তাঁদের বড় অংশ আবার বাদ পড়বেন।” তিনি আরও বলেন, “যে ১১টি নথি প্রমাণ হিসেবে চাওয়া হচ্ছে, তা অধিকাংশ মতুয়া পরিবারের কাছেই নেই। তাহলে তাঁরা কীভাবে নিজেদের নাগরিক প্রমাণ করবেন?”

এই পরিস্থিতিতে, কোনও মতুয়ার নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হলে তা মানা হবে না বলে স্পষ্ট জানিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, “আমরা আমাদের সমাজের একটিও নাম বাদ দিতে দেব না। এসআইআর-এর মতো প্রক্রিয়া মতুয়া সমাজ মেনে নেবে না।”

এর পাশাপাশি, শনিবারই মমতাবালা ঠাকুর সংশোধিত ‘অভিবাসন ও বিদেশি নাগরিক আইন’-এর বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেছেন। তাঁর দাবি, এই আইন সংবিধান-বিরোধী এবং উদ্বাস্তু সমাজের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।

নতুন আইনে বলা হয়েছে, কোনও বিদেশিকে ‘বিপজ্জনক’ ঘোষণা করলে তাঁর প্রবেশ আটকাতে পারবে অভিবাসন দপ্তর এবং সেই বিদেশিকে ফেরানোর দায় ভারতের থাকবে না। পাশাপাশি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও বাড়ির মালিকদের বিদেশিদের সংস্পর্শ সংক্রান্ত তথ্য নিয়মিত প্রশাসনকে জানাতে হবে।

মমতা ঠাকুরের বক্তব্য, “এই আইন আসলে উদ্বাস্তু ও মতুয়া সমাজকে আরও বিপদের মুখে ঠেলে দেবে। নাগরিকত্ব ও মানবাধিকারের প্রশ্নে এটি স্পষ্টতই সংবিধানবিরোধী।” রাজনৈতিক মহলের মতে, আগামী ৫ নভেম্বর থেকে মমতাবালা ঠাকুরের ঘোষিত অনশন আন্দোলন রাজ্যের নাগরিকত্ব রাজনীতিতে নতুন অধ্যায় খুলে দিতে পারে।‌



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন