Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

মশার কামড়েই বিপদ! রক্ত টানার রহস্য, পছন্দের গন্ধ ও রক্তের গ্রুপ নিয়ে চমকপ্রদ তথ্য জানালেন বিজ্ঞানীরা

 

Mosquito-bites

সমকালীন প্রতিবেদন : চুপিচুপি গায়ে বসে, অল্প সময়েই শরীর থেকে শুষে নেয় রক্ত। তারপরই শুরু হয় চুলকানি, জ্বালা। কিন্তু জানেন কি, এই রক্তখেকো মশাদের মধ্যেও কেবলমাত্র স্ত্রী মশারাই মানুষের রক্তে আগ্রহী? পুরুষ মশা বরং ফুল-পাতার রস খেয়েই কাটিয়ে দেয় গোটা জীবন। সম্প্রতি মার্কিন বিজ্ঞানীদের এক গবেষণায় উঠে এসেছে স্ত্রী মশার রক্তপিপাসু স্বভাবের পিছনে থাকা গুরুত্বপূর্ণ কারণ, রক্তগ্রুপের প্রতি তাদের নির্দিষ্ট পছন্দ এবং কীভাবে কিছু গন্ধ তাদের বেশি আকর্ষণ করে।

গবেষকদের মতে, স্ত্রী মশাদের দেহে ডিম তৈরি ও সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজন হয় রক্তের প্রোটিন, আয়রন ও অ্যামাইনো অ্যাসিড। ডিমের পুষ্টি ও বৃদ্ধি এই উপাদানগুলোর উপর নির্ভর করে। তাই তারা একাধিক প্রাণীর রক্ত খেলেও মানুষের রক্তে থাকা আইসোলিউসিন নামক বিশেষ অ্যামাইনো অ্যাসিড তাদের বেশি আকৃষ্ট করে। বিশেষত ডেঙ্গি বহনকারী এডিস ইজিপ্টাই মশা সবচেয়ে বেশি মানুষের দিকেই টানে।

গবেষণা বলছে, এক একটি স্ত্রী মশা একবারে ১ থেকে ১০ মাইক্রোলিটার (০.০০১–০.০১ মিলিলিটার) পর্যন্ত রক্ত শুষে নিতে পারে। সাধারণত প্রথম কামড়েই ৫ মাইক্রোলিটার রক্ত নেয় তারা।

মশার রক্তচোষার পেছনে শুধুই গন্ধ নয়, বড় ভূমিকা নেয় কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস। যাঁদের শরীর থেকে বেশি পরিমাণে এই গ্যাস নির্গত হয়, যেমন শরীরচর্চা করা ব্যক্তি বা স্থূলতার শিকাররা, তাঁদের শরীরই মশার বেশি পছন্দের। তাই সন্ধ্যার পর বন, ঝোপ বা জলাভূমি এলাকায় এই গ্যাস বেশি থাকায় মশার উপদ্রবও তুলনায় বেশি।

‘ও’ গ্রুপের রক্ত মশার সবচেয়ে পছন্দের, এমনটাই জানাচ্ছে গবেষণা। এ ছাড়াও শরীরে থাকা ল্যাক্টিক অ্যাসিড, ডাইমিথাইল সালফাইড, এমনকি অ্যালকোহলের গন্ধ মশাকে সহজেই আকর্ষণ করে। মদ্যপান করার ফলে শরীরে ল্যাক্টিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে যায়, তাই মদ্যপদের মশার কামড় বেশি খাওয়ার আশঙ্কা থাকে।

‘প্রসিডিংস অফ দ্য ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্স’-এ প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, মশা ৬ ফুট দূরত্ব পর্যন্ত বস্তু দেখতে পায় এবং ১-২ মিটার দূরে একেবারে স্পষ্টভাবে দেখতে সক্ষম। জন্মের পর মাত্র দেড় দিনের মাথায় স্ত্রী মশা রক্ত খাওয়া শুরু করে, কারণ তখনই শুরু হয় ডিম উৎপাদনের প্রক্রিয়া।

আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে মশারা এখন আগের তুলনায় অনেক বেশি সক্রিয় ও প্রতিরোধশীল। তাদের জিনগত গঠনেও এসেছে পরিবর্তন। ফলে সাধারণ কীটনাশকের প্রভাব কমছে, আর মশার কামড়ে রোগ ছড়ানোর আশঙ্কাও দ্রুত বাড়ছে।‌





কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন