Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

শনিবার, ২৩ আগস্ট, ২০২৫

ভারত থেকে আমেরিকাগামী ডাক পরিষেবা সাময়িকভাবে বন্ধ

 

Postal-service-to-America-suspended

সমকালীন প্রতিবেদন : আন্তর্জাতিক বাণিজ্যনীতির টানাপড়েনে আরও এক ধাপ এগোল ভারত-আমেরিকা সম্পর্ক। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি ভারতীয় রফতানির ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন। সেই চাপ সামলাতে এবার সরাসরি প্রবাসী ভারতীয়দের জীবনযাত্রায় প্রভাব ফেলতে চলেছে নয়াদিল্লির পালটা পদক্ষেপ। ভারতীয় ডাক দফতর জানিয়েছে, আগামী ২৫ অগস্ট থেকে আমেরিকামুখী ডাক পরিষেবা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হবে।

ডাক দফতরের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, মার্কিন শুল্ক দফতর সম্প্রতি কাস্টমস সংক্রান্ত নিয়মকানুনে বড়সড় পরিবর্তন এনেছে। এই নয়া প্রক্রিয়া এখনও পুরোপুরি স্পষ্ট নয়। এর ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রগামী বিমান পরিবহণ সংস্থাগুলি ডাকবাহী পণ্য তুলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। ফলত, ২৫ অগস্ট থেকে ভারতীয় ডাকঘরগুলো আর আমেরিকাগামী চিঠি, নথি বা পার্সেল গ্রহণ করবে না। শুধুমাত্র ১০০ মার্কিন ডলার পর্যন্ত মূল্যের উপহার এবং সাধারণ চিঠি বা নথিপত্র এই বিধিনিষেধের বাইরে থাকবে। এর বেশি মূল্যের যেকোনও পণ্য পাঠানো আপাতত বন্ধ থাকবে।

গত ৩০ জুলাই মার্কিন প্রশাসন একটি নির্দেশিকা জারি করে। তাতে বলা হয়, এতদিন ৮০০ মার্কিন ডলার পর্যন্ত বিদেশি পণ্যের ওপর কোনও শুল্ক ধার্য হত না। ফলে ভারতসহ একাধিক দেশের ছোট ব্যবসায়ীরা ও প্রবাসীরা সুবিধা পেতেন। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন ঘোষণা করে, আগামী ২৯ অগস্ট থেকে এই শুল্কমুক্ত পরিষেবা বন্ধ হচ্ছে। আন্তর্জাতিক জরুরি অর্থনৈতিক ক্ষমতা আইন-এর আওতায় আনা হয়েছে নতুন নীতি। এখন থেকে শুধুমাত্র ১০০ মার্কিন ডলার পর্যন্ত মূল্যের উপহার সামগ্রীতে শুল্কছাড় দেওয়া হবে।

সম্প্রতি ট্রাম্প প্রশাসন ভারতীয় রফতানির ওপর ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক চাপানোর পাশাপাশি রাশিয়া থেকে তেল আমদানির কারণে আরও ২৫ শতাংশ জরিমানা ধার্য করেছে। এর ফলে কার্যত ভারতের রফতানির ওপর দ্বিগুণ বোঝা তৈরি হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, মার্কিন প্রশাসনের এই নীতি শুধু বাণিজ্যকেই নয়, কূটনৈতিক সম্পর্ককেও প্রভাবিত করছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই পরিস্থিতিতে আমেরিকামুখী ডাক পরিষেবা স্থগিত করা নয়াদিল্লির একটি প্রতীকী পালটা জবাব। ডাক দফতর অবশ্য জানিয়েছে, পরিষেবা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণরূপে প্রযুক্তিগত ও প্রক্রিয়াগত কারণে নেওয়া হয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞ মহলে প্রশ্ন উঠছে, এই পদক্ষেপের মধ্যে কূটনৈতিক বার্তাও লুকিয়ে আছে কি না।

এই সিদ্ধান্তে সরাসরি প্রভাব পড়বে মার্কিন প্রবাসী ভারতীয়দের ওপর। পরিবারের সদস্যরা আপাতত কোনও রকম উপহার, বই বা প্রয়োজনীয় সামগ্রী পাঠাতে পারবেন না। ব্যবসায়ী মহলও সমস্যায় পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। ছোট ব্যবসায়ীরা যাঁরা ডাক বা কুরিয়ার মারফত পণ্য পাঠান, তাঁদের ওপরও এর বড়সড় প্রভাব পড়বে।

ডাক দফতর আশ্বাস দিয়েছে, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা চালানো হচ্ছে। খুব শীঘ্রই সমাধানসূত্র বের করার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে। তবে এর মধ্যে ভারত-আমেরিকা বাণিজ্য সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

অর্থনীতি বিশেষজ্ঞদের মতে, “দুই দেশের মধ্যে এই ধরনের প্রতিরোধমূলক নীতি যদি চলতে থাকে, তবে রফতানি ও আমদানি দুই ক্ষেত্রেই বিরূপ প্রভাব পড়বে। পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক মঞ্চে বাণিজ্য সহযোগিতার ক্ষেত্রেও নেতিবাচক বার্তা যাবে।”



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন