সমকালীন প্রতিবেদন : লর্ডসের ঐতিহাসিক মাঠে পাঁচ দিন ধরে টানটান উত্তেজনার পরে শেষ পর্যন্ত মুখ থুবড়ে পড়ল ভারত। শেষ দিনের শেষ সেশনে ম্যাচ জিততে আর মাত্র এক ধাপ বাকি ছিল। রবীন্দ্র জাডেজা, জসপ্রীত বুমরা এবং মহম্মদ সিরাজের লড়াকু ব্যাটিং ভারতের লড়াইকে জমিয়ে তুললেও শেষ পর্যন্ত ২২ রানে হেরে গেল তারা। ফলে সিরিজে ২-১ এ এগিয়ে গেল ইংল্যান্ড।
ম্যাচের পরে হারের কারণ বিশ্লেষণ করতে গিয়ে ভারত অধিনায়ক শুভমন গিল স্পষ্টভাবে আঙুল তুললেন দু’টি বড় ভুলের দিকে—টপ অর্ডারের ব্যর্থতা এবং প্রথম ইনিংসে লিড না নিতে পারা। ম্যাচ শেষে সঞ্চালক মাইক আথারটনের প্রশ্নের উত্তরে শুভমন বলেন, “সোমবার সকালেও ভেবেছিলাম ম্যাচটা জিতে যাব। কারণ তখনও অনেকের ব্যাট করা বাকি ছিল। তবে ইংল্যান্ড যেভাবে আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলল, তাতে অন্তত দু’টি ৫০ রানের জুটি দরকার ছিল। সেটা আমরা পারিনি।”
ভারতের ব্যাটিং লাইনআপ শুরু থেকেই চাপে পড়ে যায়। শুভমন নিজেও স্বীকার করেন, পাঁচ দিনের খেলায় তীব্র লড়াই হলেও, একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে নিজেদের দখলে ম্যাচ টানতে ব্যর্থ হয়েছে ভারত। তিনি বলেন, “এক সময় মনে হয়েছিল ৮০-১০০ রানের লিড পেলেই যথেষ্ট। কারণ, পঞ্চম দিনে এই পিচে রান তাড়া করা বেশ কঠিন। কিন্তু আমরা সেটা করতে পারিনি। চতুর্থ দিনের শেষ ঘণ্টায় খুব খারাপ ব্যাট করেছি। শেষ দুই উইকেট একেবারেই ছুড়ে দিয়েছি।”
যদিও ম্যাচ শেষে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন টেলএন্ডারদের। বিশেষ করে জাডেজার ব্যাটিংয়ের ভূয়সী প্রশংসা করেন শুভমন। তাঁর কথায়, “জাডেজা অনেক অভিজ্ঞ। আলাদা করে বার্তা দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। ও জানত কী করতে হবে। আমরা চেয়েছিলাম, যতটা সম্ভব টেলএন্ডারদের সঙ্গে ব্যাট করুক। ও সেটাই করেছে।” এমনকি বুমরা এবং সিরাজও শেষ পর্যন্ত হাল ছাড়েননি। কিন্তু ইংল্যান্ডের সুনিপুণ বোলিং এবং রক্ষণাত্মক ফিল্ডিংয়ে শেষ রক্ষা হল না।
যদিও সিরিজে পিছিয়ে পড়লেও হতাশ নন শুভমন। তাঁর মতে, স্কোরকার্ড সবসময় দলের লড়াইয়ের আসল প্রতিফলন দেয় না। “আমরা ভাল ক্রিকেট খেলেছি। এবার আরও ভালো খেলব পরবর্তী ম্যাচগুলোয়। সিরিজে ফিরব আমরা,” আত্মবিশ্বাসের সুর তাঁর কণ্ঠে।
বুমরা এই সিরিজে আর কেবল একটি ম্যাচ খেলবেন। ম্যাঞ্চেস্টার টেস্টে তিনি থাকবেন কি না, সে ব্যাপারে মুখে কুলুপ গিলের—“সময় এলেই জানতে পারবেন।” ভারতের লড়াই ছিল হৃদয় জয় করা, কিন্তু শেষ মুহূর্তের সিদ্ধান্ত এবং ব্যাটিং ব্যর্থতা টেস্ট ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করে দিল। এবার দেখার, পরবর্তী টেস্টে ঘুরে দাঁড়িয়ে সিরিজে সমতা ফেরাতে পারে কি না টিম ইন্ডিয়া।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন