সমকালীন প্রতিবেদন : একদম কম উপার্জন মাসে, তারপরেও টাকা জমাতে পারবেন বড়লোকের মতো! কিভাবে কম স্যালারিতেও টাকা সঞ্চয় করবেন? যদি সঞ্চয় করেন তাহলে খরচ করবেন কিভাবে? ৮ টা পয়েন্টেই জীবন হবে সেট। শুধু শিখতে হবে কৌশল, জানতে হবে পলিসি। আজকের এই প্রতিবেদনে আপনারা শিখতে পারবেন কম উপার্জনেও সহজে টাকা জমানোর উপায়।
জীবন ছোট। আর টাকা ভোগ করার জন্যই। কিন্তু উপার্জন খুব সামান্য হলে, নিজের চাহিদা বা শখ পূরণ করবেন কিভাবে? টাকা জমানো সেক্ষেত্রে একটা খুব ভালো অপশন। তাছাড়া বিপদে-আপদে কিংবা স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যায় টাকার প্রয়োজন কার নেই বলুন তো? তাই শুরুটা করতে হবে খুব অল্প বয়সে। অল্প বয়স থেকে টাকা পয়সা না জমালে পরে গিয়ে সমস্যা হতে পারে। তাছাড়া, পেনশনের ব্যবস্থা না থাকলে তো এই নিয়ে আরও বেশি ভাবা উচিৎ। তাই টাকা জমান, তবে মাথায় রাখবেন মাসের শেষে অ্যাকাউন্ট ফাঁকা হলে কিন্তু চলবে না। তাই খরচে রাশ টানতে হবে। আর বাকি কি কি করবেন? কিভাবে করবেন? দেখুন পয়েন্টগুলো।
১) টাকা উপার্জন করছেন খরচ করার জন্যই। তাই, খরচ করবেন কিন্তু তার আগে সঞ্চয় করুন। ধরুন স্যালারি ঢুকল। প্রথমেই মাসে কিছু টাকা সঞ্চয়ের খাতায় ফেলে দিন। এর জন্য একটা রেকারিং ডিপোজিট করে রাখতে পারেন। PF জাতীয় কোনও ব্যবস্থাও করা যায়। মানে এমন কিছু, যাতে আপনার মূল স্যালারি অ্যাকাউন্ট থেকে ১০-২০% টাকা আগেই তাতে সরে যায়। এবার বাকি টাকা থেকে আপনার খরচ হিসাব করুন। এটা করলেই দীর্ঘ মেয়াদে দেখবেন একটা ভালো অঙ্কের টাকা জমে গিয়েছে। আবার কিছুটা টাকা জমিয়ে সেটা FD ও করে দিতে পারেন। এতেও লাভবান হবেন আপনি।
২) কার্ড, UPI তেও সংযম আনুন। জিনিস কিনলেন, কার্ডে, অনলাইন টাকা দিয়ে দিলেন। তখন অতটা গায়ে লাগল না। পরে অ্যাকাউন্ট দেখলেন খালি খালি। এই সমস্যাটা কিন্তু অনেকের। তাই ক্যাশলেস পেমেন্টের সময়ও বেহিসাবী হলে চলবে না। মোদ্দা কথা সবটাই আপনাকে হিসেব করে চালাতে হবে।
৩) আর একটা জিনিস অবশ্যই করবেন, কেনার আগে পরিকল্পনা। শখের যাই কিনতে যাবেন, তার আগে ভালো করে পরিকল্পনা করুন। এতে কেনার পর আফসোস এড়ানো যাবে। মানে ধরুন অনেকেই ঝোঁকের বসে একটা ব্র্যান্ডেড জিনিস কেনার পেছনে অনেকটা টাকা ঢেলে দিল। কিন্তু কেনার পর দেখা গেল, সেটা বিশেষ ভালো লাগছে না। তারপর সেটা পড়েই থাকলো। এমনটা যেন না হয়। তাই সেক্ষেত্রে জিনিস কেনার আগে খুব ভালোভাবে পরিকল্পনা করা দরকার।
৪) আর একটা জিনিস, স্বাস্থ্য বীমা করাতে একদম ভুলবেন না। ডাল-ভাত খেয়ে দিন কাটালেও সাধ্য মতো স্বাস্থ্য বিমা অবশ্যই করুন। এখনকার দিনে কোনও বেসরকারি হাসপাতালে গেলেই কম করে লাখখানেক টাকার বিল। মধ্যবিত্ত পরিবারের পক্ষে যা অসম্ভব। তাই হেলথ ইন্সুরেন্স মাস্ট।
৫) রেস্তোরাঁর খাবার এড়িয়ে চলুন। যতটা সম্ভব বাড়িতে টাটকা, মরসুমি শাক-সবজি খান। এতে টাকাও সাশ্রয় হবে, স্বাস্থ্যও ভাল থাকবে। আবার কখনো রেস্তোরার খাবারের যা বিল হতে পারে, তেমন অঙ্কের টাকা আলাদা করে সরিয়েও রাখতে পারেন ঘটে। এইভাবে জমাতে জমাতেও দেখবেন মোটামুটি একটা ভালো অংকের টাকা বছর শেষে আপনার সাশ্রয় হচ্ছে। একইসঙ্গে ফ্যাশনেও খরচ কমাতে হবে।
৬) তবে শুধু রেস্তোরাঁ ছাড়লেই হবে না। নেশা ছাড়ুন। মদ, ধূমপান ছেড়ে দিন। দাম নেহাত কম নয়। ধরুন আপনি রোজ ৬ টাকার ৫ টা সিগারেট খান। দিনে ৩০ টাকা। মাসে ৯০০ টাকা। এক বছরে ১০,৮০০ টাকা। দশ বছরে ১,০৮,০০০ টাকা। সিগারেটের দাম বাড়লে আরও বেশি। অথচ এই ৩০ টাকাটাই প্রতিদিন যদি জমানো যায়, তাহলে কেমন হয়? এবার বাকিটা আপনিই বুঝে নিন।
৭) টাকা জমানোর অন্যতম বড় বাধা ঋণে জর্জরিত থাকা। তাই আগে ঋণে পরিশোধে মনোযোগ দিতে হবে। যত দ্রুত সম্ভব ঋণমুক্ত হয়ে টাকা জমানো শুরু করতে হবে।
৮) দৈনন্দিন খরচের হিসাব বের করতে হবে। সেখান থেকে সামান্য কিছু খরচ কমিয়ে জমানো শুরু করতে হবে। এইজন্য আগামী ১ বছর ও ৫ বছর মেয়াদী একটি ছোট পরিকল্পনা সাজিয়ে ফেলতে হবে। এসময়ে কত টাকা জমানো যেতে পারে, তা হিসাব করার পাশাপাশি বড় কোনো খরচের প্রয়োজন পড়লে কীভাবে সামাল দেওয়া যেতে পারে তাও চিন্তা করতে হবে।
সর্বপরি একটা কথা মনে রাখবেন, টাকা বাঁচানো মানেই কিন্তু কিপটে হওয়া নয়। শখের জিনিস অবশ্যই কিনুন। সেগুলোর জন্যেও কিছুটা টাকা সাশ্রয় করুন। আর চেষ্টা করুন লোনের চক্করে না পড়তে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন