Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

বুধবার, ৮ অক্টোবর, ২০২৫

রাজ্যে এসআইআর-সহ সমস্ত নির্বাচনী প্রস্তুতি শেষের নির্দেশ নির্বাচন কমিশনের

 

Election-Commission

সমকালীন প্রতিবেদন : ‌আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যে নির্বাচনী প্রস্তুতি নিয়ে কড়া অবস্থান নিল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা অর্থাৎ এসআইআর থেকে শুরু করে যাবতীয় প্রাথমিক প্রস্তুতির কাজ আগামী সাত দিনের মধ্যে, অর্থাৎ ১৫ অক্টোবরের মধ্যেই শেষ করার নির্দেশ দিল কমিশন। বুধবার রাজ্যের সব জেলার জেলাশাসকদের (ডিইও) সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে এই বার্তা দেন নির্বাচন কমিশনের উপ-নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ ভারতী।

আগেই কমিশনের পক্ষ থেকে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল যে খুব শিগগিরই রাজ্যে শুরু হতে পারে এসআইআর প্রক্রিয়া। বুধবারের বৈঠকে সেই ইঙ্গিত প্রায় নিশ্চিত করে কমিশন জানিয়ে দেয়, প্রস্তুতির ক্ষেত্রে কোনও গাফিলতি বা বিলম্ব বরদাস্ত করা হবে না। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কমিশনের তথ্যপ্রযুক্তি শাখার ডিরেক্টর জেনারেল সীমা খন্না, সচিব এসবি যোশী এবং উপ-সচিব অভিনব আগরওয়াল। তারা প্রতিটি জেলার প্রস্তুতির অগ্রগতি খতিয়ে দেখেন এবং কোথায় কী ঘাটতি রয়েছে তাও চিহ্নিত করেন।

কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী, বিজ্ঞপ্তি জারির পর চার থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে জেলাভিত্তিক এনুমারেশন ফর্ম ছাপানোর অন্তত ৩০ শতাংশ কাজ শেষ করতে হবে। প্রতিটি জেলাকে নিজ নিজ এলাকায় ফর্ম ছাপানোর জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। বিহারের মতো এক জায়গা থেকে ছাপিয়ে পাঠানোর বদলে, এ রাজ্যে প্রতিটি জেলায় আলাদা করে ফর্ম ছাপানোর নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।

দিল্লি থেকে প্রত্যেক ভোটার ফর্মের সফট কপি আলাদা করে পাঠানো হবে সংশ্লিষ্ট ইআরও–দের কাছে। সেগুলি পোর্টালে আপলোড হওয়ার পর ফর্ম ছাপানো হবে এবং তা বুথ লেভেল অফিসার অর্থাৎ বিএলওদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। এরপর তারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের হাতে ফর্ম পৌঁছে দেবেন। বর্তমানে রাজ্যে প্রায় ৭.৬৫ কোটি ভোটার রয়েছেন। তাঁদের জন্য দ্বিগুণ সংখ্যক ফর্ম ছাপানোর পরিকল্পনা রয়েছে। অর্থাৎ, প্রতিটি ভোটারের জন্য দুটি করে আবেদনপত্র থাকবে। একটি ভোটারের কাছে এবং অপরটি বিএলও-দের কাছে ফিরে আসবে।

বৈঠকে বিহারের অভিজ্ঞতার কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়ে কমিশনের পক্ষ থেকে সতর্ক করা হয়েছে, সেখানকার যেসব আধিকারিক দায়িত্ব পালনে গাফিলতি করেছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। একইভাবে, পশ্চিমবঙ্গেও যদি কোনও আধিকারিকের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ ওঠে, কমিশন কঠোর পদক্ষেপ নেবে বলে জানানো হয়েছে।

উত্তরবঙ্গের সাম্প্রতিক পরিস্থিতির কারণে বুধবারের বৈঠকে উত্তরবঙ্গের অধিকাংশ জেলার ডিইও উপস্থিত থাকতে পারেননি। তাঁরা বর্তমানে ত্রাণ ও পুনর্বাসনের কাজে ব্যস্ত। কমিশন সূত্রে খবর, চলতি মাসের শেষের দিকে উত্তরবঙ্গের জেলার জন্য আলাদা বৈঠক ডাকা হতে পারে। জ্ঞানেশ ভারতী বৈঠকে স্পষ্ট করে বলেন, “বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর আর দেরি চলবে না। সময়সীমার মধ্যেই প্রতিটি কাজ শেষ করতে হবে। এক্ষেত্রে সামান্য গাফিলতিও ভবিষ্যতে বড় আইনি জটিলতার কারণ হতে পারে।”‌

বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা অর্থাৎ এসআইআর নির্বাচন প্রস্তুতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। ভোটার তালিকা পর্যালোচনা ও সংশোধনের মাধ্যমে প্রকৃত ভোটারদের সঠিকভাবে অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষ্যেই এই সমীক্ষা। আসন্ন নির্বাচনের আগে এই পর্যায়টি সঠিকভাবে সম্পন্ন করা কমিশনের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই এবার কোনও গাফিলতির সুযোগ রাখতে চাইছে না তারা।



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন