সমকালীন প্রতিবেদন : ভারতের ঘরোয়া ক্রিকেটে ইতিহাস গড়তে চলেছে বোর্ড অব কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া অর্থাৎ বিসিসিআই। লাল বলের ক্রিকেটে আসন্ন মরসুম থেকেই চালু হতে চলেছে এক যুগান্তকারী নিয়ম— ‘সিরিয়াস ইনজুরি রিপ্লেসমেন্ট’ অর্থাৎ এসআইআর। এর ফলে কোনও ক্রিকেটার ম্যাচ চলাকালীন গুরুতর চোট পেলে, তাঁর পরিবর্তে আরেকজন ক্রিকেটারকে নামানোর সুযোগ মিলবে। এই নতুন নিয়মকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই ক্রিকেট মহলে জোর আলোচনা শুরু হয়েছে।
বোর্ড জানিয়েছে, ম্যাচ চলাকালীন গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত ক্রিকেটার মাঠে আর নামতে না পারলে তাঁর পরিবর্ত হিসেবে সমান দক্ষতা সম্পন্ন নতুন ক্রিকেটার নামানো যাবে। অর্থাৎ, যিনি নামবেন তিনি ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিং— তিনটি ক্ষেত্রেই খেলতে পারবেন। তবে এর জন্য ম্যাচ রেফারির অনুমতি নিতে হবে। এই নিয়ম কার্যকর করতে হলে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া মানতে হবে।
মাঠের আম্পায়াররা আহত ক্রিকেটারের চোট খতিয়ে দেখবেন। প্রয়োজনে চিকিৎসক ও ম্যাচ রেফারির সঙ্গে আলোচনা করবেন। এরপর দলের ম্যানেজার আনুষ্ঠানিকভাবে ‘এসআইআর’-এর আবেদন জানাবেন। ম্যাচ শুরুর আগেই প্রতিটি দলকে সম্ভাব্য পরিবর্ত ক্রিকেটারের তালিকা জমা দিতে হবে। সেখান থেকেই নাম বাছাই করা হবে। বিশেষ পরিস্থিতিতে, যেমন—উইকেটকিপার চোট পেলে এবং তালিকায় অন্য কোনও কিপারের নাম না থাকলে, ম্যাচ রেফারি বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করে তালিকার বাইরে থেকেও বিকল্প অনুমোদন করতে পারবেন।
এই ধারণা নতুন নয়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও এর আগে এমন নিয়ম চালুর দাবি উঠেছিল। ২০২৩ সালে ম্যাঞ্চেস্টার টেস্টে পায়ে চোট পেয়েও ঋষভ পন্থকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামতে হয়েছিল। একইভাবে ইংল্যান্ডের ক্রিস ওকস এক হাতে ব্যাট ধরে মাঠে নেমেছিলেন। এই সব ঘটনার পর থেকেই ক্রিকেটমহলে গুরুতর চোটে বিকল্প ক্রিকেটার নামানোর দাবি জোরালো হয়।
বিসিসিআই মনে করছে, ভারতীয় ক্রিকেট সময়ের চেয়ে এগিয়ে ভাবছে। সম্প্রতি আমেদাবাদে আম্পায়ারদের একটি সেমিনারে এই নিয়ম নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। বোর্ড সূত্রে খবর, এই নিয়ম আপাতত শুধু লাল বলের ক্রিকেটেই প্রযোজ্য হবে। সাদা বলের প্রতিযোগিতা— সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফি কিংবা বিজয় হজারে ট্রফিতে এখনই দেখা যাবে না। আইপিএলে ভবিষ্যতে কার্যকর হবে কি না, তা নিয়েও এখনো বোর্ড কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি।
ক্রিকেট একটি অনিশ্চয়তার খেলা। হঠাৎ চোটে ম্যাচে দলের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়। নতুন নিয়ম কার্যকর হলে দলগুলো সেই সমস্যার মোকাবিলা করতে পারবে। একই সঙ্গে ক্রিকেটারদের নিরাপত্তাও সুরক্ষিত হবে। তবে সঠিক প্রয়োগ ও কঠোর নজরদারি ছাড়া নিয়ম অপব্যবহার হওয়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন