সমকালীন প্রতিবেদন : প্রশাসনের দীর্ঘদিনের নিষ্ক্রিয়তার বিরুদ্ধে এবার নিজেরাই উদ্যোগ নিলেন গ্রামবাসীরা। উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা থানার নৃসিংহকোলা গ্রামে প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তা গত দুই দশক ধরে বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। বারংবার অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় এবার চাঁদা তুলে নিজেরাই ইট ফেলে রাস্তা মেরামতির কাজে নেমে পড়েছেন স্থানীয়রা।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, ২০০০ সালের বন্যার পর থেকে এই রাস্তাটি একেবারে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। রাস্তার বড় বড় গর্ত, ভাঙাচোরা পিচ, কোথাও কাদা—সব মিলিয়ে স্কুলগামী ছাত্রছাত্রী থেকে বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, সকলেরই দুর্ভোগ চরমে। বর্ষাকালে তো অবস্থা আরও খারাপ—রাস্তা জলের নিচে চলে যায়, ফলে প্রায় সম্পূর্ণ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে গ্রাম।
এক স্থানীয় মহিলা জানান, “দিন কয়েক আগে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলাম, হঠাৎ পা পিছলে পড়ে যাই। হাঁটুর হাড়ে চোট লেগেছে, এখন বিছানায় পড়ে আছি। এতবার জানানো হয়েছে পঞ্চায়েতকে, কেউ শুনল না।” স্থানীয় যুবক তপন মণ্ডল বলেন, “স্কুলে যেতে অসুবিধা, বাজার করতে গেলে কাদায় মাখামাখি হয়ে যায়, ডাক্তার ডাকতে গেলেও একই সমস্যা। তাই আর প্রশাসনের উপর ভরসা না রেখে নিজেরাই চাঁদা তুলে রাস্তার ওপর ইট ফেলে কাজ শুরু করেছি।”
গ্রামবাসীদের এই উদ্যোগে প্রশাসনের ভূমিকাই উঠে এসেছে প্রশ্নের মুখে। যদিও এ বিষয়ে বাগদা পঞ্চায়েত প্রধান সঞ্জিত সরদার বলেন, “বর্ষা কাটলেই রাস্তার কাজ শুরু হবে। আমরা গ্রামবাসীদের জানিয়েছি। ওঁরা নিজেদের উদ্যোগে রাস্তা মেরামত করছেন, তাতে আমরা সাধুবাদ জানাই। পঞ্চায়েতের তরফে খুব শীঘ্রই কাজ শুরু করা হবে।”
তবে এলাকাবাসীর একাংশের প্রশ্ন, “পঁচিশ বছর ধরে কাজ শুরু হয়নি, এবার কতদিনে হবে সেটা আমরা জানি না। তাই নিজেদের হাতেই নিজেদের রক্ষা।” পাশাপাশি, অদূর ভবিষ্যতে পঞ্চায়েত প্রধানের দেওয়া প্রতিশ্রুতি কতটা বাস্তাবায়িত হয়, তারজন্যও অপেক্ষা করবেন গ্রামবাসীরা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন