Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

বুধবার, ১৬ জুলাই, ২০২৫

এসএসসি-র নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে হস্তক্ষেপ করল না কলকাতা হাইকোর্ট, মামলাকারীদের আরজি খারিজ

 

SSC-new-recruitment-notification-case

সমকালীন প্রতিবেদন : স্কুল সার্ভিস কমিশনের নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ঘিরে দায়ের হওয়া মামলায় মামলাকারীদের আর্জি খারিজ করে দিল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি স্মিতা দাসের ডিভিশন বেঞ্চ বুধবার জানিয়ে দেয়, নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করবে না আদালত। এর ফলে আপাতত এসএসসি তার নতুন নিয়োগ বিধি মেনেই নিয়োগপ্রক্রিয়া চালিয়ে যেতে পারবে।

২০১৬ সালের শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগের পর বহু প্রার্থী চাকরি হারান। পরবর্তীতে সুপ্রিম কোর্ট ওই নিয়োগ বাতিল করে দিয়ে শূন্যপদ পূরণের নির্দেশ দেয়। সেই নির্দেশ মেনেই স্কুল সার্ভিস কমিশন ২০২৫ সালের নতুন নিয়োগবিধি প্রকাশ করে। তবে ওই নতুন নিয়োগে যোগ্যতামান ও মূল্যায়নের পদ্ধতি বদলে যাওয়ায় বিতর্ক শুরু হয়।

মামলাকারীদের অভিযোগ ছিল, পূর্ববর্তী নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বঞ্চিত প্রার্থীদের জন্য যে নিয়ম কার্যকর ছিল, নতুন নিয়োগে সেই নিয়ম না মেনে এসএসসি বেআইনিভাবে নিয়ম বদলে দিয়েছে। তাঁদের যুক্তি, ২০১৬ সালের নিয়োগ বাতিল হওয়ায়, সেই শূন্যপদেই নিয়োগ হওয়া উচিত পূর্বের নিয়ম মেনেই। নতুন নিয়ম করে এসএসসি একতরফাভাবে যোগ্যতার মান বদলে প্রার্থীদের প্রতি অবিচার করেছে।

ডিভিশন বেঞ্চ স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, এসএসসি কীভাবে তার নিয়োগবিধি তৈরি করবে, তা ঠিক করার এক্তিয়ার কমিশনেরই। আদালত সেই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে না। আদালত আরও মন্তব্য করে, ২০১৯ সালের নিয়োগবিধির উপর কেউ আপত্তি না জানানোয় সেটি কার্যকর বলেই ধরা হবে। নতুন বিজ্ঞপ্তিতে দেওয়া নিয়ম মেনেই এসএসসি নিয়োগ চালাতে পারবে।

রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত জানান, সুপ্রিম কোর্ট পুরনো নিয়োগ বাতিল করলেও, ২০১৬ সালের বিধি মেনে নিয়োগ করতে হবে, এমন কোনও নির্দেশ দেয়নি। বরং শূন্যপদ পূরণের নির্দেশ দিয়েছে মাত্র। সেই নির্দেশ মেনেই এসএসসি নতুন বিধি তৈরি করে নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু করেছে।

অন্যদিকে মামলাকারীদের পক্ষে বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ও অনিন্দ্য মিত্র বলেন, এসএসসি ইচ্ছাকৃতভাবে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের অপব্যাখ্যা করছে। তাঁদের দাবি, নতুন নিয়ম তৈরি করে এসএসসি যোগ্যতার মান বদলে দিয়েছে, যা বেআইনি ও পূর্বের চাকরিহারাদের প্রতি অন্যায়।

এসএসসি-র আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, কোন নিয়মে নিয়োগ হবে, সেটা কমিশনের নিজস্ব সিদ্ধান্ত। বয়স, শিক্ষাগত যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা ইত্যাদি নির্ধারণে এসএসসি স্বাধীন। এছাড়া, ২০১৬ সালের নিয়মে বয়সে ছাড় দেওয়া সম্ভব ছিল না বলেও আদালতে জানান তিনি।

নতুন নিয়মের মূল বৈশিষ্ট্য–

লিখিত পরীক্ষা : ৫৫ নম্বরের পরিবর্তে ৬০ নম্বর, শিক্ষাগত যোগ্যতা : ৩৫ নম্বরের পরিবর্তে সর্বোচ্চ ১০ নম্বর, ইন্টারভিউ : সর্বোচ্চ ১০ নম্বর, শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা ও লেকচার ডেমনস্ট্রেশন : সর্বোচ্চ ১০ নম্বর করে, বয়সের সীমা : ১ জানুয়ারি ২০২৫ অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৪০ বছর।

হাই কোর্টের রায়ে হতাশ মামলাকারীরা ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, এসএসসি পূর্ববর্তী প্রার্থীদের ন্যায্য সুযোগ থেকে বঞ্চিত করছে। এখন দেখার বিষয়, দেশের সর্বোচ্চ আদালত কী সিদ্ধান্ত নেয়।‌

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন