সমকালীন প্রতিবেদন : পহেলগাঁওয়ে সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলার পর ফের উত্তপ্ত হয়েছে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক। দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে কূটনৈতিক ও সামরিক টানাপড়েনের আবহে এবার তার ছায়া পড়েছে ক্রিকেটেও। এই পরিস্থিতিতে আগামী সেপ্টেম্বরে ভারতে আয়োজিত হতে চলা এশিয়া কাপ অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। ভারত-পাকিস্তানের ক্রিকেটীয় সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
পহেলগাঁও হামলার পর থেকেই ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড অর্থাৎ বিসিসিআই স্পষ্ট করেছে, তারা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে খেলতে রাজি নয়। এমনকি পাকিস্তান সফরের কথাও ভাবছে না ভারতীয় বোর্ড। একইসঙ্গে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড অর্থাৎ পিসিবি থেকেও স্পষ্ট বার্তা এসেছে, তারাও ভারত সফরে আগ্রহী নয়। এই পারস্পরিক অনাগ্রহের ফলে এশিয়া কাপের আয়োজন কার্যত প্রশ্নের মুখে।
এই অনিশ্চয়তার সুযোগ কাজে লাগাতে উদ্যোগী হয়েছে পিসিবি। বোর্ডের পরিকল্পনা, আগস্ট মাসে আফগানিস্তান এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহিকে নিয়ে একটি ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজ আয়োজন করা। ইতিমধ্যেই এই দুটি দেশের ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।
সূত্রের খবর, আমিরশাহিকে রাজি করানো সহজ হলেও আফগানিস্তানকে সম্মতি দিতে আরও কিছু আলোচনা প্রয়োজন। যদি এই পরিকল্পনা সফল হয়, তাহলে আগস্টে পিসিবি আয়োজিত এই ত্রিদেশীয় সিরিজ ভারত-পাকিস্তান দ্বিপাক্ষিক ক্রিকেট সম্পর্কের অনুপস্থিতির মধ্যেও যথেষ্ট আকর্ষণীয় হয়ে উঠতে পারে।
পিসিবি-র এক শীর্ষ কর্তা বলেছেন, 'সেপ্টেম্বরে এশিয়া কাপ হওয়ার কথা ভারতে। কিন্তু ভারত-পাকিস্তানের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, এই প্রতিযোগিতা ভারতে হওয়া প্রায় অসম্ভব। সেক্ষেত্রে এশিয়া কাপ হয় সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে সরবে, নয়তো বাতিল বা স্থগিত হবে।'
এই পরিস্থিতিতে পিসিবির পরিকল্পনা অনুযায়ী, যদি এশিয়া কাপ সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে স্থানান্তরিত হয়, তাহলে তার আগে ওই দেশেই হবে ত্রিদেশীয় সিরিজ। আর যদি এশিয়া কাপ বাতিল বা স্থগিত হয়, সেক্ষেত্রে ত্রিদেশীয় সিরিজ আয়োজন করা হবে পাকিস্তানেই।
বর্তমানে পিসিবি চেয়ারম্যান মহসিন নকভি এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন। তিনি শীঘ্রই একটি জরুরি বৈঠক ডাকার পরিকল্পনা করছেন, যেখানে এশিয়া কাপের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ হতে পারে। ওই বৈঠকে বিসিসিআইয়ের অবস্থানও স্পষ্ট হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
ক্রিকেট মহলের অনেকেই মনে করছেন, বিসিসিআইয়ের উপর চাপ সৃষ্টি করতেই এই বিকল্প সিরিজের ভাবনা। আবার অনেকে বলছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ ছাড়াই এশিয়া কাপ আয়োজন একপ্রকার অসম্ভব। দুই দেশের উত্তেজনা কেটে না গেলে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল কোনও পরিষ্কার রূপরেখা দিতে পারবে না।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন