সমকালীন প্রতিবেদন : স্থানীয় মানুষের আবেগ ও ঐতিহ্যের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে প্রায় ১৫ বছরের পুরনো উত্তর ২৪ পরগনার মছলন্দপুরের দত্ত বাড়ির দুর্গাপুজো। বাড়ির কর্তা গোকুল দত্তের উদ্যোগে শুরু হওয়া এই পুজো আজ শুধু একটি ধর্মীয় আচার নয়, বরং পারিবারিক বন্ধন ও বিশ্বাসের প্রতীক হয়ে উঠেছে। পুজো শুরু হওয়ার পর থেকেই এলাকায় বিশেষ পরিচিতি লাভ করে দত্ত বাড়ি, আর সেই থেকে আজও এর মাহাত্ম্য অটুট।
দত্ত পরিবারের বর্তমান প্রজন্মের সদস্য বাবলি দত্ত জানান, এক সময় দুর্গাপুজোর আগে নানা সমস্যায় জর্জরিত ছিল পরিবার। ঠিক সেই সময়েই গোকুল দত্ত দেবীর আরাধনা শুরু করার সিদ্ধান্ত নেন। পুজো শুরুর পর ধীরে ধীরে পরিবারের সমস্যাগুলি দূর হতে শুরু করে। সেই থেকেই নিয়ম মেনে প্রতিবছর হয়ে আসছে এই দুর্গাপুজো।
পুজোর অন্যতম আকর্ষণ ছিল সাবেকিয়ানার ছোঁয়ায় গড়া প্রতিমা — এক চালার ঠাকুর। মাতৃশক্তির এই ঐতিহ্যবাহী পুজো বছরের পর বছর ধরে স্থানীয়দের কাছে অনন্য আকর্ষণ ছিল। কিছুদিন বন্ধ থাকার পর আবারও চার বছর আগে নতুন করে শুরু হয়েছে দত্ত বাড়ির পুজো, আর তাতে আগের জৌলুস ফিরেছে।
গত চার বছর ধরে অষ্টমীর সকালে এখানে পালিত হচ্ছে কুমারী পুজো, যা পুজোর অন্যতম আকর্ষণ। বেলুড় মঠের নিয়ম মেনে প্রায় ১০ জন সন্ন্যাসী এই পুজো সম্পন্ন করেন। ছোট ছোট কুমারী কন্যাদের দেবীর প্রতিরূপ হিসেবে পুজো করা হয়, পূর্ণ রীতি ও শ্রদ্ধার সঙ্গে। এই আচার দেখতে প্রতিবছর দূরদূরান্ত থেকে ভক্তরা ভিড় জমান দত্ত বাড়িতে।
কিছু বছরের বিরতি সত্ত্বেও দত্ত বাড়ির দুর্গাপুজোর স্মৃতি আজও এলাকার মানুষের মনে উজ্জ্বল। বহু মানুষের বিশ্বাস, দেবীর কৃপায়ই এই বাড়ির ও পরিবারের অশান্তি দূর হয়েছে। তাই প্রতিবছর ভক্ত ও স্থানীয়রা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেন এই পুজোর জন্য।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন