সমকালীন প্রতিবেদন : দলীয় নির্দেশের ৭২ ঘণ্টা কেটে গেলেও পদত্যাগ করেননি বনগাঁ পুরসভার প্রধান গোপাল শেঠ। আর তাই নিয়েই তৃণমূলের অভ্যন্তরে শুরু হয়েছে বিতর্ক। সোস্যাল মিডিয়াতেও কেউ কেউ এই ধরনের পোষ্ট করছেন। রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশে শনিবার গোপাল শেঠকে শোকজের চিঠি পাঠালেন বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার তৃণমূলের সভাপতি।
দলের জেলা নেতৃত্বের পক্ষ থেকে শুক্রবার চিঠি দিয়ে দলের নির্দেশ অন্যান্য করার কারণ জানতে চাওয়া হল গোপাল শেঠের কাছে। পাশাপাশি আগামী সাত দিনের সময় বেঁধে দিয়ে গোপালকে পদত্যাগ করতেও বলা হয়েছে। অন্যথায়, দল গোপাল শেঠের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বাধ্য থাকবে বলেও তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
২০২২ সালে পুরসভা নির্বাচনে প্রথমবার কাউন্সিলার হয়েছিলেন গোপাল শেঠ। আর প্রথমবারেই তিনি দল এবং কাউন্সিলরদের সর্বসম্মতিতে বনগাঁ পুরসভার প্রধান হয়েছিলেন। এরমধ্যে ইছামতী দিয়ে অনেক জল গড়িয়েছে। গত লোকসভা নির্বাচনে বনগাঁ শহরের ফল খুব খারাপ হয়েছিল। ২২ টি ওয়ার্ডের সব কটিতেই হেরেছিল তৃনমূল।
একদিকে বনগাঁ শহরে তৃণমূলের গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব, অন্যদিকে চাহিদা অনুযায়ী নাকি নাগরিক পরিষেবায় ঘাটতি ছিল। যার ফলেই নাকি এমন ফলাফল বলে একাংশের মতামত। বিরোধীদের অভিযোগ, শহরের জল নিকাশি ব্যবস্থা বেহালের কারণে শহরের বেশ কিছু ওয়ার্ড জলমগ্ন হয়ে পড়েছিল। জমা জল নিয়ে দুর্ভোগের মুখে পড়তে হয় শহরের বাসিন্দাদের।
এর পাশাপাশি শহর জুড়ে বেআইনি অটো, টোটো চলাচলে যানজট নিয়েও ক্ষোভ রয়েছে সাধারণ বাসিন্দাদের মধ্যে। কয়েক মাস আগে ভোট কুশলী সংস্থার সমীক্ষার রিপোর্টেও সেটাই উঠে আসে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই বনগাঁ পুরসভার প্রধান বদলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দল। এমনই খবর দলের অভ্যন্তরে।
এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই নানা মহলে জল্পনা শুরু হয়। আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে পুরসভার প্রধানের পদ বদল নিয়ে। তাহলে সত্যিই কি বনগাঁ পুরসভার প্রধানের পদে বদল হচ্ছে? এই প্রশ্ন ঘুরতে থাকে বিভিন্ন মহলে। দলীয় নেতৃত্বের বক্তব্য অনুযায়ী, ৬ নভেম্বর গোপাল শেঠকে পুরপ্রধানের পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু জেলা নেতৃত্বের দাবি, দলীয় নির্দেশকে এখনও মান্যতা দেন নি গোপাল শেঠ।
এরপরেই শনিবার তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার কার্যালয়ে কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠক করেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি বিশ্বজিত দাস। এদিন দুপুর একটায় পার্টি অফিসের বৈঠকে তৃণমূলের ১৯ জন কাউন্সিলরদের মধ্যে হাজির থেকেছেন ১৭ জন। কিন্তু জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে সহমত না হওয়ায় বৈঠক শেষ হওয়ার আগেই বৈঠক ছেড়ে বেড়িয়ে যান দলের ৬ কাউন্সিলর।
বৈঠকের শেষে বিশ্বজিত দাস সাংবাদিকদের বলেন, দলের নির্দেশ অন্যান্য করার কারণ জানতে চেয়ে আজ নতুন করে চিঠি দেওয়া হয়েছে গোপাল শেঠকে। দলের রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করেই পদত্যাগের জন্য সাত দিনের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। ১৫ নভেম্বরের মধ্যে পদত্যাগ না করলে দল কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বাধ্য হবে। যদিও এই বিষয়টি দলের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে মন্তব্য করে এই বিষয়ে সংবাদমাধ্যমের কাছে কিছু বলতে চাননি গোপাল শেঠ।









কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন