Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২৫

বরুণের কেরিয়ারের মোড় ঘুরিয়ে দেয় আইপিএল

 

Career-of-Varun-Chakraborty

সমকালীন প্রতিবেদন : ক্রিকেটার বরুণ চক্রবর্তীর জীবন যেন সিনেমার গল্পকেও হার মানায়। পেশাদার ক্রিকেটার হওয়ার কথা কোনও দিন ভাবেননি তিনি। বরং এক সময় কর্পোরেট দুনিয়ায় চাকরি, গিটার শেখা, অভিনয় এবং স্বল্পদৈর্ঘ্যের সিনেমা পরিচালনার মতো নানা অভিজ্ঞতায় জীবনকে রঙিন করেছিলেন। আর সেখান থেকেই এক লাফে ভারতের জাতীয় দলে উঠে আসা – এক কথায় অসাধারণ যাত্রা।

কলেজের পাঠ চুকিয়ে প্রথমে একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি নেন বরুণ। মাসিক বেতন ছিল ১৪ হাজার টাকা। দেড় বছর পর সেই বেতন পৌঁছায় ১৮ হাজারে। কিন্তু চাকরির ঘেরাটোপে মন বসেনি বরুণের। সৃষ্টিশীলতা টানতে থাকে তাঁকে। চাকরি ছেড়ে গিটার শেখা শুরু করেন। কিছুদিনের মধ্যেই সেটাও ছেড়ে দেন।

এরপর অভিনয়জগতের হাতছানি। কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে যুক্ত হয়ে সিনেমার দুনিয়ায় পা রাখেন বরুণ। প্রথমে জুনিয়র আর্টিস্ট হিসেবে অভিনয়, পরে সহকারী পরিচালক এবং নিজস্ব কিছু স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবি নির্মাণ করেন। দিনপ্রতি আয় ছিল মাত্র ৬০০ টাকা। অর্থাৎ মাসিক ১৮ হাজারের চাকরি থেকে এক ধাক্কায় প্রায় অর্ধেক রোজগারে চলে আসেন বরুণ।

আর এরপর খেলার জগতে প্রবেশ। শুরুর দিকে শুধুই টেনিস বলের ক্রিকেট খেলতেন বরুণ। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাঁর স্পিন বোলিং নজর কাড়ে অনেকের। সুযোগ আসে আইপিএলে। কেরিয়ারের মোড় ঘুরে যায় তখনই, যখন কলকাতা নাইট রাইডার্স তাঁকে দলে নেয়। দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের সুবাদে বরুণ জায়গা করে নেন ভারতের টি-টোয়েন্টি ও ওয়ানডে স্কোয়াডে। এমনকি ভারতীয় দলের হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিও জেতেন তিনি।

বরুণ সম্প্রতি এক খোলামেলা কথোপকথনে এই যাত্রাপথের কথা ভাগ করে নেন তারকা স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিনের ইউটিউব শো-তে। সেখানে জানান, জুনিয়র আর্টিস্ট থাকাকালীন দিনে ৬০০ টাকা করে পেতেন। আর এখন তাঁর আয় প্রতিদিন প্রায় ২৬,০০০ টাকা। অশ্বিন মজা করে বলেন, “তোমার বেতন তো ৪২০০ শতাংশ বেড়ে গেছে!” এমন তুলনায় নিজেই হাসতে শুরু করেন বরুণ।

আইপিএলের পর বরুণ অংশ নেন তামিলনাড়ু প্রিমিয়ার লিগে। সেখানে অশ্বিনের দলের অংশ ছিলেন তিনি। এক ম্যাচে চার-ছক্কার ঝড়ে দলকে জয় এনে দেন নিজেই। সেই পারফরম্যান্স দেখে আবেগে ভেসে যান অশ্বিন। ঠিক সেখানেই নিজের জীবনের অনেক অজানা গল্প প্রকাশ করেন বরুণ।

বরুণ চক্রবর্তীর জীবন দেখিয়ে দেয়, কখনও কোনও চেষ্টা বৃথা যায় না। নিজের স্বপ্ন খোঁজার পথ যদি বন্ধও হয়ে যায়, নতুন দরজা ঠিক খুলে যায় অন্য কোনও রাস্তায়। একটি অচেনা, অনিশ্চিত যাত্রা থেকেই উঠে আসা – আর আজ তিনি ভারতীয় ক্রিকেটের অন্যতম নির্ভরযোগ্য মুখ। এটাই হয়তো জীবনের আসল সৌন্দর্য। অজানা রাস্তা পেরিয়েই যে গন্তব্যে পৌঁছনো যায়, তা প্রমান করেছেন বরুণ চক্রবর্তী।‌







‌‌

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন