সমকালীন প্রতিবেদন : দীপাবলির আলোর উৎসবের আবহে এবার উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা থানা এলাকার হেলেঞ্চা সবুজ সংঘ তাদের ৩৭তম বর্ষের শ্যামা পুজো উদযাপন করছে এক অভিনব বার্তা নিয়ে। "সবুজে বাঁচি, প্লাস্টিকে না বলি" — এই স্লোগানকে সামনে রেখেই এ বছরের পুজোর মূল আকর্ষণ হয়ে উঠেছে পরিবেশ সচেতনতার বার্তা।
এই বছর মন্ডপটি নির্মিত হয়েছে কাল্পনিক প্রাচীন মন্দিরের আদলে, যার পুরো কাঠামোই তৈরি হয়েছে ফেলে দেওয়া প্লাস্টিক বর্জ্য দিয়ে। বোতল, ব্যাগ ও বিভিন্ন প্লাস্টিক সামগ্রীকে দক্ষ কারিগরদের মাধ্যমে পুনঃব্যবহার করে গড়ে তোলা হয়েছে এক অপূর্ব মন্ডপ। প্লাস্টিকের বর্জ্যকেও শিল্পের অংশ করে তুলেছে এই আয়োজন।
সংঘের সম্পাদক বলেন, “আমরা প্রতি বছর কিছু নতুন বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করি। এবার আমাদের মূল উদ্দেশ্য মানুষকে বোঝানো— ফেলে দেওয়া জিনিসও যদি সঠিকভাবে ব্যবহার করা যায়, তবে পরিবেশ বাঁচানো সম্ভব।” দেবী শ্যামার মূর্তিতেও ফুটে উঠেছে ঐতিহ্য ও আধুনিকতার সংমিশ্রণ।
পুজোর আগের দিন থেকেই মন্ডপে দর্শনার্থীদের ভিড় উপচে পড়ে। আশেপাশের এলাকা থেকে মানুষজন আসছেন শুধু মন্ডপের শিল্পকর্ম দেখার জন্যই। সন্ধ্যা নামতেই আলো, সঙ্গীত ও ধূপ-ধুনোর গন্ধে ভরে উঠছে গোটা হেলেঞ্চা এলাকা।
স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, “আগে শুধু পুজো দেখতে আসতাম, এখন এখানে একটা শিক্ষা নিয়েও ফিরি। আমাদের সন্তানরাও এখন প্লাস্টিকের ক্ষতি বোঝে।” বাগদা থানা পুলিশ প্রশাসন জানিয়েছে, পুজো উপলক্ষে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সিসিটিভি নজরদারি, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ও অগ্নিনির্বাপণ দলের উপস্থিতিও নিশ্চিত করা হয়েছে।
হেলেঞ্চা সবুজ সংঘের শ্যামা পুজো শুধু ধর্মীয় নয়, সামাজিক বার্তাতেও সমৃদ্ধ হয়ে উঠেছে। পরিবেশ রক্ষার এমন উদ্যোগই আগামী দিনের পুজোগুলির জন্য এক দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে বলে মত স্থানীয় বাসিন্দাদের। শুধু হেলেঞ্চা সবুজ সংঘই নয়, বাগদা থানা এলাকায় গত বেশ কয়েক বছর ধরে অনেকগুলি বড় বাজেটের পুজোর আয়োজন হয়ে আসছে। এবছরও তার ব্যতিক্রম হয় নি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন