সমকালীন প্রতিবেদন : শরীরের পেশি গঠন, কোষের মেরামত, হরমোন ও এনজাইম উৎপাদন— সর্বত্রই প্রোটিনের ভূমিকা অপরিসীম। এমনকি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতেও এই উপাদানটির অবদান অস্বীকার করা যায় না। তাই প্রতিদিনের খাবারে পর্যাপ্ত প্রোটিন থাকা একান্ত জরুরি। কিন্তু প্রশ্ন হল— কতটা প্রোটিন শরীরের জন্য যথেষ্ট? আর তার বেশি পরিমাণে খেলে কী হতে পারে?
পুষ্টিবিদদের মতে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় গড়ে ২০ থেকে ৪০ গ্রাম প্রোটিন থাকা যথেষ্ট। এই সীমার বাইরে গেলে শরীর উপকারের বদলে উল্টে বিপদের মুখে পড়তে পারে। অতিরিক্ত প্রোটিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কি কি হতে পারে–
১. কিডনির উপর অতিরিক্ত চাপ :
অতিরিক্ত প্রোটিন ভাঙলে রক্তে নাইট্রোজেনের পরিমাণ বেড়ে যায়। এই অতিরিক্ত নাইট্রোজেন শরীর থেকে বের করতে কিডনিকে অতিরিক্ত কাজ করতে হয়। দীর্ঘদিন এমন অবস্থা চলতে থাকলে কিডনির কার্যক্ষমতা হ্রাস পেতে পারে বা স্থায়ী ক্ষতি হতে পারে।
২. ডিহাইড্রেশনের আশঙ্কা :
অতিরিক্ত নাইট্রোজেন দূর করতে গিয়ে শরীর প্রচুর পরিমাণে জল হারায়। যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে জলপান না করা হয়, তবে ডিহাইড্রেশনের ঝুঁকি বাড়ে। গরম আবহাওয়ায় এই সমস্যা আরও তীব্র হতে পারে।
৩. হজমে সমস্যা ও কোষ্ঠকাঠিন্য :
উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাবারে সাধারণত ফাইবারের পরিমাণ কম থাকে। ফাইবারের ঘাটতির কারণে হজমের গতি ধীর হয়। ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য, গ্যাস, পেট ফাঁপা ও বদহজমের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৪. ওজন বৃদ্ধির সম্ভাবনা :
প্রয়োজনের তুলনায় বেশি প্রোটিন শরীরে চর্বি হিসেবে জমা হতে শুরু করে। বিশেষ করে লাল মাংস বা বেশি ফ্যাটযুক্ত দুগ্ধজাত প্রোটিন বেশি খেলে ক্যালোরি গ্রহণের মাত্রা বাড়ে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ওজনও বাড়তে থাকে।
৫. হৃদরোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি :
প্রোটিনের উৎস যদি হয় ঘন ঘন খাওয়া রেড মিট বা উচ্চ ফ্যাটযুক্ত খাবার, তবে শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। এর ফলে দীর্ঘমেয়াদে হৃদরোগের আশঙ্কা বাড়ে।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, শরীরের প্রয়োজন অনুযায়ী পরিমিত প্রোটিন গ্রহণ করাই সবচেয়ে নিরাপদ। ডিম, মাছ, ডাল, বাদাম ও লো-ফ্যাট দুগ্ধজাত খাবার— এই উৎসগুলো থেকে প্রোটিন পেলে শরীর যেমন শক্তিশালী হয়, তেমনই ভারসাম্যও বজায় থাকে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন