Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৫

২০১৬–র নিয়োগ দুর্নীতি: আদালতের নির্দেশে অযোগ্যদের পূর্ণ তালিকা প্রকাশ করল এসএসসি, প্রকাশ্যে ১,৮০৬ নাম

 

Full-list-of-ineligibles

সমকালীন প্রতিবেদন : ২০১৬ সালের শিক্ষক নিয়োগ মামলায় নতুন মোড়। কলকাতা হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর অবশেষে অযোগ্য প্রার্থীদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করল স্কুল সার্ভিস কমিশন। বৃহস্পতিবার দুপুরে কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তালিকায় রয়েছে মোট ১,৮০৬ জন প্রার্থীর নাম। শুধু নাম বা রোল নম্বর নয়—প্রতিটি প্রার্থীর বিষয়, জন্মতারিখ, অভিভাবকের নাম-সহ বিস্তৃত তথ্যও তুলে ধরা হয়েছে।

আগে এসএসসি যে সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রকাশ করেছিল, তা নিয়ে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়‌। কারণ সেখানে প্রার্থীদের পরিচয় সম্পূর্ণ স্পষ্ট ছিল না। শীর্ষ আদালতের কড়া নির্দেশ ছিল, অযোগ্য প্রার্থীরা কোনভাবেই নতুন পরীক্ষায় বসতে না পারে। কিন্তু অভিযোগ, নতুন পরীক্ষায়ও বহু অযোগ্য প্রার্থী অংশ নেয়। এর পরই আদালত জানায়, যোগ্য–অযোগ্য আলাদা করে চিহ্নিত করতে ব্যর্থ হওয়ায় গোটা প্যানেল বাতিল করা ছাড়া তাদের উপায় ছিল না।

ফলে ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি একযোগে বাতিল হয়, যা নিয়ে রাজ্য জুড়ে প্রবল চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছিল। আজ প্রকাশিত তালিকা নিয়ে এসএসসি আরও জানায়, নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশের অযোগ্য প্রার্থীদের সম্পূর্ণ তথ্য আদালতের নির্দেশ মেনেই প্রকাশ করা হয়েছে। এর আগে সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট জানিয়েছিল, পূর্ণাঙ্গ তালিকায় ঠিকানা ও অভিভাবকের পরিচয় পর্যন্ত উল্লেখ থাকা বাধ্যতামূলক।

এর মধ্যেই নতুন নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি অমৃতা সিনহা ২০২৫ সালের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার সমস্ত ওএমআর শিট ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে ওয়েবসাইটে আপলোড করতে বলেছেন। পাশাপাশি ২০১৬ সালের প্যানেলের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর যাঁরা নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশে নিয়োগপত্র পেয়েছিলেন, তাঁদের সম্পূর্ণ তালিকাও তলব করা হয়েছে।

এ দিনই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানান, আদালতের সমস্ত নির্দেশ মান্য করেই কমিশন কাজ করছে। তাঁর বক্তব্য, “বিরোধীরা চাইবে নিয়োগ না হোক– এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সরকার স্বচ্ছতার সঙ্গেই নিয়োগ প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছে। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নিয়োগ শেষ করার যে নির্দেশ আছে, তা মেনেই এগোচ্ছে এসএসসি।”

অন্যদিকে, নতুন পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছেন অনেক চাকরিপ্রার্থী। ফ্রেশারদের সঙ্গে অভিজ্ঞ প্রার্থীদের একত্রে পরীক্ষা নেওয়া এবং অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে অতিরিক্ত ১০ নম্বর দেওয়ার নিয়ম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। তাঁদের অভিযোগ, এতে নতুন পরীক্ষার্থীদের অনেকেই অন্যায়ভাবে পিছিয়ে পড়েছেন। সব মিলিয়ে, পুরনো দুর্নীতি, বাতিল প্যানেল, নতুন পরীক্ষা পদ্ধতি ও আদালতের ধারাবাহিক পর্যবেক্ষণে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া আবারও চরম অস্থিরতার মুখে। অযোগ্যদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশের পর নজর এখন ২০২৫ সালের নিয়োগ পরীক্ষা ও আদালতের পরবর্তী নির্দেশনায়।‌




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন