Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২৫

ঠাকুরবাড়ির অনশন মঞ্চে কংগ্রেস নেতা অধির চৌধুরী, পাশে থাকার বার্তা

 

Adhir-Chowdhury

সমকালীন প্রতিবেদন : ‌ঠাকুরবাড়ির অনশন মঞ্চে বৃহস্পতিবার পৌঁছলেন কংগ্রেসের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি ও বর্ষীয়ান নেতা অধির রঞ্জন চৌধুরী। এসআইআর-এর প্রতিবাদ এবং নিঃশর্ত নাগরিকত্বের দাবিতে চলা মতুয়াদের এই আমরণ অনশনের নবম দিনে এসে আন্দোলনকারীদের পাশে থাকার বার্তা দিলেন তিনি। তাঁর উপস্থিতিতে আন্দোলনে নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ঠাকুরবাড়িতে পৌঁছন অধির। প্রবেশমুখে ডঙ্কা, কাঁসি বাজিয়ে মতুয়ারা তাঁকে স্বাগত জানান। হরিচাঁদ ও গুরুচাঁদ ঠাকুরের মন্দিরে প্রণাম সেরে তিনি সোজা চলে যান অনশন মঞ্চে, যেখানে রাজ্যসভার সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর সহ ২১ জন মতুয়া সদস্য টানা নয় দিন ধরে আমরণ অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন।

অধির চৌধুরী অনশনকারীদের পাশে বসে তাঁদের স্বাস্থ্যের খোঁজ নেন এবং আন্দোলনকে “ন্যায্য ও গণতান্ত্রিক দাবি” বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, “মতুয়ারা নাগরিকত্ব ও ভোটাধিকারের দাবিতে আন্দোলন করছেন–এটা তাঁদের ন্যায্য অধিকার। কিন্তু তাঁদের কথা কেউ শুনছে না। বিজেপি ও তৃণমূল নিজেদের মতো রাজনৈতিক যুক্তি দিচ্ছে, অথচ সাধারণ মতুয়ারা বিপদের মুখে রয়েছেন।”

তিনি আরও বলেন, “এই দাবিকে যদি কার্যকর করতে হয়, তাহলে দিল্লির যন্তরমন্তরে আন্দোলন করুন। আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে লোকসভার শীতকালীন অধিবেশন। এই সময় দিল্লিতে আন্দোলন করে কেন্দ্রকে বাধ্য করুন যাতে একটি অর্ডিন্যান্স আনা হয়, যাতে ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম না থাকলেও মতুয়াদের ভোটাধিকার সুনিশ্চিত হয়। আমি আপনাদের আন্দোলনের পাশে থাকব।”

উল্লেখ্য, গত ৫ নভেম্বর থেকে প্রয়াত বড়মা বীণাপাণি ঠাকুরের মন্দিরের সামনে আমরণ অনশন শুরু হয়েছে। শুরুতে উপস্থিত না থাকলেও পরে মধ্যপ্রদেশ সফর শেষে অনশনের অষ্টম দিনে যোগ দেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর। ইতিমধ্যেই কয়েকজন অনশনকারী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, তাঁদের চিকিৎসার জন্য ঠাকুরনগর গ্রামীণ হাসপাতালের মেডিকেল টিম নিয়মিত স্বাস্থ্যপরীক্ষা করছে। 

এই অনশন মঞ্চে ইতিমধ্যেই উপস্থিত হয়েছেন বাম নেতারা। তবে অনশনের নবম দিনেও তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার কোনও নেতৃত্ব ঠাকুরবাড়িতে যাননি। রাজনৈতিক মহলের মতে, মমতা ঠাকুর ও জেলা সভাপতি বিশ্বজিত দাসের মধ্যে চলা অন্তর্দ্বন্দ্বই এর কারণ। যদিও বিশ্বজিত দাস যুক্তি দিয়েছেন, “আমাদের কিছু জানানো হয়নি। এটা রাজনৈতিক নয়, ধর্মীয় বিষয়।” 

এদিন মমতা ঠাকুর বলেন, “অনশন মঞ্চে কে আসবে, কে আসবে না সেটা তাদের সিদ্ধান্ত। আমরা সবাইকে স্বাগত জানাই। যতদিন প্রাণ আছে, ততদিন আন্দোলন চলবে। এরপর কলকাতা ও দিল্লিতেও আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।” অধির চৌধুরীর আগমন নিঃসন্দেহে আন্দোলনকারীদের মনোবল বাড়িয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, তাঁর এই পদক্ষেপ শুধু মতুয়াদের পাশে থাকার বার্তাই নয়, বরং বঙ্গ রাজনীতিতে নতুন এক সমীকরণের ইঙ্গিতও বহন করছে।‌




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন