Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

সোমবার, ২৩ জুন, ২০২৫

‌বেহাল রাস্তায় ধান গাছ রোপণ করে অভিনব প্রতিবাদ বাগদা‌য়

Protest-by-planting-paddy-trees

সমকালীন প্রতিবেদন : দীর্ঘদিনের অবহেলা আর প্রশাসনিক নিষ্ক্রিয়তার বিরুদ্ধে অবশেষে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন বাগদা ব্লকের নাটাবেড়িয়া-আঁইশমালি রোডের বাসিন্দারা। পথ সংস্কারের আশ্বাস বহুবার মিললেও বাস্তবে কোনও কাজ না হওয়ায় সোমবার অভিনব প্রতিবাদের সাক্ষী রইল এলাকা। খানাখন্দে ভরা রাস্তায় ধান গাছের চারা রোপণ করে বিক্ষোভ দেখালেন স্থানীয় বাসিন্দা এবং বিজেপি কর্মীরা। কৃষকের নাঙল এনে রীতিমতো জমির মতো প্রস্তুত করে ধান চারা বসানো হয়, যা প্রশাসনের প্রতি প্রতীকী বার্তা হিসেবে দেখা হয়েছে।

প্রায় পাঁচ কিলোমিটার জুড়ে নাটাবেড়িয়া-আঁইশমালি রোডের বেহাল দশা এখন এলাকাবাসীর নিত্যদিনের সঙ্গী। ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত, কাঁদা ও জল জমে থাকা এই রাস্তাটি বর্ষাকালে একেবারে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। স্কুলপড়ুয়া শিশু থেকে শুরু করে রোগীবাহী অ্যাম্বুল্যান্স—সকলের যাতায়াতে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, রাস্তাটির এমন অবস্থার কারণে বিগত কয়েক বছরে একাধিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। সম্প্রতি এক ঘটনায় ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে এক ব্যক্তির হাত গুরুতরভাবে জখম হয়। আরও একটি ঘটনার উল্লেখ করে তারা জানান, বেহাল রাস্তায় বাইক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন এক যুবক।

সোমবার সকাল থেকেই ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে এই বিক্ষোভ কর্মসূচি। বিজেপি-সমর্থিত কর্মীরা ও স্থানীয় মানুষজন রাস্তার বিভিন্ন গর্তে ধান গাছের চারা বসান এবং মাটিতে লাঙল চালান। এমন প্রতিবাদে সাড়া মেলে পথচলতি মানুষের মধ্যেও। রাস্তায় অবরোধ তৈরি করে প্রায় তিন ঘণ্টা বন্ধ রাখা হয় যান চলাচল। বিক্ষোভস্থলে উপস্থিত ছিলেন বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি অমৃত লাল বিশ্বাস, স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও বহু সাধারণ মানুষ।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, স্কুল ও কলেজগামী ছাত্রছাত্রীদের পায়ে হেঁটে চলা ছাড়া আর কোনও উপায় থাকে না বর্ষার সময়। বৃষ্টি হলে রাস্তার গর্তগুলো জলমগ্ন হয়ে একেকটি দুর্ঘটনার ফাঁদে পরিণত হয়। রোগী পরিবহনের ক্ষেত্রেও অ্যাম্বুল্যান্স আসতে দেরি হয়, যা প্রাণহানির ঝুঁকি তৈরি করে। অনেকেই বলেন, ভোটের সময় প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও ভোট মিটতেই তা ভুলে যায় প্রশাসন।

অমৃত লাল বিশ্বাস বলেন, 'এই রাস্তার অবস্থা নিয়ে আমরা বহুবার প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। অভিযোগ জানানো হয়েছে পঞ্চায়েত, বিডিও অফিস, এমনকি জেলা প্রশাসন পর্যন্ত। কিন্তু শুধু আশ্বাসই পাওয়া গেছে, কাজ কিছুই হয়নি। তাই আজ প্রতীকী প্রতিবাদে ধান রোপণ করেই আমাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছি। যদি এবারও সংস্কারের কাজ শুরু না হয়, তাহলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামবো।'‌

বিক্ষোভের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন বাগদা থানার পুলিশ আধিকারিকরা এবং বাগদা বিডিও অফিসের প্রতিনিধিরা। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সমস্যা সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিলে বিক্ষোভকারীরা অবরোধ প্রত্যাহার করেন। এই প্রতিবাদে প্রশাসনের দৃষ্টি কিছুটা হলেও আকৃষ্ট হয়েছে বলে মনে করছেন আন্দোলনকারীরা। তবে এখন সকলের প্রশ্ন—'আসল কাজ কবে শুরু হবে?'‌ উত্তর জানতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন নাটাবেড়িয়া ও আঁইশমালির সাধারণ মানুষ।




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন