Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

শনিবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

পুজোর ছুটিতে মন ভাল করা পাহাড় দর্শন

 ‌

Mountain-view

সমকালীন প্রতিবেদন : এবার পুজো কেমনভাবে কাটাতে চান ? প্রচন্ড হৈ-হুল্লোর করে নাকি শান্ত নিরিবিলি পরিবেশে ? দ্বিতীয় অপশনটাই যদি আপনার পছন্দের হয় তাহলে এই প্রতিবেদনটি থাকছে আপনারই জন্যে। আজ যে কয়েকটি জায়গার হদিশ দেবো, পাহাড়প্রেমীদের কাছে সেগুলি হয়ে উঠতে পারে একেবারে আদর্শ জায়গা। খানিক নিজের সঙ্গে আর কিছুটা প্রিয়জনের সঙ্গে এখানে বসেই নিরিবিলিতে আপনি কাটিয়ে দিতে পারেন এবারের দুর্গাপুজো। তাও আবার থাকবে আপনার বাজেটের মধ্যে। কম খরচে কিভাবে পাহাড় ঘুরবেন তাই জানাবো আপনাদের। আসুন তাহলে শুরু করা যাক দুর্গাপুজোয় পাহাড় দর্শন। 

কোলবং 

প্রথমেই যে জায়গার কথা বলবো আজও তা অনেকেরই অজানা। দার্জিলিংয়ের খুব কাছেই পাহাড়ঘেরা গ্রাম কোলবং। যার চারিদিকে সবুজে সাজানো পাহাড়। যে গ্রাম থেকে দেখা মেলে সুন্দরী কাঞ্চনজঙ্ঘার। হাত বাড়ালেই মেঘ ছোঁয়া যায়। শিলিগুড়ি থেকে এই গ্ৰামের দূরত্ব প্রায় ১০২ কিলোমিটার। আর দার্জিলিং থেকে মাত্র ৩৫ কিলোমিটার। এনজেপি কিংবা শিলিগুড়ি জংশন স্টেশন থেকে সরাসরি একটি রিজার্ভ প্রাইভেট গাড়ি ভাড়া করে চলে আসা যায় এখানে। আবার দার্জিলিং ঘুরে সেখান থেকেও চলে আসতে পারেন কোলবং। সেক্ষেত্রে সময় অনেকটা কম লাগবে আবার দার্জিলিং ঘোরাও হবে। কয়েকটি হোমস্টে, ফার্ম হাউজ রয়েছে এই গ্রামে। এই সমস্ত ফার্ম হাউজগুলিতে সবজি চাষ করা হয়। আবার সেগুলি পর্যটকদের খাবার পাতেও দেওয়া হয়। সবমিলিয়ে প্রকৃতির কোলে একটুকরো শান্তির সন্ধান দেবে এই কোলবং।  

দারাগাঁও 

উত্তরবঙ্গে ট্যুর করতে চাইলে অনেকেই বেছে নেন কার্শিয়াং, কালিম্পং বা দার্জিলিংকে। কিন্তু এগুলোকে ঘিরে এমন অনেক অফবিট জায়গা রয়েছে যা আপনার মন জুড়িয়ে দিতে বাধ্য করবে। এই যেমন দারাগাঁও। এখানে যাওয়ার জন্য আপনাকে কালিম্পং পার করতে হবে। রামধুরার পরই দারাগাঁও। চারিদিক ঢাকা ঘন সবুজ পাহাড়। দারাগাঁওকে ঘিরে দাঁড়িয়ে রয়েছে পাইন আর সিঙ্কোনা গাছের সারি। দারাগাঁওতে বসেই দার্জিলিং, কালিম্পং ও সিকিমের পাহাড় দেখা যাবে। দারাগাঁওতে স্টে করে সহজেই ঘুরে নিতে পারবেন ইচ্ছেগাঁও, সিলারিগাঁও এবং রামধুরা। 

বারমেক 

নামটার সঙ্গে রাজস্থানের জনপ্রিয় বারমেড়ের মিল থাকলেও আদতেই দুটো একেবারে আলাদা। কালিম্পংয়ের কাছেই ছোট্ট গ্রাম। পাহাড়ে বেড়াতে যাওয়ার উদ্দেশেই যদি কাঞ্চনজঙ্ঘা দর্শন হয়। আর যাকে দেখতে অনেক সময়েই বেশ বেগ পেতে হয়। কিন্তু বারমেকে ঘরে বসেই সেই সাধ মিটে যেতে পারে। ঘরে বসেই দেখতে পাবেন কাঞ্চনজঙ্ঘা। তারসঙ্গে এখানকার আপাত শীতল পরিবেশ মাথা থেকে বের করে দেবে সমস্ত কর্মব্যস্ততা। এখান থেকে সিকিমের একটা অংশ দেখা যায়। নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন কিংবা বাগডোগরা এয়ারপোর্টে নেমেই সেখান থেকে গাড়ি ভাড়া করে পৌঁছে যেতে পারবেন বারমেকে। দূরত্ব মাত্র ৬৫-৭০ কিলোমিটার। 

গুরদুম 

শিলিগুড়ি থেকে হোক বা দার্জিলিং থেকে, গুরদুম যাওয়ার জন্য আসতে হবে সুখিয়া পোখরি। মানেভঞ্জন থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে ছোট্ট গ্রাম দুরগুম। শিলিগুড়ি থেকে সুখিয়া পোখরি হয়ে মানেভঞ্জন। সেখান থেকে ব্রেক করে গুরদুমে পৌঁছতে হবে। দার্জিলিং থেকে যেতে চাইলে শেয়ার ক্যাব করে সুখিয়া পোখরি পর্যন্ত যেতে হবে। সেখান থেকে আবার গাড়ি নিয়ে পৌঁছতে হবে গুরদুম। এই ছোট্ট গ্রাম থেকে আপনি ঘুরে দেখতে পারেন টোংলু, টুমলিং, শ্রীখোলা, ধোত্রের মতো জায়গাগুলি।

এবার আসা যাক আসল কথায়। এতো জায়গার কথা বলে খরচের বিষয়টা না জানালে সত্যি ঠিক করা মুশকিল যে আপনি ঠিক যাবেন কোথায় ? তবে এই কোলবং, বারমেক বা গুরদুম যেকোনো জায়গার খরচই থাকবে আপনার সাধ্যের মধ্যে। এই প্রত্যেকটি জায়গাতেই বাগডোগরা এয়ারপোর্ট কিংবা এনজেপি স্টেশন থেকে যেতে হলে গাড়ি ভাড়া করতেই হবে। চাইলে শেয়ার গাড়িতেও যাওয়া যেতে পারে। 

পুরো গাড়ি ভাড়া করলে খরচ প্রায় ৪ হাজার থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকার মতো। শেয়ার গাড়িতে গেলে মাথাপিছু খরচ অনেকটা কম পড়বে। অন্যদিকে হোমস্টেগুলিতে মাথাপিছু খরচ প্রতিদিন ১৭০০ টাকা থেকে আড়াই হাজারের মতো। লাঞ্চ ছাড়া ব্রেকফাস্ট এবং ডিনার থাকবে প্যাকেজে। তবে মরশুম অনুযায়ী রেট পরিবর্তন হতে পারে। 

সবমিলিয়ে পকেট কিছুটা হালকা হলেও, এই জায়গাগুলির একটিও বেছে নিলে পুজোর কটাদিন আপনার মন ভাল হতে বাধ্য। এরপর ক্লান্তি দূর করে একরাশ ঠান্ডা বাতাস বুকে ভরে ফের কাজে ফেরা। আর অপেক্ষা আরও এক মন ভাল করা পাহাড় দর্শনের।‌



‌‌

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন