সমকালীন প্রতিবেদন : বিধানসভা নির্বাচনের আগে বড়সড় অস্বস্তিতে বনগাঁর বিজেপি নেতৃত্ব। সোমবার বনগাঁ উত্তর মণ্ডলের সাংগঠনিক বৈঠকে প্রকাশ্যে এল দলের ভেতরের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। অভিযোগ উঠেছে, বৈঠকের মাঝখানেই গোষ্ঠীগত বিরোধের জেরে বিজেপির যুব সভাপতিকে বেধড়ক মারধর করে একদল কর্মী। আরও গুরুতর অভিযোগ, বিধায়ক অশোক কীর্তনিয়ার ঘনিষ্ঠরা এই হামলার নেপথ্যে, আর ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকেও বিধায়ক নীরব দর্শকের ভূমিকায় ছিলেন। ফলে এই ঘটনার পরই বিজেপির অন্দরেই ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বি এল এ – ২ দের নিয়ে একটি সাংগঠনিক বৈঠক ডাকা হয়েছিল। সেখানে বনগাঁ উত্তরের বিধায়ক অশোক কীর্তনিয়া সহ একাধিক নেতা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকের মাঝেই স্থানীয় যুব সভাপতি রাজু সমাজদারের ওপর চড়াও হয় বিধায়কের ঘনিষ্ঠ একাংশ। অভিযোগ, বেধড়ক মারধরের পাশাপাশি প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়। তাকে রক্ষা করতে এসে আক্রান্ত হন দলের জিএস শম্পা রুদ্র। রাজু এবং শম্পার দাবি, “বিধায়ক নিজে উপস্থিত থেকেও কিছুই করেননি। তাঁর প্রশ্রয়েই এই হামলা হয়েছে।”
ঘটনার পর থেকেই বিরোধীদের নিশানায় এসেছে বিজেপি। বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার তৃণমূল সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস তীব্র আক্রমণ শানিয়ে বলেন, 'বিজেপি আসলে গোষ্ঠী কোন্দলে জেরবার। দলের সাংসদ এবং বিধায়ক তহবিলের টাকায় কোনও উন্নয়ন হয়নি। সব টাকা লুটে খেয়েছে। সেই টাকার ভাগ-বাটোয়ারা নিয়েই নিজেদের মধ্যে হাতাহাতি করছে ওরা। বিধায়কের কথা সাধারণ মানুষ তো দূরের কথা, তাদের নিজেদের কর্মীরাও শোনে না।'
যদিও বিজেপি বিধায়ক অশোক কীর্তনিয়া দাবি করেছেন, 'ওই মিটিং এ তিনি যতক্ষণ উপস্থিত ছিলেন, ততক্ষণ পর্যন্ত এমন কোনও মারধোরের ঘটনা ঘটে নি। অভিযোগকারী দলের কোনও পদে নেই। সে তৃণমূলের দালাল হিসেবে ওই মিটিং এ উপস্থিত ছিল। সে কোনও পদে থাকলে দলের বিধায়ক হিসেবে আমি তাকে অবশ্যই চিনতাম।' বুধবার গোপালনগর থানায় দলের ৪ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন রাজু।
রাজনৈতিক মহলের মতে, এই ঘটনাটি শুধু দলের ভেতরের অসন্তোষ প্রকাশ করেনি, বরং নির্বাচনের মুখে বিজেপির ভাবমূর্তিকেও ধাক্কা দিয়েছে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, দখলদারি ও টাকার ভাগাভাগি নিয়ে প্রকাশ্যে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ায় সাধারণ কর্মীদের মধ্যেও অসন্তোষ ছড়াচ্ছে। বনগাঁর পাশাপাশি গোপালনগর এলাকায়ও রাজনৈতিক চর্চার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে এই ঘটনা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন