সমকালীন প্রতিবেদন : রেলের দূরপাল্লার এসি কামরায় যাত্রীদের জন্য নতুন চমক। এবার থেকে ট্রেনে দেওয়া কম্বল মোড়া থাকবে রাজস্থানের ঐতিহ্যবাহী জয়পুরি প্রিন্টে তৈরি কভারে। যাত্রীদের স্বাচ্ছন্দ্য, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা এবং দেশীয় শিল্পকে উৎসাহ দেওয়ার লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ নিয়েছে রেল মন্ত্রক। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘ভোকাল ফর লোকাল’ মন্ত্রকে সামনে রেখে শুরু হয়েছে এই নতুন প্রকল্প।
অতীতে একাধিকবার যাত্রীরা অভিযোগ করেছিলেন—দূরপাল্লার এসি ট্রেনে দেওয়া কম্বলগুলি যথেষ্ট নোংরা ও নির্জীব, কোথাও নান্দনিকতার ছোঁয়া নেই। সেই সমস্যারই সমাধান আনতে এবার উদ্যোগী হয়েছে ভারতীয় রেল। রেলের সূত্রে খবর, প্রথম পর্যায়ে পরীক্ষামূলকভাবে এই প্রকল্প চালু হয়েছে জয়পুরের খাতিপুরা রেলওয়ে স্টেশনে। পরীক্ষামূলক প্রয়োগে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া মিললে, তা ধীরে ধীরে দেশের অন্যান্য জনপ্রিয় দূরপাল্লার ট্রেনেও চালু করা হবে।
সম্প্রতি রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জয়পুর–আহমেদাবাদ (আসারভা) এক্সপ্রেসে এই উদ্যোগের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। তিনি জানান, “যাত্রীদের আরামদায়ক যাত্রা নিশ্চিত করার পাশাপাশি ভারতের ঐতিহ্যবাহী বস্ত্রশিল্পকে উৎসাহ দিতেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে। জয়পুরি প্রিন্ট আমাদের দেশের কারিগরি দক্ষতার এক অনন্য নিদর্শন, সেই ঐতিহ্যই এখন ট্রেনযাত্রায় ছোঁয়া দেবে নতুন নান্দনিকতা।”
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের বাজেটে রেলের পরিকাঠামো ও যাত্রী পরিষেবা উন্নয়নের জন্য ৯ হাজার ৯৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এই প্রকল্প সেই বৃহত্তর সংস্কার কর্মসূচিরই একটি অংশ।
যাত্রীদের অভিজ্ঞতা অনুযায়ী, নতুন জয়পুরি প্রিন্টের কভার শুধু নান্দনিক নয়, ব্যবহারেও অনেক বেশি আরামদায়ক ও স্বাস্থ্যসম্মত। ইতিমধ্যেই অনেক যাত্রী রেলের এই পদক্ষেপকে “চলন্ত ট্রেনে ভারতীয় ঐতিহ্যের স্পর্শ” বলে অভিহিত করেছেন।
রেলের কর্তারা জানিয়েছেন, পাইলট প্রকল্প সফল হলে দেশের শীর্ষস্থানীয় ট্রেনগুলি—যেমন রাজধানী, শতাব্দী, দুরন্ত ও বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের মতো ট্রেনেও ধাপে ধাপে এই উদ্যোগ চালু করা হবে। ভারতের বস্ত্রশিল্পের ঐতিহ্য ও স্থানীয় কারিগরদের হাতের নিপুণতা এবার পৌঁছবে দেশের প্রতিটি কামরায়। একদিকে যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য, অন্যদিকে স্থানীয় শিল্পের প্রসার—দুই দিকেই সাফল্যের সম্ভাবনা দেখছে ভারতীয় রেল।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন