সমকালীন প্রতিবেদন : দক্ষিণবঙ্গ যখন শীতের অপেক্ষায়, ঠিক সেই সময়ই বঙ্গোপসাগরের বুকে ঘনীভূত হচ্ছে নতুন আবহাওয়া-পরিস্থিতি। মৌসম ভবন সূত্রে খবর, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরের উপর তৈরি হওয়া নিম্নচাপ অদূর ভবিষ্যতেই ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। সবকিছু অনুকূলে থাকলে বুধবারের মধ্যেই এই সিস্টেমটি ঘূর্ণিঝড় ‘সেনিয়ার’-এর রূপ নেবে। ‘সেনিয়ার’ শব্দের অর্থ ‘সিংহ’, নামেই যেন শক্তির ইঙ্গিত।
শনিবার যে নিম্নচাপটি তৈরি হয়েছিল, তা আরও ঘনিভূত হয়ে মালাক্কা প্রণালীর কাছাকাছি আন্দামান সাগরে স্পষ্ট নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে সিস্টেমটি পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম অভিমুখে অগ্রসর হচ্ছে। আবহবিদদের অনুমান, সোমবারের মধ্যেই তা গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে এবং পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় শক্তি সঞ্চয় করে ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিতে পারে।
তবে এর সুনির্দিষ্ট গতিপথ এখনও পরিষ্কার নয়। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় কোন দিকে যাবে, তা নিশ্চিতভাবে বলতে আরও অন্তত এক-দু’দিন সময় লাগবে। গতিবেগ সম্পর্কেও এখনই নিশ্চিত তথ্য দেওয়া সম্ভব নয়। সমুদ্রের উপর অবস্থানকালে সিস্টেমটি আরও শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের। মঙ্গলবার বা বুধবার নাগাদ এর সম্ভাব্য পথ ও গতির বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা মিলবে।
সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গে নভেম্বরের শেষ সপ্তাহ এবং ডিসেম্বরের প্রথম দিকটিতে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে রাতের তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে, ফলে শীতের ঢোকা আপাতত বিলম্বিত হবে। আবহাওয়াবিদদের অনুমান, ৪–৫ ডিসেম্বরের আগে দক্ষিণবঙ্গে জোরালো শীত আসার সম্ভাবনা কম।
এদিকে আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আগামী পাঁচদিন উত্তরবঙ্গের পাহাড় এবং তরাই–ডুয়ার্সের জেলাগুলিতে রাতের তাপমাত্রায় বিশেষ পরিবর্তন হবে না। দক্ষিণবঙ্গেও দিন-রাতের তাপমাত্রায় তেমন ওঠানামা নেই। আপাতত পুরো রাজ্যেই আবহাওয়া শুষ্ক থাকবে।
পরবর্তী ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গের কোনও জেলায় বৃষ্টির পূর্বাভাস নেই। কলকাতা, দুই ২৪ পরগনা, হুগলি, দুই মেদিনীপুর, হাওড়া, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বর্ধমান, বীরভূম ও মুর্শিদাবাদ– সব জেলাতেই থাকবে শুষ্ক আবহাওয়া। উত্তরবঙ্গে দার্জিলিঙসহ পাহাড়ি এলাকায় হালকা বৃষ্টি হলেও সোমবার থেকে শনিবার পর্যন্ত উত্তরবঙ্গের সামগ্রিক আবহাওয়া থাকবে শুষ্ক।
সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের চোখ দক্ষিণবঙ্গে নয়– এখনই রাজ্যে বিশেষ প্রভাব না পড়লেও তার আগাম ছায়া শীতের আগমনকে আরও কিছুটা পিছিয়ে দেবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।








কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন