Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

শুক্রবার, ৮ আগস্ট, ২০২৫

পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল থেকে ফুরিয়ে যাচ্ছে অক্সিজেন

 ‌

Running-out-of-oxygen

সমকালীন প্রতিবেদন : বহুদিন ধরে বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিল, সূর্য ‘হোয়াইট ডোয়ার্ফ’-এ পরিণত হওয়ার অন্তত ৫০০ কোটি বছর পরেই পৃথিবীতে জীবনের ইতি ঘটবে। কিন্তু সাম্প্রতিক এক আন্তর্জাতিক গবেষণা জানাচ্ছে ভিন্ন কথা। তাদের মতে, মানবসভ্যতার পতন ঘটতে পারে তার অনেক আগেই—কারণ, ধীরে ধীরে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল হারাতে বসেছে প্রাণধারণের মূল উপাদান, অক্সিজেন।

জাপানের তোহোকু বিশ্ববিদ্যালয় এবং আমেরিকার জর্জিয়া টেক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা যৌথভাবে এই গবেষণা চালিয়েছেন। তাঁদের তৈরি জলবায়ু ও বায়ুমণ্ডল-ভিত্তিক মডেল অনুযায়ী, প্রায় ১০০ কোটি বছরের মধ্যেই পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের অধিকাংশ অক্সিজেন ফুরিয়ে যাবে। এখন যেখানে বাতাসে অক্সিজেনের পরিমাণ ২১ শতাংশ, তখন তা নেমে আসবে মাত্র ১ শতাংশে—যা প্রাণধারণের পক্ষে সম্পূর্ণ অপ্রতুল।

গবেষকদের পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সূর্যের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে পৃথিবীর জলবায়ু, জৈবিক প্রক্রিয়া ও বায়ুর গঠন বদলে যাবে। বিশেষত উদ্ভিদ ও ফটোসিন্থেসিসের প্রক্রিয়া ধাক্কা খাবে, অক্সিজেন উৎপাদন কমে যাবে। গবেষক দলের এক সদস্য জানান, “অক্সিজেন হারিয়ে পৃথিবী ফিরে যাবে তার ‘অক্সিজেন-পূর্ব’ দশায়। একসময় যেমন এখানে প্রাণ ছিল না, ভবিষ্যতেও সেই অবস্থাই ফিরে আসবে।”

গবেষণায় বলা হয়েছে, অক্সিজেনের ঘাটতি শুরু হলে প্রথমে বিলুপ্ত হবে প্রাণিজগৎ। এরপর ধ্বংস হবে উদ্ভিদ, এমনকি অক্সিজেন-নির্ভর ব্যাকটেরিয়ার স্তরও। সেই সময় পৃথিবী হবে সম্পূর্ণ প্রাণহীন এক গ্রহ।

যদিও এই ভয়াবহ পরিবর্তন এখন থেকে কোটি কোটি বছর দূরের, তবুও গবেষকরা মনে করছেন, জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ ধ্বংসের বিরুদ্ধে এখন থেকেই পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। কারণ, আজকের ক্ষতিই ভবিষ্যতের ভয়াবহতার সময়সীমা আরও কাছে টেনে আনতে পারে।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, সূর্যের প্রাকৃতিক বিকাশের ফলে এই পরিবর্তন একদিন অনিবার্য হলেও, মানুষের কর্মকাণ্ড যেমন অতিরিক্ত কার্বন নিঃসরণ, বন উজাড় ও শিল্প দূষণ–পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের ভারসাম্য নষ্ট করছে দ্রুততর হারে। এর ফলে অক্সিজেন উৎপাদনের প্রক্রিয়া আরও আগে ধাক্কা খেতে পারে।

এখনও সময় আছে–যদি বিশ্ব একযোগে টেকসই শক্তি, বন সংরক্ষণ এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণের মতো পদক্ষেপ নেয়, তাহলে ভবিষ্যতের এই সংকটের সময়সীমা হয়তো অনেক দূরে ঠেলে দেওয়া সম্ভব। নইলে, কোটি বছর পর নয়, অনেক আগেই মানবসভ্যতা অক্সিজেন-শূন্য এক পৃথিবীর মুখোমুখি হতে পারে।




‌‌

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন