সমকালীন প্রতিবেদন : দুর্গাপুজোর আগে এপার বাংলার ইলিশপ্রেমীদের জন্য এলো সুখবর। প্রতিবছরের মতো এ বছরও পদ্মার ইলিশ ভারতে রপ্তানির অনুমতি দিল বাংলাদেশ সরকার। সোমবার ঢাকার বাণিজ্য মন্ত্রকের তরফে এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, শর্তসাপেক্ষে মোট ১,২০০ মেট্রিক টন ইলিশ ভারতে রপ্তানি করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশি রপ্তানিকারকদের আগামী ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রয়োজনীয় নথি সহ আবেদনপত্র জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে বেশ মোটা অঙ্গে এই মাছ কিনতে হবে ব্যবসায়ীদের। ফলে বাজারে মাছের দাম কিছুটা চড়া হতে পারে।
তবে দিন কয়েকের মধ্যেই পেট্রাপোল হয়ে কলকাতার বাজারে এবং তারপর রাজ্যের বিভিন্ন বাজারে এই মাছ এসে পৌঁছাবে বলেই আশা করছেন ব্যবসায়ীরা। এই রাজ্যের ফিশ ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অতুল দাস বলেন, “গত বছর ২,৪০০ মেট্রিক টনের অনুমতি মিললেও শেষ পর্যন্ত মাত্র ৬০০ মেট্রিক টন মাছ আমদানি করা সম্ভব হয়েছিল। এ বছর অনুমোদিত পরিমাণ কম হলেও, বাজারে অন্তত কিছুটা স্বস্তি ফিরবে বলে আশা করছি।”
বাংলাদেশ থেকে ইলিশ আমদানির অনুমতি মেলার আগে পর্যন্ত প্রায় শূন্য সরবরাহে বাজারে ইলিশের ঘাটতি দেখা দিয়েছিল। এদিকে, বর্ষার মরসুমেও পশ্চিমবঙ্গের উপকূলীয় অঞ্চলে প্রত্যাশিত ইলিশ ধরা পড়েনি। কাকদ্বীপ, দীঘা বা শঙ্করপুরের মতো ঐতিহ্যবাহী মাছ ধরার কেন্দ্রগুলো থেকে এবার মাছের যোগান তুলনামূলকভাবে কম।
ফলে রাজ্যের পাইকারি বাজারগুলোতে ভরসা হয়ে উঠেছে গুজরাট। হাওড়া পাইকারি বাজারে প্রতিদিন গড়ে ১৫০–২০০ মেট্রিক টন ইলিশ আসছে গুজরাটের ভরুচ থেকে। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, এ পর্যন্ত প্রায় ৪,৫০০ মেট্রিক টন ইলিশ গুজরাট থেকে এসেছে এবং তা কলকাতা ও আশপাশের বড় বড় বাজারে সরবরাহ করা হয়েছে। এক ব্যবসায়ীর কথায়, “গুজরাটের ইলিশের স্বাদও ভালো এবং দাম তুলনামূলকভাবে সস্তা। ফলে সাধারণ ক্রেতাদের মধ্যে এর চাহিদা ক্রমশ বাড়ছে।”
বাংলার সংস্কৃতিতে ইলিশ মানেই এক বিশেষ আবেগ। একসময় পদ্মার ইলিশের সরবরাহে ভরপুর থাকত রাজ্যের বাজার। তবে মাঝে নানা কারণে কয়েক বছর বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি বন্ধ ছিল। পরবর্তীতে পুজোর মরসুমে শর্তসাপেক্ষে সীমিত পরিমাণ রপ্তানির অনুমতি মিলতে শুরু করে।
এ বছর পদ্মার ইলিশের উৎপাদন তুলনামূলকভাবে কম হলেও ভারতীয় ব্যবসায়ীদের অনুরোধে শেষ পর্যন্ত অনুমোদন দিল বাংলাদেশ সরকার। ফলে পুজোর আগে ইলিশপ্রেমীদের প্লেটে পদ্মার ইলিশ ফিরতে চলেছে, যা স্বাভাবিকভাবেই খুশি করেছে বাঙালি ক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন